আজকের ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি ব্লগপোস্টটি বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে লেখা হয়েছে । আপনাদের মধ্যে অনেক ছাত্র-ছাত্রী ভাইয়েরা কিছু ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন ।
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ছাত্রদের জন্য কিছু প্রয়োজনীয় ও উপকৃত পার্টটাইম জবের কথা উল্লেখ করব ।
পড়াশোনা শেষ করে যখন ছাত্ররা চাকুরী জীবনে প্রবেশ করতে যায় তখন বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরা বিশাল বড় সমস্যার সম্মুখীন হয় । কারণ সকল প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিগুলোই অভিজ্ঞতা ছাড়া কোন কর্মী নিয়োগ দিতে চায় না ।
ছাত্র অবস্থায় থাকাকালীন পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটখাটো পার্ট টাইম চাকরি করলে অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি অতিরিক্ত কিছু অর্থ উপার্জন করা সম্ভব হবে । যার ফলে ছাত্রছাত্রীরা তাদের নিজেদের পড়াশোনার খরচ বহন করার পাশাপাশি তারা তাদের পরিবারকেও সহযোগিতা করতে পারে ।
এবং ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করার ফলে মানি ম্যানেজমেন্ট ( Money Management ) সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করার সুযোগ হবে । যা ছাত্রজীবনের পরবর্তী সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ।
এছাড়াও কমিউনিকেশন স্কিল ( Communication skill ), মানুষের সাথে মিশতে পারার দক্ষতা , এবং দায়িত্ব নেওয়ার মন মানসিকতা তৈরি হবে যা পরবর্তী সাংসারিক জীবনে শান্তি ও শৃঙ্খলা নিয়ে আসতে অবদান রাখবে ।
পার্ট টাইম চাকরি মানে কি ?
পার্টটাইম ( part time ) হলো একটি ইংরেজী শব্দ যার বাংলা অর্থ হল সময়ের অংশ । আমরা সবাই জানি এক দিন সমান ২৪ঘন্টা এবং এই একদিনের ২৪ঘন্টা সময়ের মধ্যে থেকে কয়েক ঘন্টা সময় ব্যয় করে কোন কাজ করে আয় করাকে পার্ট টাইম চাকরি বলা হয় । অন্যদিকে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি দিনের কিছু সময়ের জন্য কোন কাজ করে যে উপায়ে অর্থ উপার্জন করে তাকে ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি বলা হয় ।
ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরির উপায়সমূহ
ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি প্রধানত দুটি উপায় অবলম্বন করে করা যেতে পারে । যেমন :
- অনলাইন পার্ট টাইম চাকরি
- অফলাইন পার্ট টাইম চাকরি
অনলাইন এবং অফলাইনের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা পার্ট টাইম চাকরি করে অর্থ উপার্জন করতে পারবে ।
ছাত্রদের জন্য অনলাইন চাকরি
শুরুতে কিছু অনলাইনে করা যায় এমন পার্ট টাইম চাকরির সাথে আপনাদের পরিচয় করে দি । তাহলে চলুন বন্ধুরা এবার কয়েকটি জনপ্রিয় ছাত্রজীবনের পার্টটাইম চাকরি দেখে নেওয়া যাক :
১/ কনটেন্ট রাইটিং পার্ট টাইম জব

আপনি যদি কোন একটি বিষয়কে খুব ভালোভাবে গুছিয়ে আলোচনা করতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনি কন্টেন্ট রাইটিং কাজটি করে পার্ট টাইম জব করতে পারেন ।
ইন্টারনেটে কোটি কোটি ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনি একজন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ করতে পারবেন । বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে প্রতিনিয়ত কন্টেন্ট রাইটিংয়ের প্রচুর কাজের পোস্ট করা হয় ।
কনটেন্ট রাইটিং এর জন্য কি কি প্রয়োজন ?
- ইন্টারনেট কানেকশন
- কম্পিউটার অথবা ল্যাপটপ
- তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অন্তর্ভুক্ত করে বিস্তারিত একটি আর্টিকেল লেখার দক্ষতা থাকতে হবে ।
- আর্টিকেল লিখে তা সার্চ ইঞ্জিরের জন্য অপটিমাইজেশন করতে হবে । যাতে লিখাটি গুগলে সার্চ করলে সহজে খুঁজে পায় ।
- ইংরেজি ভাষায় ভালো দক্ষতা থাকতে হবে [ যদি ইংরেজিতে কনটেন্ট রাইটিং কাজ করতে চান ]
- নিয়মিত কাজ করার ধৈর্য এবং সময় জ্ঞান সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে ।
উপরোক্ত ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস এবং দক্ষতাগুলো থাকলে আপনিও একজন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ করে অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
একজন ছাত্রের জন্য কনটেন্ট রাইটিং কাজটি অত্যন্ত সহায়ক একটি কাজ । কনটেন্ট রাইটিং কাজের ফলে তথ্য বিশ্লেষণ করার দক্ষতা , কমিউনিকেশন স্কিল , এবং একটি বিষয়কে আলোচনা করার ক্ষমতা অর্জন করা যায় ।
কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ কোথায় পাবো ?
- ফাইবার ডটকম
- লিঙ্কডইন ডটকম
- আপওয়ার্ক ডটকম
- ফ্রিল্যান্সার ডটকম
- পিপলপারআওয়ার ডটকম
এবং কি ফেসবুকেও কনটেন্ট রাইটিংয়ের প্রচুর কাজ পাওয়া যায় । ফেসবুকে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট রাইটিং গ্রুপ রয়েছে যেখানে নিয়মিত কনটেন্ট রাইটারদের খোঁজ এবং নিয়োগ করা হয়ে থাকে ।
কয়েকটি কনটেন্ট রাইটিং ফেসবুক গ্রুপ হলো :
? https://www.facebook.com/groups/431762993880640
? https://www.facebook.com/groups/freelancerpeople/
কন্টেন্ট রাইটিং করে কেমন ইনকাম করা যায় ?
আপনি যদি ইংরেজি ভাষায় কনটেন্ট রাইটিং করেন সেক্ষেত্রে তুলনামূলক বাংলার চেয়ে ভালো পেমেন্ট পাবেন । বিশেষ করে ইংরেজিতে একটি ১০০০ শব্দের আর্টিকেলের জন্য ৫০ থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করা যায় ।
অন্যদিকে একটি ১ হাজার শব্দের বাংলা আর্টিকেল লেখার বিপরীতে আপনি ৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন ।
কন্টেন্ট রাইটিং কাজ জানলে আপনি অন্যদের ওয়েবসাইটে আর্টিকেল প্রকাশ করেও টাকা ইনকাম করতে পারবেন ।
বাংলা আর্টিকেল লিখে টাকা ইনকাম করার কয়েকটি ওয়েবসাইট হলো :
- Goafta ডটকম
- গ্রাথোর
- জে আইটি
- টেকটিউনস
- ট্রিকবিডি ডটকম
এই ওয়েবসাইটগুলোতে আপনি বাংলা আর্টিকেল লিখে টাকা উপার্জন করতে পারবেন । এবং সেই টাকা বিকাশ , নগদ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে উইথড্র করতে পারবেন ।
২/ডিজিটাল মার্কেটিং জবস – Digital Marketing Jobs
ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করার অন্যতম আরো একটি জনপ্রিয় কাজ হলো ডিজিটাল মার্কেটিং জব । বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের কাছে ডিজিটাল মার্কেটিং কাজটি প্রচুর জনপ্রিয়তা পেয়েছে ।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৭লক্ষ ৫০হাজার ফ্রিল্যান্সার কর্মরত রয়েছে যারা দেশে বসে বিদেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করে যাচ্ছে । বাংলাদেশের এই বিশাল ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ করে ।
ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে বুঝায় অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য ও সেবার প্রচার-প্রচারণা করার উপায়কে । বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে পণ্য সামগ্রীগুলো মানুষের নিকট পৌঁছে দেওয়া বা পণ্য ও সেবা সম্পর্কে গ্রাহককে অবগত করাই হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কাজ ।
তাই ছাত্র অবস্থায় থাকাকালীন ডিজিটাল মার্কেটিং কাজটি শিখে পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করা যেতে পারে । এবং এই কাজটি একটি ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময় কাজ হওয়ার কারণে ছাত্ররা পরবর্তীতে এটিকে ফুলটাইম প্রফেশন হিসেবেও নিতে পারবে ।
আরো পড়ুন : ১৩টি সেরা অনলাইন টাইপিং জবস ।
৩/ওয়েব ডিজাইন জব – Web Design
অনলাইনে আমরা কমবেশি যা কিছুই দেখি বা ব্রাউজ করি তার সবকিছুই ওয়েবসাইট সম্পর্কিত । এবং এই ওয়েবসাইটগুলো ডিজাইন ও ডেভলপ করে থাকে বিভিন্ন ধরনের ওয়েব ডিজাইনাররা ।
বর্তমানে ছোট-বড় সকল প্রতিষ্ঠানই তাদের ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করছে । যার ফলে ওয়েব ডিজাইনারদের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে ।
বিশেষ করে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে করোনাভাইরাসের আগমনের ফলে সকল প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম অনলাইনমুখী করে তুলে । যার ফলে ওয়েবসাইট এর প্রয়োজনীয়তা আকাশচুম্বী হয়ে ওঠে ।
তাই নিজেকে একজন ওয়েব ডিজাইনার অথবা ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা যাবে ।
ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে ওয়েব ডিজাইন এর প্রচুর কাজ পাওয়া যায় ।
এছাড়াও আপনি যদি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনি আফিলিয়েট মারকেটিং , ব্লগিং করেও অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
৪/এসইও অপটিমাইজ জব – SEO Optimization
এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন হলো ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি বিশাল অংশ । আর এই কারণেই এটিকে আলাদা পয়েন্ট করে দেখানো হলো ।
আপনি যদি ডিজিটাল মার্কেটিং এর শুধুমাত্র এসইও কাজটি ভালো করে জানেন তাহলেই আপনি অনলাইনের মাধ্যমে প্রচুর টাকা উপার্জন করতে পারবেন ।
একজন এসইও অপটিমাইজার ফ্রিল্যান্সিং, ব্লগিং, আফিলিয়েট মারকেটিং করে অনলাইন থেকে টাকা উপার্জন করতে পারে ।
অনলাইনে কোটি কোটি ওয়েবসাইট রয়েছে এবং এই ওয়েবসাইটগুলোতে নিয়মিত শত শত আর্টিকেল পাবলিশ হয় । এবং এই আর্টিকেলগুলোকে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে রেংক করাতে একজন এসইও অপটিমাইজার ( SEO Optimizer ) প্রচুর ভূমিকা রাখে ।
৫/ভিডিও এডিটিং পার্ট টাইম চাকরি – Video Editing Jobs
বর্তমান সময়ে ভিডিও কনটেন্ট এর সবচেয়ে চাহিদা বেশি । ইউটিউব, ফেইসবুক , টিকটক, ইনস্টাগ্রাম সবখানেই এখন ভিডিও কনটেন্ট এর ছড়াছড়ি ।
তাই নিজেকে একজন প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিটর হিসেবে তৈরি করতে পারলে সুন্দর একটি ক্যারিয়ার গড়ে তোলা সম্ভব ।
এছাড়াও ভিডিও এডিটিং এর দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ইউটিউবে , ফেসবুকে ব্লগিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
বর্তমানে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ তরুণ তরুণী ইউটিউব , ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করছে ।
এছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে ভিডিও এডিটিং এর প্রচুর কাজ পাওয়া যায় ।
আরো পড়ুন : বায়োডাটা লেখার নিয়ম ।
৬/ গ্রাফিক ডিজাইন চাকরি – Graphic Design
ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করার আরো একটি জনপ্রিয় কাজ হলো গ্রাফিক ডিজাইন । গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ শিখে ঘরে বসে ছাত্রছাত্রীরা অনলাইনের মাধ্যমে কাজ করে টাকা উপার্জন করতে পারবে ।
বিভিন্ন ধরনের ব্যানার , পোস্টার , বিজনেস কার্ড , লোগো ডিজাইন করা হয় গ্রাফিক ডিজাইন চাকরিতে ।
গ্রাফিক ডিজাইন কাজ জানা থাকলে অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনে দোকান দিয়েও ব্যবসা করা যেতে পারে ।
অফলাইন পার্ট টাইম চাকরিসমূহ
অনলাইনে পাশাপাশি অফলাইনেও ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করার প্রচুর সুযোগ সুবিধা রয়েছে । চলুন অফলাইনের পার্টটাইম চাকরিগুলো দেখে নেওয়া যাক ।
১/ ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি হলো ফটোগ্রাফি জব
অফলাইনে ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করার অন্যতম একটি জব হল ফটোগ্রাফি জব । ফটো তোলা যদি আপনার শখের কাজ হয়ে থাকে তাহলে আপনি এই শখের কাজটি দিয়ে পার্ট টাইম জব করতে পারেন ।
অথবা একটি ভালো মানের ডিএসএলআর ( DSLR ) ক্যামেরা ক্রয় করে বিভিন্ন বিয়ের প্রোগ্রামের, কর্পোরেট অফিসের অনুষ্ঠানের এবং আপনার এলাকার সাংবাদিকের ক্যামেরাম্যান হিসেবে কাজ করতে পারেন ।
এছাড়াও আপনার তোলা ছবিগুলো আপনি অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে বিক্রি করেও অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।
অনলাইনে ফটো বিক্রি করার কয়েকটি ওয়েবসাইট হলো : shutterstock , 500px , istockphoto ,etsy , stocksy , alamy ইত্যাদি ।
২/ বাইক রাইডিং জবস – Bike Riding Jobs
বর্তমানে অফলাইনে ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করার জনপ্রিয় একটি কাজ হলো বাইক রাইডিং জবস । আপনি যদি বাইক রাইডিং করতে পছন্দ করে থাকেন অথবা আপনার কাছে যদি একটি মোটরসাইকেল থাকে সেক্ষেত্রে আপনি বাইক রাইডিং করে ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করতে পারেন ।
বাইক রাইডিং জবস করার জন্য বর্তমানে বাংলাদেশে জনপ্রিয় কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেমন: পাঠাও ,উবার ইত্যাদি ।
বাইক রাইডিং জবস করতে কি কি প্রয়োজন ?
- বাইক রাইডিং জব করতে একটি স্মার্টফোন থাকতে হবে ।
- এবং আপনার স্মার্টফোনে পাঠাও ও উবারের অ্যাপসটি ইন্সটল করে রাখতে হবে ।
- এবং অবশ্যই আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ির লাইসেন্স প্রয়োজন হবে ।
উপরের এই শর্তগুলো পূরণ করতে পারলে আপনিও একজন বাইক রাইডার হিসেবে পাঠাও এবং উভারে জব করতে পারবেন ।
পাঠাও এবং উবার কেমন পেমেন্ট দেয় ?
পাঠাও এবং উবার বাইক রাইডিং কোম্পানিগুলো প্রায় ২০% চার্জ কেটে থাকে । আপনি যদি একজন যাত্রীকে এক স্থান থেকে অন্য একটি গন্তব্য স্থানে পৌঁছে দিয়ে ৫০০টাকা ভাড়া নিয়ে থাকেন তাহলে পাঠাও এবং উবার কোম্পানিগুলো সেই ভাড়া থেকে ২০% অর্থ্যাৎ ১০০টাকা কেটে নিবে ।
বর্তমানে অনেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি বাইক রাইডিং কাজটি করে ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করছি । তাই আপনিও চাইলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও কাগজপত্রগুলো জমা দিয়ে একজন বাইক রাইডার হিসেবে পাঠাও এবং উবারের মতো বাইক রাইডিং কোম্পানিগুলোতে কাজ করতে পারেন ।
৩/ কোচিং সেন্টার এবং টিউশনি করানো
আপনি যেহেতু আমাদের আজকের ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি এই লেখাটি পড়ছেন এর মানে হচ্ছে আপনি একজন ছাত্র । তাই একজন ছাত্র হিসেবে আপনার এমন কিছু করা দরকার যা আপনার পড়াশোনা সম্পর্কিত ।
ঠিক তেমনি ছাত্রজীবনের চাকরি করার একটি কাজ হল টিউশনি অথবা কোচিং সেন্টারে গিয়ে টিউশনি করানো । এতে করে আপনি কিছু অর্থ উপার্জন করার পাশাপাশি পড়াশোনার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন ।
আপনি অবশ্যই আপনার নিচের ক্লাসের ছাত্র ছাত্রীদের টিউশনি করাবেন এতে করে আপনি নিজের মেধাকে আরও সচল রাখতে পারবেন । যা আপনার পড়াশোনার পরবর্তী চাকরি জীবনে প্রচুর কাজে আসবে ।
কোচিং সেন্টারে টিউশনি করে মাসে আনুমানিক ১০থেকে ১৫হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন । প্রতিটি ছাত্র থেকে যদি ৫০০ টাকা করে বেতন নেন এবং ২০জন ছাত্র – ছাত্রীকে যদি কোচিং করাতে পারেন তাহলে মাসে প্রায় আপনি ১০হাজার টাকা আয় করতে পারবেন ।
৪/ হোটেল / রেস্টুরেন্ট ও ফ্যাশন হাউজে চাকরি
ছাত্রজীবনের পার্টটাইম চাকরিগুলোর মধ্যে অন্যতম আরো একটি জব হচ্ছে হোটেল / রেস্টুরেন্ট এবং ফ্যাশন হাউজে একজন part-time কর্মী হিসেবে কাজ করা ।
বিশেষ করে আপনি যদি একজন মিশুক প্রকৃতির মানুষ হয়ে থাকেন অথবা মানুষের সাথে সহজে মেলামেশা করার গুন আপনার মধ্যে থাকে সেক্ষেত্রে হোটেল / রেস্টুরেন্ট এবং ফ্যাশন হাউজে পার্ট টাইম চাকরি করাটা আপনার জন্য উপযুক্ত একটি সিদ্ধান্ত হবে ।
তবে আমাদের বাংলাদেশের ছাত্র ছাত্রীদের হোটেল / রেস্টুরেন্ট এবং ফ্যাশন হাউজে কাজ করা নিয়ে কথা বললে তারা লজ্জাবোধ করে । কিন্তু এটি মোটেই ভালো লক্ষণ নয়, ছাত্র অবস্থা বা ছাত্র জীবন হচ্ছে শিক্ষা গ্রহণের সময় ।
এই বয়সে যদি লজ্জা শরমকে দূরে ঠেলে কাজ করার মানসিকতা গড়ে না তোলা যায় তা পরবর্তীতে বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে । পরবর্তীতে দেখা যাবে লোকলজ্জার ভয়ে অনেক কাজ করে ওঠা সম্ভব হবে না ।
আপনি যদি লক্ষ্য করেন আমাদের বাংলাদেশের প্রচুর ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবছর বিদেশে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করতে যায় । এবং তাদের বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীরা সেখানে বিভিন্ন হোটেল / রেস্টুরেন্ট এবং ফ্যাশন হাউসে পার্ট টাইমার হিসেবে কাজ করে নিজেদের পড়ালেখার খরচ বহন করে ।
তাই লোকলজ্জা ভুলে আপনিও বিভিন্ন হোটেল/ রেস্টুরেন্ট এবং ফ্যাশন হাউসে ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করতে পারেন ।
৫/ ডাক্তারদের চেম্বারে পার্ট টাইম চাকরি
ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করার আরো একটি দারুন উপায় হল বিভিন্ন ডাক্তারদের চেম্বারে অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করা । এতে করে পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করা যাবে ।
এবং প্রতিনিয়ত নানান ধরনের মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাত ও কমিউনিকেশন করার ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত হবে । এছাড়াও নানান সময়ে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করার ফলে প্রবলেম সলভিং স্কিল তৈরি হবে ।
ডাক্তারদের চেম্বারে পার্ট টাইমার হিসেবে কাজ করতে ইচ্ছুক হলে নিয়মিত বিভিন্ন জব পোর্টাল সাইট গুলোর উপর চোখ রাখুন । এবং ডাক্তারদের চেম্বারে যোগাযোগ করুন তাদের কোন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রয়োজন কিনা ।
তবে যোগাযোগ করার পূর্বে অবশ্যই নিজের একটি সিভি তৈরি করে রাখুন । এবং সিভিটিতে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা , দক্ষতা , ব্যক্তিগত পরিচয় দিয়ে তথ্যবহুল করে তুলুন । যাতে আপনার সিভিটি যেকোনো নিয়োগকর্তা দেখার সাথে সাথে আকর্ষিত হয় ।
৬/ হিসাব রক্ষক সহকারি পার্ট টাইম চাকরি
বিভিন্ন স্কুল , কলেজ , দোকান ও ছোটখাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসাবরক্ষক সহকারি হিসেবে পার্ট টাইম চাকরি করতে পারেন । এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় সময় ছাত্র-ছাত্রীদের পার্ট টাইম হিসেবে কাজ করার জন্য নিয়োগ দিয়ে থাকে ।
তাই সব সময় খোঁজ রাখুন কোথায় হিসাবরক্ষক সরকারি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে । একজন হিসাবরক্ষক সহকারি হিসেবে পার্ট টাইম চাকরি করার ফলে আপনার চাকরি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন হবে ।
যা পরবর্তীতে আপনাকে ভালো একটি চাকরি পেতে সাহায্য করবে ।
মেয়েদের পার্ট টাইম জব ২০২২
আজকের ছাত্রজীবনের পার্টটাইম চাকরি আর্টিকেলে অনলাইনে পার্ট টাইম জব এবং অফলাইনে পার্ট টাইম জবগুলোর সবগুলোই যে কোন মেয়ে চাইলে করতে পারবে ।
তবে মেয়েদের জন্য অনলাইনের পার্ট টাইম জবগুলো বেশি সহায়ক হবে ।
উপরোক্ত জবসগুলো করার পাশাপাশি মেয়েরা চাইলে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবে । আমাদের ওয়েবসাইটে মেয়েদের ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে একটি আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়েছে ।
পরিশেষে – Finally
আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরি করার অনলাইন এবং অফলাইন উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ।
আজকের আর্টিকেলে দেওয়া পার্ট টাইম জব গুলোর মধ্যে আপনার কাছে কোন ছাত্রজীবনে পার্ট টাইম চাকরিটি ভালো লেগেছে তা কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন ।
এছাড়াও আগামীতে কি ধরনের ব্লগপোস্ট বা আর্টিকেল পড়তে চান তাও নিচে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না । এছাড়াও নিয়মিত এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল ও আপডেট পেতে ফলো করুন ফেসবুকে ।
[…] […]
[…] […]
[…] ➡️ ছাত্রদের জন্য ১২টি পার্ট টাইম চাকরি । […]