১১টি সেরা স্টক ব্যবসার আইডিয়া

আপনি কি বর্তমানে বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ?  ব্যবসা বাণিজ্য করার চিন্তাভাবনা করছেন ?  এমন যদি হয় তাহলে আমাদের আজকের স্টক ব্যবসার আইডিয়া অথবা স্টক মালের ব্যবসা আইডিয়া আর্টিকেলটি আপনার জন্য একটি হেল্পফুল ব্লগ হতে যাচ্ছে ।

 

স্টক মালের ব্যবসা এমন একটি ব্যবসার আইডিয়া যেখানে প্রচুর লাভের সম্ভাবনা রয়েছে যেমন ঠিক তেমনি অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে ।  তাই স্টক মালের ব্যবসা শুরু করার পূর্বে এই ব্যবসা সম্পর্কে খুঁটিনাটি ধারণা নেওয়া অবশ্যই জরুরি ।

 

আজকের স্টক মালের ব্যবসার আইডিয়া আর্টিকেলটিতে আপনাদের সাথে লাভজনক ১১টি স্টক মালের ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব ।  আজকের আর্টিকেলে দেওয়া প্রতিটি ব্যবসার আইডিয়া ইতিমধ্যে আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা হিসেবে পরিচিত ।

 

তাই আপনি যদি সঠিক ব্যবসায়িক প্ল্যান  ও সাথে দক্ষতা স্টক ব্যবসা আইডিয়াকে কাজে লাগাতে পারেন তাহলে অল্পদিনেই আপনি লাভজনক অবস্থানে পৌঁছে যেতে পারবেন ।

 

 

Table of Contents

স্টক ব্যবসা কি ? What is a stock business ?

 

Stock ( স্টক ) এটি একটি ইংরেজী শব্দ যার বাংলা অর্থ হচ্ছে গুদামজাতকরন বা মজুদ করে  রাখা । স্টক বলতে সাধারণত বুঝায় কোন কিছু মজুদ করে রেখে পরবর্তীতে ব্যবহার করা ।  এবং স্টক ব্যবসা বলতে বুঝায় পরবর্তী সময়ে বিক্রি করার জন্য কোন পণ্য ক্রয় করে গুদামজাত করে রাখা । এই স্টক বিজনেসকে অনেকে আবার রাখি মালের ব্যবসাও বলে থাকেন । 

 

আরো সহজ করে বললে , স্টক ব্যবসা বলতে বুঝায় অনেকগুলো পণ্য সামগ্রী বিক্রি করার উদ্দেশ্যে একত্রে ক্রয় করে সেগুলোকে গুদামে বা কোন একটি নিরাপদ স্থানে মজুদ করে রাখা । এবং পরবর্তীতে নির্দিষ্ট একটি সময়ের পর যখন সে পণ্যের দাম বৃদ্ধি  হবে তখন পণ্যগুলো বিক্রি করাকেই স্টক ব্যবসা বা স্টক মালের ব্যবসা বলে

 

বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম লাভজনক একটি ব্যবসার আইডিয়া হচ্ছে স্টক মালের ব্যবসা । 

 

মহামারীর সময়ে আমরা স্টক ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন অসৎ কারসাজি লক্ষ করেছি ।  তারা দেশের বিপদের সময় অযথা পণ্য সামগ্রী স্টক করে রেখে দাম বাড়িয়েছে ।

 

যা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিলনা ।  তাই যে ব্যবসায় আমরা করি না কেন তাতে যেন সমাজ ও দেশের উপকার ও কল্যাণ হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত ।

স্টক ব্যবসা শুরু করার উপায়  – Ways to start trading stocks

 

অন্যান্য সকল ব্যবসার মতো স্টক ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই কিছু নিয়ম কানুনের মধ্যে দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে ।  স্টক বিজনেস করার ক্ষেত্রে একজন উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীকে শারীরিক পরিশ্রমের চেয়ে অধিক মানসিক চাপ ও পরিশ্রম করতে হয় ।

 

তাই নিজেকে সবসময় প্রস্তুত রাখতে হবে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলায় করার জন্য । একজন সফল উদ্যোক্তা তখনই তৈরি হয় যখন সে নিজেকে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ঠিক রেখে ধৈর্য ও সাহসের সাথে সামনে এগিয়ে যায় ।

 

স্টক ব্যবসা শুরু করার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ হলো :

  1. একটি স্বচ্ছ ও সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করা ।
  2. বাজার ও মার্কেট বিশ্লেষণ করা । 
  3. কি ধরনের পণ্য নিয়ে স্টক বিজনেস শুরু করবেন তা সিলেক্ট করা ।
  4. স্টক ব্যবসার জন্য পুঁজি সংগ্রহ করা ।
  5. ব্যবসা শুরু করার পর থেকে আগামী ৬ মাসের মধ্যে কি পরিমান খরচ হতে পারে তার টোটাল হিসাব করা ।
  6. কৃষক বা উৎপাদনকারী শিল্পের সাথে ভালো যোগাযোগ সম্পর্ক গড়ে তোলা ।
  7. সময় ও মৌসুম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখা ।
  8. স্টক বিজনেসের জন্য যেসব লাইসেন্স প্রয়োজন তা তৈরী ও সংগ্রহ করা ।

 

বন্ধুরা স্টক ব্যবসা শুরু করার জন্য উপরের এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে আপনার স্টক বিজনেস পরিচালনা অনেকটা সহজ ও গোছালো হয়ে উঠবে । 

 

স্টক মালের ব্যবসা – Stock trading 

 

বন্ধুরা আপনাদের সাথে ইতিমধ্যে স্টক ব্যবসা কি এবং স্টক বিজনেস শুরু করার কিছু উপায় সমূহ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হলো ।  স্টক বিজনেস শুরুর পূর্বে বাজার বিশ্লেষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ

 

আপনি কি ধরনের প্রোডাক্ট বা পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন ?  আপনার পণ্যের গ্রাহক কারা ?  তাদের বয়স কত হতে পারে ?   

 

আপনি যে স্থানে স্টক বিজনেস শুরু করেছেন সেখানে আপনার পণ্যটির চাহিদা কেমন ?  এবং সেই পণ্য স্টক করার পর বিক্রি করে কেমন লাভ করতে পারবেন ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর আপনাকে স্টক মালের ব্যবসা শুরু করার পূর্বেই বের করতে হবে ।

 

আপনার উত্তর যত স্বচ্ছ হবে ততবেশি সম্ভাবনা থাকবে স্টক মালের ব্যবসা করে লাভ করার । তাহলে বন্ধুরা এবার চলুন কিছু লাভজনক স্টক ব্যবসার আইডিয়া দেখে নেওয়া যাক ।

 

লাভজনক স্টক মালের ব্যবসা আইডিয়া হলো :

১/ সরিষার স্টক মালের ব্যবসা

২/ পাটের স্টক বিজনেস

৩/ আলুর স্টক মালের ব্যবসা

৪/ পেয়াজ – রসুনের ব্যবসা

৫/ চালের স্টক ব্যবসা

৬/ বাদামের স্টক মালের ব্যবসা

৭/ ইটের স্টক বিজনেস

৮/ স্টক লট ব্যবসা

৯/ সিগারেটের স্টক ব্যবসা

১০/ আদা – মশলার স্টক মালের ব্যবসা

১১/ ভূট্টা – গমের স্টক মালের ব্যবসা

 

১/ সরিষার স্টক ব্যবসা

সরিষার স্টক ব্যবসা
সরিষার স্টক ব্যবসা

 

আমাদের বাংলাদেশ সরষে বা সরিষার অনেক চাহিদা রয়েছে ।  বিশেষ করে বাংলাদেশ শীত ও গরমকালের শেষের সময়টিতে সরষে বা সরিষা চাষ করতে লক্ষ করা যায় ।

 

তাই আপনি যদি সরিষার স্টক ব্যবসা করতে চান তাহলে সরিষা চাষের মৌসুমে সস্তা ও অল্প দামে প্রচুর সরিষা ক্রয় করে স্টক বা গুদামজাত করে রাখতে পারেন ।

 

এবং পরবর্তীতে মজুদকৃত সেই সরিষাগুলো সারা বছর কম – বেশী দামে বিক্রি করে অধিক লাভ করতে পারবেন । 

 

সরিষা থেকে আমরা সরিষার তেল ও মশলা পেয়ে থাকি যার চাহিদা আমাদের বাংলাদেশ ও ভারতের সারা বছরই থাকে ।  

 

তাই আপনি নিঃসন্দেহে সরিষার স্টক বিজনেস করতে পারেন ।  এছাড়াও সরিষাকে যদি আপনি সঠিক উপায় গুদামজাত করে সংরক্ষন করতে পারেন তাহলে এটি বছরের পর বছরেও নষ্ট হবে না ।

 

তাই সরিষার স্টক ব্যবসায়  তেমন বেশি ঝুঁকি নেই বলায় যায় যদি আপনি সঠিকভাবে সরিষা গুদামজাত করে মজুদ রাখতে পারেন ।

 

২/ পাটের স্টক ব্যবসা – Jute stock trading

পাটের স্টক ব্যবসা
পাটের স্টক ব্যবসা

 

পাট হল একটি বর্ষাকালীন ফসল ।  আমাদের বাংলাদেশে এই পাটকে সোনালী আঁশ বলা হয়ে থাকে । এই পাট একসময় আমাদের বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য ছিল ।

 

আমাদের বাংলাদেশে প্রধানত দুই ধরনের পাট দেখতে পাওয়া যায় যেমন :  সাদা পাট  ও তোষা পাট

 

বর্তমানেও পাটের ব্যবসা অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসার আইডিয়া । আমরা প্রায় সময় শুনতে পায় অতিরিক্ত দামের কারণে বিভিন্ন চটকলগুলি সঠিক সময়ে পাট পায় নাহ ।

 

তাই আপনি যদি বর্ষাকালীন সময়ে পাট ক্রয় করেন তাহলে অল্প দামে কৃষক থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন । পরবর্তীতে তা সঠিকভাবে গুদামজাত করে বিভিন্ন চটকলগুলিতে সাপ্লাই দিতে পারবেন ।

 

আমরা প্রায় সময় দেখতে পাই অনেক পাট ব্যবসায়ীরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাট গুদামজাত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এবং পাটের মূল্য বৃদ্ধি করে । আপনি তা না করে মোটামুটি লাভে  পার্ট গুলো বিভিন্ন চটকলগুলিতে বিক্রি করতে পারেন ।

 

এতে করে আপনি চটকল প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন এবং দীর্ঘস্থায়ীভাবে পাটের স্টক ব্যবসা করে যেতে পারবেন ।

 

৩/ আলুর স্টক বিজনেস – Potato stock trading

আলুর স্টক ব্যবসা
আলুর স্টক ব্যবসা

 

আলু যা ইংরেজিতে পটেটো ( potato ) নামে বহুল পরিচিত ।  আমাদের বাংলাদেশ ও ভারতে আলুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে এটি আমাদের বাংলাদেশ ও ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় একটি সবজি ।

 

শুধু বাংলাদেশ ও ভারতে আলু জনপ্রিয় এমন কিন্তু নয় আলু প্রায় সারাবিশ্বেই অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সবজি হিসেবে পরিচিত । আলুর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের তরিতরকারি, চিপস ও সুস্বাদু ফ্রেঞ্চ খাবার তৈরি করা যায় ।

 

এছাড়াও আমরা বাঙালিরা প্রায় আমাদের প্রতিটি তরকারি আইটেমের মধ্যে এই আলুর ব্যবহার করে থাকি ।  যার ফলে আমাদের বাংলাদেশে আলুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে । 

 

আমাদের বাংলাদেশে বিশেষ করে শীতকালে নতুন আলু বাজারে আসতে লক্ষ করা যায় । অর্থাৎ জানুয়ারি মাসের সময় আমাদের বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় আলুর চাষ হয়ে থাকে ।  তবে অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে জলবায়ুর বিরুপ আবহাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আলু চাষ করা সম্ভব হয় না ।

 

আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতে আলুর আকাশচুম্বী চাহিদা থাকলেও সেখানে সারাবছর আলুর চাষ করা সম্ভব হয়না ।

 

আর আপনি এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে আলুর স্টক ব্যবসা করে লাভজনক একটি ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন ।

 

আলুর স্টক ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই একটি বিষয়ে সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে তাহলো আলু হচ্ছে দ্রুত পচনশীল একটি সবজি । 

 

তাই আলুর স্টক বিজনেস করতে হলে আপনাকে আলু গুলো কোল্ডস্টোরেজে গুদামজাত করে রাখতে হবে ।

 

তাহলেই আপনি অধিক সময় পর্যন্ত আলু ভালোভাবে মজুদ করে রাখতে পারবেন এবং পরবর্তীতে আলুর অফ-সিজনে বা বন্ধ সিজনে আলু বিক্রি করে অধিক অর্থোপার্জন করতে পারবেন । 

 

আরো পড়ুন,,,

 

 

 

৪/ পেয়াজ – রসুনের স্টক ব্যবসা – Onion – Garlic stock business

পেয়াজ – রসুনের স্টক ব্যবসা
পেয়াজ – রসুনের স্টক ব্যবসা

 

স্টক ব্যবসা করার জন্য লাভজনক একটি প্রোডাক্ট বা পণ্য হচ্ছে রসুন । রসুন আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ক্যান্সার এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে থাকে ।

 

রসুন আমাদের বাংলাদেশে অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসের সময় চাষ করা হয়ে থাকে । এই সময় আপনি কৃষকদের নিকট থেকে সরাসরি প্রচুর রসুন ক্রয় করে মজুদ করে রাখতে পারেন ।

 

অক্টোবর-নভেম্বর রসুনের মৌসুমে  কৃষক থেকে অল্প মূল্যে রসুন ক্রয় করে নিতে পারবেন যা পরবর্তীতে অধিক দামে বিক্রি করে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন ।

 

অন্যদিকে পেঁয়াজের স্টক বিজনেসও দারুন লাভজনক একটি স্টক মালের ব্যবসার আইডিয়া ।  কিছুদিন আগেও পেঁয়াজের দাম যে কি পরিমাণ বেড়ে ছিল তা আমাদের সবারই জানা ।

 

চাহিদার তুলনায় উৎপাদনে একটু ঘাটতি হলেই পেঁয়াজ ও রসুনের দাম আমাদের বাংলাদেশে হুরহুর করে বেড়ে যায় ।  এছাড়াও আমাদের বাংলাদেশে প্রচুর ভারতীয় পেঁয়াজ লক্ষ করা যায় ।

 

এবং যখনই ভারত থেকে পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসতে সমস্যা হয় তখনই আমাদের বাংলাদেশের  পেঁয়াজের বাজার গরম হয়ে পড়ে । 

 

পেঁয়াজ এবং রসুন এই দুটি পণ্যই দ্রুত পচনশীল  তাই এই পণ্যগুলোকে সঠিকভাবে গুদামজাতকরন করতে হবে এবং অতিরিক্ত লাভের আশায় বেশি দিন মজুদ করে না রেখে মোটামুটি লাভে বিক্রি করে দেওয়ায় উপযুক্ত ।

 

৫/ চালের স্টক ব্যবসা – Rice stock business

চালের স্টক ব্যবসা
চালের স্টক ব্যবসা

 

স্টক বিজনেস আইডিয়ার মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় ও লাভজনক একটি আইডিয়া হচ্ছে চালের স্টক ব্যবসা ।  ধানের মৌসুমে আপনি কৃষকদের থেকে অল্প দামে প্রচুর ধান ক্রয় করে তা মেশিনে ভাঙ্গিয়ে চালে রূপান্তর করতে পারেন ।

 

এবং সেই চালগুলোকে সঠিকভাবে গুদামজাতকরন করে মজুদ করে রাখতে পারেন ।  পরবর্তীতে ধানের মৌসুম শেষ হয়ে গেলে চালগুলো বিক্রি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন ।

 

ধান – চাল বা ভাত আমাদের বাঙ্গালীদের প্রধান একটি খাবার ।  ভাত ছাড়া আমাদের বাংলাদেশীদের এক বেলা চলা সম্ভব নয় ।

 

তাই বাঙালিদেরকে মাছে – ভাতে বাঙালি নামে অভিহিত করা হয় ।  এই দেশে চালের ও ভাতের আকাশচুম্বী চাহিদা রয়েছে তাই আপনি যদি সঠিকভাবে চালের ব্যবসা করতে পারেন তাহলে দ্রুতই লাভজনক একটি ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবেন ।

 

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার চাক্তাই এলাকায় চালের পাইকারি বাজার রয়েছে ।  চট্টগ্রামের চাক্তাই এলাকায় ঘুরে আসতে পারেন চালের স্টক ব্যবসার বাস্তব আইডিয়া নেওয়ার জন্য ।

আরো পড়ুন,,

 

 

 

৬/ বাদামের স্টক ব্যবসা – Almond stock business

বাদামের স্টক ব্যবসা
বাদামের স্টক ব্যবসা

 

বাদামের স্টক ব্যবসা বর্তমানে খুবই লাভজনক একটি ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে পরিচিত ।  সম্প্রতি “  বাদাম নিয়ে একটি গান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচুর জনপ্রিয়তা পায়  ” গানটি তৈরি করেছিলেন ভুবন বাদ্যকার নামে একজন বাদাম বিক্রেতা ( ?  )। 

 

আমাদের বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলায় প্রচুর বাদামের  চাষ করতে দেখা যায় ।  সাধারণত বাদাম বেলে দো-আঁশ মাটিতে অথবা পাহাড়ের ঢালে বেশি উৎপাদন হয়ে থাকে

 

বাংলাদেশে আশ্বিন থেকে ফাল্গুন মাস এবং চৈত্র থেকে ভাদ্র মাস এই সময়টিতে প্রচুর বাদাম চাষ করতে দেখা যায় ।  তাই আপনি বাদামের মৌসুমী কৃষকদের থেকে অল্প দামে অনেক বেশি বাদাম ক্রয় করে মজুদ করে রাখতে পারেন ।

 

এবং পরবর্তীতে বাদামের অফ-সিজনে অধিক দামে বাদাম বিক্রি করে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন ।

 

৭/ ইটের স্টক ব্যবসা – Brick stock business

ইটের স্টক ব্যবসা
ইটের স্টক ব্যবসা

 

ইট হচ্ছে একটি নির্মাণ সামগ্রী পণ্য যা বিভিন্ন রাস্তা ঘাট , সেতু ,  ও ইমারত তৈরি করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় । মাটিকে ভিজিয়ে কাঁচা ইট তৈরি করা হয়ে থাকে এবং পরবর্তীতে এটিকে রোদে শুকিয়ে বা আগুনে পুড়িয়ে পাকা ইট হিসেবে তৈরি করা হয় ।

 

ইট অত্যন্ত চাহিদাযোগ্য একটি নির্মাণাধীন পণ্য হলেও এটি সারা বছর পাওয়া দুষ্কর ।  এর প্রধান কারণ হচ্ছে বর্ষা মৌসুমে ইটভাটাগুলোতে ইট তৈরি করা সম্ভব হয় না ।

 

কারণ বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত রোদের অভাব ও জ্বালানির অভাব লক্ষ্য করা যায় ।  তাই আপনি ইট তৈরীর মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে ইট ক্রয় করে সঠিক স্থানে গুদামজাতকরন করতে পারেন ।

 

এবং যখনই বর্ষা মৌসুম আসবে তখন অতিরিক্ত দামে এগুলো বিক্রি করে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারবেন । 

 

আজকের আর্টিকেলে উপরে দেওয়া অন্যান্য পণ্যগুলোর তুলনায় এই পণ্যটি তুলনামূলক দামি হওয়ার কারণে এই ব্যবসা শুরু করতে অধিক মূলধন বা পুজীঁর প্রয়োজন হবে ।

 

তবে উপরে দেওয়া অন্যান্য পণ্য গুলোর তুলনায় এই ব্যবসায় ঝুঁকি অনেক কম এর প্রধান একটি কারণ হচ্ছে এটি কোন পচনশীল পণ্য নয় । তাই আপনি নিরাপদে এই  পণ্যটি বছরের-পর-বছর মজুদ করে রাখতে পারবেন ।

 

৮/ স্টক লট ব্যবসা ২০২২

স্টক লট ব্যবসা
স্টক লট ব্যবসা

 

কাপড়ের স্টক লট ব্যবসা আমাদের বাংলাদেশ জনপ্রিয় ফুল আপনার ব্যবসার মধ্যে একটি ।  আমাদের বাংলাদেশের প্রধান একটি রপ্তানি পণ্য হচ্ছে পোশাক বা কাপড় । 

 

বাংলাদেশের প্রায় মোট রপ্তানির ৯০ শতাংশেরও বেশি আয় হয় কাপড় বা পোশাক রপ্তানি থেকে । 

 

বিভিন্ন সময় পোশাক রপ্তানি করতে গিয়ে আমদানিকারকরা কাপড়ের কোয়ালিটি , এলসি সমস্যা ( LC Problem ) ইত্যাদি নানান ধরনের কারণ দেখিয়ে তাদের কাপড়ের অর্ডার বাতিল করে থাকে ।

 

তখন যেসব পোশাক বা কাপড় গার্মেন্টসে জমা হয়ে থাকে তা গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান সেগুলোকে লট কাপড় হিসেবে বিক্রি করে থাকে এবং একেই স্টক লট ব্যবসা বলা হয় ।

 

আপনি এই কাপড়গুলো ক্রয় করে বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতাদের নিকট সাপ্লাই দিতে পারেন ।  

 

এছাড়াও শীতের মৌসুমে গরমের কাপড় এবং গরমের মৌসুমে শীতের কাপড় মজুদ করে রাখতে পারেন ।  এবং সেই কাপড়গুলো পরবর্তীতে অধিক দামে বিক্রি করে এই কাপড়ের ব্যবসার মাধ্যমে বেশি মুনাফা আয় করতে পারেন ।

 

উদাহরণস্বরূপ :  আপনি শীতের মৌসুমে খুব অল্প দামে গরমকালের কাপড়গুলো ক্রয় করতে পারবেন ।  এখন আপনি যদি শীতের মৌসুমে গরম কাপড়গুলো ক্রয় করে মজুদ করে রাখেন তাহলে গরমের মৌসুমে সেই কাপড় গুলো অধিক দামে বিক্রি করতে পারবেন ।

 

 ঠিক একই কাজ আপনি গরমকালে শীতের কাপড় ক্রয় করেও করতে পারবেন ।

 

 আশা করি বন্ধুরা কাপড়ের স্টক লট ব্যবসা সম্পর্কে আইডিয়া পেয়েছেন । 

 

৯/ সিগারেটের স্টক ব্যবসা – Cigarette stock trading

সিগারেটের স্টক ব্যবসা
সিগারেটের স্টক ব্যবসা

 

সিগারেট একটি নেশাদ্রব্য পণ্য হলেও একজন ব্যবসায়ীর নিকট এটি একটি লাভজনক প্রোডাক্ট ।  আপনি সিগারেটের স্টক ব্যবসা করে লাভজনক একটি ব্যবসা গড়ে তুলতে পারেন ।

 

এই পণ্যটি অন্যান্য পণ্যগুলোর মত দ্রুত পচেঁ যাওয়ার কোন ভয় নেই । বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশে প্রতিবছর বাজেট প্রকাশের সময় সিগারেটের প্রচুর দাম বৃদ্ধি পেতে লক্ষ করা যায়

 

তাই আপনি বাজেটের পূর্ব সময়ে সিগারেট ক্রয় করে মজুদ করতে পারেন এবং বাজেটের পরবর্তী সময়ে অধিক মূল্যে সিগারেটগুলো সাপ্লাই দিয়ে অধিক মুনাফা লাভ করতে পারবেন ।

 

তবে অতিরিক্ত লাভের আশায় বেশিদিন সিগারেট স্টক করে রাখবেন না এর কারণ হচ্ছে প্রায় সময় আবার সিগারেটের দাম কমে যেতে লক্ষ করা যায় ।

আরো পড়ুন,,

 

 

 

১০/ আদা – মশলার স্টক ব্যবসা – Ginger – Spice stock business

আদা – মশলার স্টক ব্যবসা
আদা – মশলার স্টক ব্যবসা

 

সেই আদিম যুগ থেকেই বাঙ্গালীদের মসল্লা জাতি হিসেবে চেনা হয়ে থাকে ।  বাঙ্গালীদের কাছে মসল্লা অত্যন্ত জনপ্রিয় । মসল্লা শুধু আমাদের বাংলাদেশে জনপ্রিয় তা কিন্তু নয় বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মানুষদেরও মসল্লার প্রতি প্রচুর ভালোবাসা রয়েছে ।

 

আমাদের বাংলাদেশীদের মসল্লার প্রতি এত আকর্ষণের কারণে বিশ্ববাসী আমাদের ভোজন রসিক জাতি হিসেবে চিনে থাকে ।  আমাদের রান্নাই মসল্লা ব্যবহার না করলে সে খাবারে আমাদের রুচি আসে না ।

 

বিভিন্ন গোলমরিচ, এলাচি, দারুচিনি, জিরা,  লবঙ্গ , ইত্যাদি মিশন এর মাধ্যমে বাঙালিরা মসল্লা  তাদের খাবারে ব্যবহার করে থাকে । 

 

তাই আপনি এই চাহিদার লক্ষ্য করে আদা – মসল্লার স্টক বিজনেস শুরু করতে পারেন । আদা – মসল্লা আজকের আর্টিকেলে দেওয়া উপরের পন্যগুলোর তুলনায় কম ঝুঁকিপূর্ণ এর প্রধান কারণ হচ্ছে এটি দ্রুত পচনশীল কোন পণ্য নয় ।

 

আদা – মশল্লা উঁচু বেলে দো-আঁশ মাটিতে বেশি চাষ করা হয়ে থাকে ।  বিশেষ করে এপ্রিল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু করে মে মাস পর্যন্ত আদার বীজ রোপন করা হয় ।

 

তাই আপনি আদা – মসল্লার মৌসুমে প্রচুর পরিমাণে আদা – মশল্লা ক্রয় করে মজুদ করে রাখতে পারেন এবং পরবর্তীতে অফ সিজনে আদা – মশল্লা  বিক্রি করে অধিক মুনাফা লাভ করতে পারবেন ।

 

১১/ ভূট্টা – গমের স্টক ব্যবসা – Maize – wheat stock trading

ভূট্টা – গমের স্টক ব্যবসা
ভূট্টা – গমের স্টক ব্যবসা

 

ভুট্টা হলো এক প্রকারের খাদ্যশস্য এটি মূলত সর্বপ্রথম মেসো মেসোআমেরিকায় উৎপত্তি হয় পরবর্তীতে সারাবিশ্বে এটি ছড়িয়ে পড়ে । বেলে দোআঁশ এবং দোআঁশ মাটিতে  এর ভালো ফলন হয়ে থাকে ।

 

আমাদের বাংলাদেশে রবি এবং খরিপ মৌসুমে অর্থাৎ অক্টোবর থেকে নভেম্বর  এবং ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বেশি চাষ করতে লক্ষ্য করা যায় ।

 

তাই আপনি এই সময়টিতে কৃষকদের থেকে ভুট্টা সংগ্রহ করে মজুদ করে রাখতে পারেন । অন্যদিকে গম হল একটি ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ এটিকে ইংরেজিতে wheat  বলা হয়ে থাকে ।

 

গম উৎপাদনে চীন ,  ভারত ,   যুক্তরাষ্ট্র ,  ফ্রান্স ,  রাশিয়া ,  অস্ট্রেলিয়া ,  কানাডা ,  পাকিস্তান এই দেশগুলো এগিয়ে রয়েছে ।  তবে বাংলাদেশেও প্রচুর পরিমাণে গম উৎপাদন হয়ে থাকে । 

 

আমাদের বাংলাদেশে গম সাধারণত নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত এই অল্প সময়ের মধ্যে চাষ করা হয় । 

 

তাই যদি আপনি ভুট্টা ও গমের মৌসুমে এই  খাদ্যগুলো সংগ্রহ করে গুদামে সঠিকভাবে মজুদ করে  রাখতে পারেন তাহলে সারাবছরেও ভুট্টা ও গম নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই ।

স্টক ব্যবসা কি হালাল ?

স্টক ব্যবসা নিঃসন্দেহে একটি হালাল ব্যবসা তবে ক্ষেত্রবিশেষে এই হালাল ব্যবসাটিও হারাম ব্যবসা পরিণত হতে পারে ।যেমন : দেশের মহামারী , দুর্ভিক্ষের সময় অধিক লাভের আশায় অযথা খাবার বা পণ্য মজুদ করে রেখে কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে সে ব্যবসা হারাম ব্যবসা রূপান্তরিত হতে পারে ।

স্টক ব্যবসার জন্য কি কি প্রয়োজন ?

১/মূলধন ২/গোডাউন ৩/কোল্ডস্টোরেজ ৪/ ট্রেড লাইসেন্স ৫/পরিবহন ( পণ্য সরবারহ করার জন্য )

 

পরিশেষে – Finally

বন্ধুরা আমাদের আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে ১১টি লাভজনক স্টক ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করলাম যা ইতিমধ্যে আমাদের বাংলাদেশে লাভজনক ব্যবসা হিসাবে পরিচিত ।

 

তাই আপনি যদি সঠিক পরিকল্পনা , ধৈয ও একাগ্রতার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে যেতে পারেন তাহলে দ্রুতই আশা করা যায় লাভজনক একটি ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবেন ।

 

আমাদের আজকের আর্টিকেল পড়ে কোন আইডিয়াটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে তা জানাতে পারেন কমেন্ট করে । এবং 

 

পরর্বতীতে কি ধরনের আর্টিকেল পড়তে চান তাও জানাতে পারেন কমেন্ট করে । ধন্যবাদ 

রিলেটেড আর্টিকেল :

 

স্টক মালের ব্যবসার ভিডিও দেখুন ।

By MD Imran hossan

২০১৯ সাল থেকে যুক্ত আছি এই টেকনোলজির দুনিয়ার সাথে । যদিও আমার পড়াশোনা ব্যবসা ও বাণিজ্য নিয়ে । ওয়েবসাইট ডেভেলপ করে দেওয়ার পাশাপাশি বর্তমানে লিখালিখি ও ব্লগিং সেক্টর এর সাথে যুক্ত আছি । নিজের জ্ঞান কে অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছি Goafta.com ওয়েবসাইট । স্বপ্ন দেখছি একটি বিশ্বস্ত ব্যবসায়িক ব্লগ গড়ে তোলার । এবং নিজে যতটুকু জানি তা সবার কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার , তাতে যদি কারো শস্য পরিমাণও উপকার হয় তাতেই আমার প্রশান্তি |

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *