রোমান্টিক প্রেমের গল্প : প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রেম ভালোবাসা আসে। আর এই প্রেম ভালোবাসা নিয়ে কবি সাহিত্যিক ও মনীষীরা বিভিন্ন ধরনের প্রেম-ভালোবাসা সংক্রান্ত ছোট গল্প, উপন্যাস, কবিতা রচনা করে গিয়েছেন।
সেই সৃষ্টির আমল থেকে আজ পর্যন্তও থেমে নেই প্রেম , ভালোবাসার গল্প এবং পৃথিবীর শেষ পর্যন্ত মানুষের মাঝে প্রেমের গল্প/ ভালোবাসার গল্প রয়ে যাবে।
আজকে আমরা প্রেম ভালোবাসা নিয়ে দারুন কয়েকটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করব । তাহলে চলুন দেখে আসি একনজরে প্রেমের গল্পগুলো।
১/ সিনিয়র ও জুনিয়রের রোমান্টিক প্রেমের গল্প :

তুমি আমার চেয়ে গুনে গুনে ১৯ বছরের ছোট। আর তুমি কিনা এসেছো আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে ব্যাপারটা খুব বেশী হাস্যকর হয়ে যায়নি ? ইমরান সাহেব সাদিয়াকে বললেন।
দেখুন আমার যা বলার আমি তা বলে দিয়েছি। তাছাড়া আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি আর আমিও জানি যে আপনিও আমাকে মনে মনে ভালোবাসেন। এখানে বয়সের ব্যবধান দিয়ে কি হবে ?
ইমরান সাহেব এবার রাগে গিজগিজ করছে একটুখানি মেয়ে তাকে নাকি প্রপোজাল দিয়ে বসেছে। একটু গরম হয়ে বললেন তোমার ভালোবাসা আমি বের করবো সবেই মাত্র বয়স ২০ হয়েছে বেশি বাড়াবাড়ি করো না বলে দিলাম।
আপনি আমাকে যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন । আমি বলে দিলাম আপনাকে ভালবাসি আর জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত আপনার সাথেই থাকতে চাই সাদিয়া বলল।
তুমি যদি এখন এখান থেকে বের না হয়েছো আমি বাধ্য হবো তোমাকে অপমান করতে একটু ধমক দিয়ে ইমরান সাহেব বললেন।
কথাটি শুনে মাত্র সাদিয়া আরেক মূহূর্ত দেরী করলো না সঙ্গে সঙ্গে অফিস থেকে দ্রুত বের হয়ে গেল। ইমরান সাহেব চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। তার ভাবতেই অবাক লাগে ছোট একটা মেয়ে এত বড় সাহস কিভাবে দেখায়?
মেয়েটির ভাগ্যবান সে তার ফ্রেন্ডের ভাগ্নি তা না হলে এই মেয়েটাকে মেরে সোজা করে দিতাম ইমরান সাহেব মনে মনে বলতে লাগল।
সাদিয়া কাঁদতে কাঁদতে রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছে আর ব্যাগ থেকে তার মোবাইল ফোনটি বের করে একমাত্র বেস্ট ফ্রেন্ডকে কল দিয়ে দেখা করতে বলল।
সাদিয়া বসে কান্না করতে লাগছে পাশে তার বেস্ট ফ্রেন্ড বসা সে মাথায় হাত দিয়ে বলতে লাগলো এবার না হয় একটু থামা তোর কান্না ।
সাদিয়ার কান্না গতি আরো বেরে গেল সে কাঁদতে কাঁদতে তার বন্ধুকে বলতে লাগলো ইমরান সাহেব এবারও আমার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তুই বল আমি তার কাছে আর কত অপমানিত হবো। তাছাড়া তাকে দেখলে কি বুঝা যায় তার অনেক বেশি বয়স হয়েছে ।সে তো এখনো কত স্মার্ট। আর ভালোবাসায় কি বয়স কোনো মেটার হতে পারে তুই বল?
বলতে বলতে সাদিয়ার এক পর্যায়ে তার বেস্ট ফ্রেন্ড জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। সাদিয়ার বন্ধু তাকে সান্তনা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিল।
সাদিয়া বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে তার রুমে চুপ মেরে বসে রইল আর মনের মধ্যে এক ধরনের জিদ চেপে ধরে মনে মনে বলতে লাগল যে করেই হোক তার ইমরান সাহেবকে চাই চাই এবং এর জন্য যা করার প্রয়োজন সে তাই করতে রাজি ।
এদিকে ইমরান সাহেব অফিসের কাজ কর্ম শেষ করে বাসায় এসে দেখলো তার বন্ধু শফিক মানে সাদিয়ার মামা বসে আছে। ইমরান সাহেব তাই খুলতে খুলতে কিরে কখন এলি ?দোস্ত আর বললিও না যে আসবি?
সাদিয়ার ব্যাপারটা নিয়ে কিছু ভেবে দেখেছিস?
সাদিয়ার কথা শুনে ইমরান সাহেব সোফায় বসতে বসতে বলল এটা নিয়ে ভাবার কিছু দেখছি না ওর বয়স এখনো খুব কম। হয়তো আমার কোন কিছু ওকে মুগ্ধ করেছে সেজন্য হয়তো আবেগের বশে সে এমনটা করছে। ধীরে ধীরে এই আবেগ কেটে যাবে তখন সে নিজেই বুঝতে পারবে।
আর যদি না কাটে? শফিক বলল,
তাহলে এটা ওর সমস্যা, দেখ তুই ভাল করেই জানিস যে আমার মনে সাদিয়ার জন্য কোন ধরনের আকর্ষণ কাজ করছে না। আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে আমি আমার জীবনে নতুন কোন মেয়েকে চাইনা। তাছাড়া তুই জানিস কদিন পর আমি দেশের বাইরে চলে যাচ্ছি ইমরান সাহেব বললো ।
সফিক আর কিছু না বলে বললো তাহলে আজ আসি।
এদিকে সাদিয়া তার বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে ইমরান সাহেবের কথা ভাবতে ভাবতে চোখের জল ফেলছে ঠিক সেই মুহুর্তে সাদিয়ার কাধে কে যেন স্পর্শ করেছে। পিছনে ফিরে দেখতে পেল তার মামা দাঁড়িয়ে রয়েছে।
কেমন আছিস? জিজ্ঞেস করলো সাদিয়ার মামা।
যেমনটা দেখছো বলল সাদিয়া।
তোর কি মনে হয় না যদি এখন একটু বেশি পাগলামি করে ফেলছোস ?
অবশ্যই না, আমি জানি আমার ভিতরে কি চলছে তোমরা তা বুঝতে পারছনা কেন?
তোর আর ইমরানের বিষয়টা বাসায় মেনে নেবে ? আপা দুলাভাই জানলে কত বড় ঝামেলা হতে পারে তা তোর মাথায় আছে?
সবার কথা ভাবার জন্য আমি বসে নেই। আমাকে একটু নিজের কথা ভাবতে দাও সাদিয়া বললো ।
সফিক আর কিছু না বলে সাদিয়া রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
ঘড়িতে তখন টিক রাত আটটা বাজে। বাইরে প্রচন্ড রকমের বৃষ্টি হচ্ছে। এরকম অঝোর ধারায় বৃষ্টি সম্ভবত খুব কমই হয়ে থাকে। ইমরান সাহেব বাসায় যেহেতু একাই থাকে তাই নিজেই কিচেন রুমে গিয়ে কফি বানিয়ে নিয়ে এসে তার রুমে বারান্দায় দাঁড়ালো।
কফি খেতে খেতে বৃষ্টি উপভোগ করতে লাগলো বাসায় কারেন্ট নেই একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে কোনরকম মিটিমিটি আলো আনলো।
ঠিক তখনই বাসার কলিং বেলটা বেজে উঠলো, ইমরান সাহেব অবাক হয়ে ভাবতে লাগলো এত প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে বাসায় আবার কে আসলো?
ভাবতে ভাবতে হাতের মগটি টেবিলে রেখে দরজা খুলতে গেল। দরজা খুলে ইমরান সাহেব চমকে উঠলো। কেননা দেখতে পেল দরজার সামনে সাদিয়া দাঁড়িয়ে আছে। তার পুরো শরীর খারাপ অবস্থা।
জামা-কাপড় তার গায়ের সাথে লেপ্টে আছে সাথে চোখের কাজল বৃষ্টির পানির কারণে লেপ্টে গেছে। আবছা আলোর মাঝে সাদিয়াকে অসম্ভব সুন্দর এবং মায়াবী দেখালো। সাদিয়া ইমরান সাহেবকে পাশ কাটিয়ে ভিতরে ঢুকে গেল ।
দরজা বন্ধ না করেই সাদিয়ার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। সে যেন এই প্রথম সাদিয়াকে দেখছে মুগ্ধ হয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কি হলো দরজাটা বন্ধ করো বললো সাদিয়া । এই প্রথম ইমরান সাহেবকে তুমি করে সম্বোধন করেছে।
ইমরান সাহেবের বুকে তোলপাড় হওয়া শুরু করল সে দরজা বন্ধ করে পিছনে ফিরতেই সাদিয়ার কান্ড দেখে হাত পা অবশ হয়ে গেল।
চলবে………..
সিনিয়র – জুনিয়রের রোমান্টিক প্রেমের গল্পটি কেমন লাগলো ? পরর্বতী পার্ট পেতে কমেন্ট করে জানান গল্পটি কেমন হলো ।
২/ সমবয়সীর প্রেমের গল্প :

কাজলের সাথে আমার রিলেশন শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষার সময়।
আমরা দুজনে পাশাপাশি একটি সিটে বসে পরীক্ষা দিয়েছিলাম।
সেখান থেকে মূলত আমাদের পরিচয়, বন্ধুত্ব, অতঃপর প্রেম।
আমাদের রিলেশনটা ভালোই চলছিল।
যাহোক গত ১৯শে জুলাই ২০২০ হঠাৎ করেই কাজল আমাকে বলতেছে যে তার নাকি বিয়ে ঠিক হয়েছে।
আমি তাকে বলেছিলাম চলো আমরা পালিয়ে যাই কিন্তু সে রাজী হয়নি কারন আমি এখনো পড়াশোনা করি আমার কোন চাকরি নাই আর তার সাথে যার বিয়ে ঠিক হয়েছে সে একজন সরকারি চাকরিজীবী।
তার ফ্যামিলির বিপক্ষে কাজল কিছুই করতে পারবে না আমাকে এমনটা জানালো।
এমন বাহানাগুলো দেখিয়ে সে আমার সাথে সম্পর্ক ভেঙে দিল ।
কাজলের লাস্ট মেসেজ :
আশা করি তুমি ভালো আছো এবং তুমি বুঝতে পারছ যে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে এই অবস্থায় তোমার সাথে আর আমার কোন সম্পর্ক রাখা সম্ভব হবে না দয়া করে তুমি আমাকে ভুলে যাও আর আমি চাইনা যে তুমি আমার বিয়েতে এসে কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করো তাই তোমাকে বিয়ে ব্যাপারে কিছুই বললাম না ভালো থেকো।
এরপর কাজলের সাথে আমি অনেকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিলাম কিন্তু কোন লাভ হয়নি তার নাম্বারটি বন্ধ ছিল।
এখানেই আমাদের সব কিছু শেষ হয়ে যায়।
কিছুদিন পর,,
আমার নানাভাই আমাকে ফোন করে বলল যে ছোটমামার নাকি বিয়ে ঠিক হয়েছে এবং কয়েক দিনের মধ্যে বিয়ে ডেট পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি নানা ভাইকে বললাম বেশ ভালোই হয়েছে অনেকদিন পর তাহলে ছোট মামার বিয়ে হবে হাহাহা ।
বাসায় এসে মার থেকে জানতে পারলাম আগামী ২৫শে জুলাই ছোট মামার বিয়ে মা বলল আমরা ২৩ তারিখ নানার বাড়ি চলে যাব।
যেই কথা সেই কাজ আমরা তেইশে জুলাই সবাই নানার বাড়ি গিয়ে হাজির হই । ২৪শে জুলাই মামার মেহেদী অনুষ্ঠানের শেষ করে ২৫শে জুলাই বিয়ের দিন মামার সাথে নতুন মামীকে আনতে মামার শশুর বাড়ি গিয়ে পুরো অবাক হয়ে গেলাম।
আমার মামার বউ সে আর কেউ নয় কাজল। আমি কাজলকে দেখে আর বিয়ে বাড়িতে থাকতে পারছিলাম না সেখান থেকে লুকিয়ে কাউকে না জানিয়ে বাসায় চলে আসি।
আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম আমার এক্স গার্লফ্রেন্ড এখন আমার নতুন মামি। কাজলকে নানা বাড়ি গিয়ে মামি ডাকতে হবে এটা কেমন কথা?
হাহাহাহাহা….
সমবয়সী রিলেশন……
৩/ ভীষণ কষ্টের প্রেমের গল্প – koster golpo :

নয় মাস হবে একটি মেয়ের সাথে রিলেশনশিপ আছে আমার। সে প্রথম আমার অনেক খোঁজখবর নিতো। নিয়মিত এসএমএস কিংবা কল দিত। কিন্তু গত দুই তিন মাস ধরে সে আমাকে কল দেয় না কোন এসএমএস দেয় না খোঁজ খবর রাখে না। আমি এসএমএস দিলে রিপ্লাই দিতো নাহ,কল দিলে কেটে দিত।
গতকাল হঠাৎ করে তার নাম্বার থেকে একটি মিস কল আমার মোবাইল ফোনে দেখা গেল ।আমি ব্যাক করলাম কেমন আছো জিজ্ঞেস করলাম এবং এতদিন কেন কোনো খোঁজ খবর রাখে না বা আমি কল দিলে কল ব্যাক করে না, এসএমএস দিলে রিপ্লাই আসে না এগুলো জিজ্ঞেস করলে সেই আমাকে এক কথায় উত্তর দিলো যে তার সময় হয়ে উঠে না।
২/৩ মিনিট কথা বলার পর সে আমাকে বলল। আমার জন্য আর অপেক্ষা করো না আমি আমাদের এই সম্পর্কটা আর কন্টিনিউ করতে পারবোনা। দয়া করে তুমি আমাকে ভুলে যাও। এবং আমাকে কোন ধরনের এসএমএস, কল ইত্যাদি দিয়ে বিরক্ত করো না।
তার এই কথাটি শুনে আমি অবাক হয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলাম। এবং মনে মনে ভাবতে লাগলাম তাহলে এতদিন আমার সাথে প্রতারণা করেছে, নাকি আমার সাথে সময় কাটিয়েছে এই ধরনের অনেক কথা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগল।
ঠিক তখন মোবাইলের ওপাশ থেকে বলে উঠলো ভালো থেকো আমাকে কোন ধরনের বিরক্ত করোনা আশা করি তুমি বুঝতে পেরেছ আমি কি বলতে চাচ্ছি।
আজও সেই মেয়েটার স্মৃতি আমাকে নাড়া দিয়ে যায়। গত নয় মাসে তার সাথে আমার অনেক মধুর স্মৃতি রয়েছে ভাবলেই মনটা খারাপ হয়ে উঠে।
সে ঠিক কি কারণে সে এমনটা করলো কিছু বুঝে উঠতে পারি নাই।
কমেন্টে অভিজ্ঞ ছ্যাকা প্রাপ্তদের থেকে পরামর্শ চাচ্ছি ছেলেটি কি কারনে আমার সাথে এমন করল?
পরিশেষে – Finally
আজকের সিনিয়র – জুনিয়র , সমবয়সী ও কষ্টের ৩টি প্রেমের গল্পের মধ্যে কোন গল্পটি আপনার কাছে অধিক ভালো লেগেছে তা জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে । এছাড়াও এইরকম আরো গল্প পেতে জানাতে পারেন আপনাদের আগ্রহ কমেন্ট করে । আপনাদের আগ্রহ দেখলেই আমরা নিয়মিত গল্প সাইটে পাবলিশ করবো ।
এছাড়াও নিয়মিত আপডেট পেতে ফলো করুন আমাদেরকে ফেসবুকে ।
আরো পড়ুন :
মেয়ে পটানোর জন্য লেটার লেখার ৫টি সেরা টেকনিক ।