হযরত মুহাম্মদ সাঃ রচনা

মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ জন্ম : 

হযরত মুহম্মদ (স) মরুময় আরব দেশের মক্কা নগরে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল, সোমবার সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। পৃথিবীর ধর্ম, সভ্যতা ও ইতিহাসের নতুন যুগ-স্রষ্টা এই মহাপুরুষ ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক।

 

মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) এর বাল্য-পরিচিতি :

হযরত মুহম্মদ (স) যখন মাতৃগর্ভে তখন তাঁর পিতা হযরত আবদুল্লাহ্ মৃত্যুমুখে পতিত হন এবং শৈশবেই তিনি মাতা আমিনাকে হারান। তারপর থেকে তিনি পিতামহ আব্দুল মুত্তালিবের কাছেই লালিত-পালিত হতে থাকেন। 

এর অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই পিতামহ আব্দুল মুত্তালিবও প্রাণত্যাগ করেন। তখন তাঁর পিতৃব্য আবু তালিব তাঁর লালন-পালনের ভার গ্রহণ করেন। তাছাড়া, কিছুকাল তিনি ধাত্রী হালিমার গৃহে লালিত-পালিত হন। 

বাল্যকাল থেকেই হযরত মুহম্মদ (স) অসাধারণ মেধাবী ও চিন্তাশীল ছিলেন। তাঁর চরিত্রের মহত্ত্ব ও সরলতা ছিল মক্কাবাসীদের কাছে সুবিদিত। মক্কাবাসীরা তাঁর সরলতা ও বিশ্বস্ততার জন্যে তাঁকে ‘আল-আমিন’ বলতো।

 

আরবের অবস্থা ও তাঁর সাধনা : 

হযরত মুহম্মদ (স) যখন জন্মগ্রহণ করেন, তখন মক্কা তথা আরবের সামাজিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয়। আরবের লোকেরা তখন পরস্পর ঝগড়া-বিবাদ, মারামারি ও যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত ছিল। 

মদাসক্তি ও দেবীর পুজোসহ নানান পাপ কাজে সবসময় নিয়োজিত থাকতো। ঐতিহাসিকেরা আরবের এই যুগকে ‘আইয়ামে জাহেলিয়াতে’র যুগ বলে অভিহিত করেছেন।

 

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বিবাহ : 

হযরত মুহম্মদ (স) ২৫ বছর বয়সে ৪০ বছর বযস্কা খাদিজা নামক এক সম্ভ্রান্ত বিধবা রমণীকে বিয়ে করেন। হযরত মুহম্মদ (স) আরববাসীদের পাপ কর্ম ও কুসংস্কারের প্রতি আসক্তিতে অত্যন্ত ব্যথিত হন এবং তার প্রতিকারের জন্যে মক্কার অদূরে ‘হেরা’ পর্বতের গুহায় তপস্যায় মগ্ন হন। অবশেষে চল্লিশ বছর বয়সে হযরত মুহম্মদ (স) আল্লাহ্র বাণী লাভ করেন। 

একেই ‘নবুয়্যত’ প্রাপ্তি বলা হয়। এরপর থেকেই হযরত মুহম্মদ (স) মক্কাবাসীদের কাছে আল্লাহ্র বাণী বা নতুন ধর্ম প্রচার করতে শুরু করেন। এই ধর্মের মূল কথা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহু’ অর্থাৎ এক আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই এবং মুহম্মদ (স) তাঁর প্রেরিত রসূল। 

পৃথিবীর ধর্মের ইতিহাসে এই নতুন ধর্ম ‘ইসলাম’ নামে পরিচিত। বিবি খাদিজাই সর্বপ্রথম এই নতুন ধর্ম ‘ইসলাম’ কবুল করেন।

 

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কর্মজীবন : 

আরবের লোকেরা কিন্তু হযরত মুহম্মদ (স)-এর এই নতুন ধর্মে বিশ্বাস স্থাপন করতে পারলো না। বরং তারা নিজেদের ধর্ম নষ্ট হয়ে যাবে বলে তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করতে থাকে। ইতোমধ্যে হযরত আবুবকর, হযরত আলী প্রমুখ ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করেন। কিন্তু মক্কার পৌত্তলিক ও ইহুদিরা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের উপর ভীষণ রকম উৎপীড়ন করতে শুরু করে। শুধু তাই নয়, হযরতকে পর্যন্ত হত্যা করতেও তারা প্রতিজ্ঞা করে। 

অবশেষে মক্কাবাসীদের অত্যাচার উৎপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে হযরত মুহম্মদ (স) সদলবলে মক্কা ছেড়ে মদিনায় চলে যান। এর নামই ‘হিযরত’ এবং এ সময় থেকেই হিজরী সন গণনা শুরু হয়। মদিনাবাসীরা হযরত মুহম্মদ (স)-কে সাদরে গ্রহণ করে এবং দলে দলে এসে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন।

মক্কার লোকেরা এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং মদিনা আক্রমণ করে বসে। কিন্তু যুদ্ধে পরাজিত হয়ে ফিরে আসে। ফলে নতুন উৎসাহ- উদ্দীপনার সঙ্গে ইসলামের প্রচার কাজ আরো জোরদার হয়ে ওঠে।

৬৩০ খ্রিস্টাব্দে হযরত মুহম্মদ (স) মক্কা জয় করেন। মক্কার সমস্ত বাসিন্দা ভয়ে, শঙ্কায় সন্ত্রস্ত হয়ে উঠলে হযরত তাদেরকে অভয় দান করেন। 

শুধু তাই নয়, মক্কাবাসীদের অতীত অত্যাচারকে ভুলে তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলেন। হযরতের এই মহত্ত্ব ও ক্ষমায় মক্কার লোকেরা অভিভূত হয়ে পড়ে এবং দলে দলে ইসলাম ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করে।

মৃত্যু : 

ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক এই মহাপুরুষ হযরত মুহম্মদ (স) ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ইন্তেকাল করেন। ‘ইসলাম’ শব্দের অর্থ শান্তি। হযরত আজীবন এই শান্তির বাণী প্রচার করে পৃথিবীতে মহান আদর্শ ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। সেই থেকে যাঁরা এই মহাপুরুষের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে থাকেন, তাঁদেরকে মুসলমান বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে।

আরো পড়ুন :

➡️বাংলাদেশের ফল রচনা ।

➡️ একে ফজলুল হক রচনা ।

➡️বাংলাদেশের ফুল রচনা ।

➡️কাগজ রচনা ।

➡️বঙ্গবন্ধুর জীবনী বাংলা রচনা

➡️ বেগম রোকেয়া রচনা ।

নিয়মিত এডুকেশন সম্পর্কিত তথ্য পেতে যুক্ত থাকুন আমাদের ফেইসবুক পেইজের সাথে ।

By MD Imran hossan

২০১৯ সাল থেকে যুক্ত আছি এই টেকনোলজির দুনিয়ার সাথে । যদিও আমার পড়াশোনা ব্যবসা ও বাণিজ্য নিয়ে । ওয়েবসাইট ডেভেলপ করে দেওয়ার পাশাপাশি বর্তমানে লিখালিখি ও ব্লগিং সেক্টর এর সাথে যুক্ত আছি । নিজের জ্ঞান কে অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছি Goafta.com ওয়েবসাইট । স্বপ্ন দেখছি একটি বিশ্বস্ত ব্যবসায়িক ব্লগ গড়ে তোলার । এবং নিজে যতটুকু জানি তা সবার কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার , তাতে যদি কারো শস্য পরিমাণও উপকার হয় তাতেই আমার প্রশান্তি |

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *