মুরগি পালন বা মুরগির খামার ব্যবসা এটি কোন নতুন ব্যবসার আইডিয়া নয় । মানুষ তাদের জীবন-জীবিকার জন্য সেই অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন প্রকারের হাসঁ – মুরগি ও পশু – পাখি পালন করে আসছে ।
যেমন : সোনালী মুরগী , দেশি মুরগি ইত্যাদি । কিন্তু বর্তমানে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিজ্ঞানের সুবাদে নানান ধরনের নতুন মুরগির জাত লক্ষ্য করা যায় । তাদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় কয়েকটি মুরগির জাত হল ব্রয়লার , লেয়ার এবং কক মোড়গ ।
মুরগী আমাদের আমিষের বিশাল চাহিদা পূরণ করে থাকে । পূর্বে মানুষ পারিবারিকভাবে সবাই কমবেশি করে মোটামুটি মুরগি পালন করত । কিন্তু বর্তমান আধুনিক যুগের মানুষ তাদের দৈনন্দিন ব্যস্ততার কারণে পূর্বের মত পারিবারিকভাবে সবার পক্ষে মুরগি পালন করা সম্ভব হচ্ছে না ।
কিন্তু আমিষের চাহিদা মেটানোর বিকল্প তেমন উপায় নেই । তাই পূর্বে পারিবারিকভাবে মুরগির পালন করা হলেও বর্তমানে মুরগির খামার করে মুরগি পালন করতে বেশ লক্ষ্য করা যায় ।
মুরগির খামার করে একত্রে হাজার হাজার মুরগি পালন করা যায় । যার ফলে বিপুল আমিষের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে । মুরগির মাংসের পাশাপাশি মুরগির ডিমও আমাদের অনেক উপকার করে থাকে ।
মুরগির ডিম আমাদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে থাকে । সর্বোপরি মুরগির চাহিদা আকাশচুম্বী তাই আপনি যদি মুরগির খামার ব্যবসা করার চিন্তা করে থাকেন তাহলে আপনি সঠিক একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।
তবে মুরগির খামার সফলভাবে করতে হলে আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রম এবং স্মার্টভাবে খামার পরিচালনা করতে হবে । তাহলে চলুন বিস্তারিত দেখে নেয়া যাক কিভাবে একটি মুরগির খামার শুরু করা যায় ।
মুরগির খামার ব্যবসা যেভাবে শুরু করবেন ?
মুরগির খামার ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই মুরগি এবং খামার সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ অভিজ্ঞতা অর্জন করে নিতে হবে । বিশেষ করে আপনি যদি ব্রয়লার মুরগি নিয়ে খামার ব্যবসা করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে অধিক সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে ।
এর কারণ আমরা দেখেছি ব্রয়লার মুরগিগুলো আমাদের দেশীয় মুরগির তুলনায় অনেক দুর্বল হয়ে থাকে । তাই কোন রোগ বালাই এদের আক্রমণ করলে দ্রুতই এরা মৃত্যুর দিকে ঝুঁকে পড়ে ।
মুরগির খামার ব্যবসা শুরু করার পূর্বে অবশ্যই অন্যান্য মুরগি খামারি ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করুন এবং তাদের পরামর্শ নিয়ে আস্তে আস্তে সামনে এগিয়ে যান ।
তবে সবচেয়ে ভালো হচ্ছে অন্যের মুরগির খামারে কর্মী হিসেবে কিছুদিন চাকরি করা । এতে করে অভিজ্ঞ কর্মীদের সাথে থেকে সহজেই মুরগির খামার ব্যবসা শিখে নিতে পারবেন ।
এবং মুরগির খামার শুরুর সময় চেষ্টা করবেন প্রথমে অল্প পরিমাণে মুরগি নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে । যেমন : শুরুর দিকে আপনি মাত্র ৩০০ থেকে ৫০০ পিস মুরগি নিয়ে আপনার মুরগির খামার ব্যবসা শুরু করতে পারেন ।
মুরগির খামার তৈরী করতে খরচ কেমন হবে ?
১টি ব্রয়লার মুরগির জন্য সাধারণত এক বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন হয় । এখন আপনি যদি ১০০টি ব্রয়লার মুরগি নিয়ে আপনার মুরগির খামার শুরু করেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে ১০০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে একটি খামার তৈরি করতে হবে ।
অর্থাৎ মুরগির খামার তৈরি , মুরগির খাবার যোগান , খামারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা , মুরগির জন্য বিভিন্ন ঔষধসহ ইত্যাদি খরচ মিলিয়ে আপনার প্রায় ৩০ – থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে ।
তবে এই হিসাবটি শতভাগ সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা নেই এর কারণ প্রতিনিয়ত সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে । তাই আপনি যখন আমার আর্টিকেলটি পড়ছেন তখন হয়তো মুরগির খাবারের দাম , খামার তৈরি আসবাবপত্র ও মুরগির ঔষধ সমূহের দাম পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে ।
তাই মুরগির খামার তৈরি করতে কেমন খরচ হবে তা আপনার নিজেকেই হিসাব করে বের করতে হবে ।
মুরগির খামারের ঘর কেমন হবে ?
![ব্রয়লার মুরগির খামার ব্যবসা করে মাসে লাখটাকা ইনকাম [ ২০২৩ ] 2 বড় পরিসরে মুরগির খামার ঘর](https://goafta.com/wp-content/uploads/2022/10/বড়-পরিসরে-মুরগির-খামার-ঘর-300x182.jpg)
মুরগির খামারের ঘর সম্পর্কে উপরে কিছুটা আইডিয়া ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছেন । প্রতিটি মুরগির জন্য ১ বর্গফুট জায়গা নিয়ে আপনাকে মুরগির খামার ঘর তৈরি করতে হবে।
এছাড়াও চেষ্টা করবেন মুরগির খামারের দরজাটি দক্ষিণ দিকে মুখ করে দেওয়ার । এর ফলে দখিনা বাতাস আপনার মুরগির খামারে সহজে প্রবেশ করতে পারবে এবং এতে করে রোগবালাই এর আক্রমণ অনেক কমে যাবে ।
![ব্রয়লার মুরগির খামার ব্যবসা করে মাসে লাখটাকা ইনকাম [ ২০২৩ ] 3 ছোট পরিসরে মুরগির খামার ঘর](https://goafta.com/wp-content/uploads/2022/10/ছোট-পরিসরে-মুরগির-খামার-ঘর-300x182.jpg)
ব্রয়লার মুরগির খামার করার সুবিধা
দেশি মুরগি অথবা অন্যান্য জাতের মুরগি পালনের চেয়ে ব্রয়লার মুরগি পালন তুলনামূলক অনেক লাভজনক । এর প্রধান কারণ হচ্ছে এই ধরনের ব্রয়লার মুরগিগুলো মাত্র ৪ -৫ সপ্তাহের মধ্যেই বিক্রির জন্য উপযুক্ত হয়ে ওঠে ।
তাই আপনি যদি ব্রয়লার মুরগি নিয়ে ব্যবসা করে থাকেন তাহলে দ্রুতই মুরগির খামার ব্যবসা করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারবেন । ব্রয়লার মুরগির খামার করার কয়েকটি সুবিধা নিচে দেওয়া হল :
- তুলনামূলক অল্প টাকা বিনিয়োগ করে ব্রয়লার মুরগির খামার শুরু করা সম্ভব ।
- মাত্র ৪ – ৫ সপ্তাহের মধ্যেই ব্রয়লার মুরগিগুলোকে বড় করে বিক্রি করা সম্ভব ।
- এবং বছরে আপনি প্রায় ১০ – ১২ বার আপনার খামারে ব্রয়লার মুরগি পালন করতে পারবেন ।
- ব্রয়লার মুরগি দ্রুত বিক্রি করা সম্ভব কারণ এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে বাজারে । তাই বিক্রি করতে কষ্ট হয় নাহ ।
মুরগির ঘর নিয়ে কিছু পূর্ব সর্তকর্তা
একটি খামারে ৫০০ থেকে ১০০০ মুরগি পালন করার জন্য মুরগির ঘর তৈরি করার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় সতর্ক থাকতে হবে তা হল :
- মুরগির খামারের ঘরটি যেন সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে ।
- খামারটিকে নিরিবিলি এবং খোলামেলা একটি স্থানে তৈরি করতে হবে যাতে যথেষ্ট আলো-বাতাস খামার ঘরে প্রবেশ করতে পারে ।
- খামার ঘরের মেঝেতে দুই থেকে তিন ইঞ্চি পুরু ধানের তুষ অথবা কাঠের গুঁড়ো ভালো করে বিছিয়ে দিতে হবে ।
- মেঝেতে বিছানো ধানের তুষ অথবা কাঠের গুঁড়া গুলো প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১বার করে পাল্টে দিতে হবে । এর কারণ হচ্ছে খামারের মেজে যেন স্যাতঁস্যাতেঁ না হয়ে যায় ।
- কাঠের গুড়া অথবা ধানের তুষগুলো পরিবর্তন করার সময় রুমটিকে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে । কাঠের গুঁড়া বা ধানের তুষ মূলত দেয়া হয়ে থাকে মুরগির যাতে ঠান্ডা না লাগে এবং ডিম পারতে কষ্ট বা ক্ষতি না হয় । এছাড়াও কাঠের গুড়া বা ধানের তুষ শুষ্ক থাকলে মুরগির শরীর বৃদ্ধি হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হয় এবং রোগবালাই সহজে আক্রমণ করতে পারে না ।
মুরগি কোথায় থেকে নিবেন ?
মুরগির বাচ্চা কোথায় থেকে সংগ্রহ করবেন এটি জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এর কারণ হচ্ছে বর্তমানে এই সেক্টরে অনেক চিটার – বাটপারকে লক্ষ করা যায় যারা ভালো মুরগির বাচ্চা বলে বিভিন্ন খারাপ জাতের বাচ্চা খামারিদের সাপ্লাই দেয় ।
বিশেষ করে নতুন খামারিদের সাথে এই ধরনের চক্রগুলো এমন কাজ করে থাকে । তাই আপনার পার্শ্ববর্তী কোন মুরগির খামার থাকলে তাদের সাথে যোগাযোগ করুন এবং তারা কোথায় থেকে মুরগির বাচ্চা সংগ্রহ করছে তার খোঁজ নিন ।
এর পাশাপাশি মুরগির বাচ্চা দাম কেমন তাও জেনে নেবেন । মুরগির বাচ্চা মূলত বিভিন্ন ডিমের ফার্মগুলো সাপ্লাই করে থাকে ।
তাই যাদের কাছ থেকেই মুরগির বাচ্চা কিনুন না কেন আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে বাচ্চা যেন উন্নত জাতের এবং সুস্থ হয় ।
আরো পড়ুন =
মুরগি এবং ব্রয়লার মুরগির খাবার তালিকা
মুরগিকে শর্করা , আমিষ , স্নেহ / চর্বি , খনিজ পদার্থ এই ধরনের পুষ্টি উপাদান জাতীয় খাদ্যগুলো খাওয়াতে হয় । যেমন :
মুরগির খাবার উপাদানসমূহ :
শর্করা : | ধান , চাল , গম , ভুট্টা , গমের ভুসি , চালের কুড়া ইত্যাদি । |
---|---|
আমিষ : | তিলের খৈল , শুটকি মাছের গুড়া , সরিষার খৈল , সোয়াবিন মিল রক্তের গুড়া ইত্যাদি । |
স্নেহ / চর্বি : | বিভিন্ন উদ্ভিজ তেল যেমন : সোয়াবিন তেল , তিলের তেল , পাম তেল ইত্যাদি । |
খনিজ পদার্থ : | খাবার লবণ , ডিমের খোসার গুড়ো , চুনাপাথর , ঝিনুক খোসা চূর্ণ ইত্যাদি । |
ভিটামিন : | ভিটামিন- মিনারেল প্রিমিক্স , শাকসবজি ইত্যাদি । |
পানি : | বিশুদ্ধ পরিষ্কার পানি । |
বন্ধুরা উপরের টেবিলে আপনারা মুরগির খাবারের উপাদানসমূহ সম্পর্কে জানলেন । এখন ব্রয়লার মুরগির প্রতিদিনের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ সম্পর্কে আপনাদের জানাবো ।
তবে ব্রয়লার মুরগির খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ মুরগির বয়স , জাত , তাপমাত্রা , আবহাওয়া এবং জলবায়ুর , খাদ্যের গুণগত মান, বাসস্থান ইত্যাদির উপর নির্ভর করে ।
এরপরও বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা খাদ্য গ্রহণের একটি আদর্শ মান দিয়েছেন । চলুন তার একটি তালিকা দেখে নেওয়া যাক :
লেয়ার মুরগি এবং ব্রয়লার মুরগির দৈনিক খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ :
বয়স | লেয়ার মুরগির ( গ্রাম ) | ব্রয়লার মুরগির ( গ্রাম |
---|---|---|
প্রথম সপ্তাহ | ১০ | ২৫ |
দ্বিতীয় সপ্তাহ | ২০ | ৬৫ |
তৃতীয় সপ্তাহ | ২৫ | ১০০ |
চতুর্থ সপ্তাহ | ৩০ | ১৩০ |
পঞ্চম সপ্তাহ | ৩৫ | ১৬০ |
ষষ্ঠ সপ্তাহ | ৩৭ | ১৬৫ |
সপ্তম সপ্তাহ | ৪০ | |
অষ্টম সপ্তাহ | ৪৫ | |
বাড়ন্ত | ৭০ | |
বয়স্ক | ১১৫ |
সপ্তম সপ্তাহ থেকে ব্রয়লার মুরগির ঘর ফাঁকা রাখার কারণ হলো এইসময় পর থেকে সাধারণত ব্রয়লার মুরগি গুলো বিক্রি করে দেওয়া হয় ।
ব্রয়লার মুরগির রোগ ও প্রতিকার
মুরগির খামার করার ক্ষেত্রে মুরগির রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে আপনাকে ভালো ধারণা রাখতে হবে ।
বিভিন্ন সময় মুরগিকে বিভিন্ন ভাইরাস ও জীবাণু আক্রমণ করতে পারে তাই সাথে সাথে যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে রোগ পুরো খামারে ছড়িয়ে পড়ে আপনার খামার ব্যবসা ধস নামাতে পারে ।
তাহলে চলুন পরিচিত কিছু মুরগির রোগ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক ।
রানীক্ষেত : এটি একটি পরিচিত এবং মারাত্মক ভয়াবহ রোগ মুরগির জন্য । এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ যার ফলে একটি মোরগের মধ্যে এধরনের রোগ হলে ধীরে ধীরে সব মুরগির মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে ।
প্রতিরোধ : এই রোগে আক্রান্ত হলে সাথে সাথে মুরগিগুলোকে রাণীক্ষেত টিকা খাওয়াতে হবে । এবং রোগ প্রতিরোধ করার জন্য মুরগিগুলোকে যথাসম্ভব আলাদা করে রাখার চেষ্টা করতে হবে ।
এই রোগে আক্রান্ত কোন মোরগ মারা গেলে সেটিকে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে ।
মোরগগুলো বিক্রি করে দেওয়ার পর প্রতিবার খামারটিকে ব্লিচিং পাউডার ও জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে ।
গামবোরা : এই রোগটিও মুরগির জন্য অত্যন্ত মারাত্মক একটি ভাইরাসজনিত রোগ । এই রোগে আক্রান্ত হলে মুরগির প্রতিরোধ এবং খাদ্য গ্রহণের ক্ষমতা কমে যায় ।
প্রতিরোধ : এই রোগটি প্রতিরোধ করার জন্য বাচ্চার বয়স যখন ১৪ দিন হবে তখন গামবোরা প্রতিরোধের পাউডার মেশানো পানি তিন দিন খাওয়াতে হবে ।
কলেরা : কলেরা হল একটি ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ । এই রোগটি সাধারণত হাঁস এবং মুরগির উভয়ের হয়ে থাকে । এটি দুই মাস বয়সের বেশি হাঁস-মুরগিগুলোকে আক্রমণ করে থাকে । পানি এবং হাঁস-মুরগির খাবার থেকেই কলেরা রোগের সংক্রমণ ঘটে ।
প্রতিরোধ : মুরগির খাবারের দিকে সবসময় নজর রাখতে হবে যে খাবার পানি নোংরা – ময়লা হয়ে যাচ্ছে কিনা । এছাড়াও অক্সিটেট্রাসাইক্লিন জাতীয় ঔষধ প্রতি মাসে একবার করে খাওয়াতে হবে ।
সাধারণত প্রতি ১৫টা মুরগির জন্য ১ গ্রাম ওষুধ পানিতে মিশ্রণ করে পরপর ৩দিন খাওয়াতে হয় । তবে এই ধরনের ওষুধ খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ।
এছাড়াও সালমোনেলোসিস বা পুলোরাম , প্যারালাইসিস , বাচ্চার পাখা না গজানো , ডিমের পাতলা খোসা ইত্যাদি রোগ-বালাই মুরগির হয়ে থাকে ।
ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা
দিন বা সময় | ওষুদ এবং খাওয়ানোর নিয়ম |
---|---|
প্রথম দিন | লাইসোভেট / গ্লুকোজ ২ ঘণ্টার পানিতে । দুই ঘন্টা পর রেনামক্স / নিউক্সেল / এনরোসিন টানা ৭২ ঘন্টা চলবে । |
চতুর্থ দিন | সাদা পানি এবং রাত্রে রাণীক্ষেত ভ্যাকসিন । ভ্যাকসিনের পরে রাতে সাদা পানি / ই সেল । |
পঞ্চম দিন - সপ্তম দিন | সকালে : বি১ . বি২ ১গ্রাম / ১লি: পানিতে । দুপুরে : সাদা পানি । রাতে : ভিটা এ ডি ১মিঃ / ২লিঃ পানিতে । |
অষ্টম দিন | সকাল - দুপুর = সাদা পানি । রাতে = গাম্বুরা ভ্যাকসিন ।পরে সাদা পানি /ইসেল |
নবম দিন - ১১ তম দিন | সকালে এবং রাতে রেনামাইসিন + জিংক ১ / ১ দুপুরে সাদা পানি । |
১২তম দিন - ১৩ তম দিন | সকালে , লিভারটনিক ১/১ দুপুরে = সাদা পানি রাতে= রেনামাইসিন + জিংক ১/১ |
১৪ তম দিন | সকাল + দুপুরে = সাদা পানি রাত্রে = গাম্বুরা ভ্যাকসিন , পরে সাদা পানি /ইসেল |
১৫ - ১৭ তম দিন | কক্সি অফ ১/১ টানা ৭২ ঘন্টা এবং সাথে করেনা মক্স / রেনামাইসিন |
১৮ তম দিন | সকালে = রেনামাইসিন + জিংক ১/১ দুপুরে = সাদা পানি রাত্রে = এনজাইম ১/২ |
১৯ তম দিন | সারাদিন = সাদা পানি রাত্রে = রানিক্ষেত ভ্যাকসিন পরে সাদা পানি / ইসেল । |
২০ - ২২ তম দিন | সিপ্রো + রেনামক্স + নাপা + ১/১টানা ৭২ঘন্টা । |
২৩ তম দিন | সাদা পানি ২৪ঘন্টা |
২৪ - ২৬ তম দিন | সকাল এবং দুপুরে = সাদা পানি রাত্রে = রেনামাইসিন + জিংক |
২৭ - ৩০তম দিন | সকালে = কেমিন ১/১ লিভার টনিক - রনামাইসিন দুপুরে =সাদা পানি রাত্রে = ব্রয়লার বুস্টার /চিক টনিক /ইয়াম ১/২-৩ |
ব্রয়লার মুরগির দাম ২০২২
আপনাদের মধ্যে অনেকে ব্রয়লার মুরগির দাম সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন । কিন্তু দুঃখের সাথে আপনাদের জানাতে হচ্ছে যে এই সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেওয়া সম্ভব নয় ।
এর কারণ হচ্ছে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিনিয়তই উঠানামা করে থাকে । এর প্রকৃত বাজার দাম জানতে আপনাকে অবশ্যই বাজারের মুরগির দোকানগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে হবে ।
ব্রয়লার মুরগি পালনে লাভ
আনুমানিক, ১টি মুরগি বাচ্চা ক্রয় যদি হয় = ৪০ টাকা ।
এবং ১মাসে এটিকে ১.৫ কেজি থেকে ৩কেজি বড় করতে খরচ হতে পারে = ১৫০টাকা ।
তাহলে টোটাল খরচ হচ্ছে = ( ৪০ + ১৫০ ) = ১৯০ টাকা ।
এখন আপনি যদি বর্তমান বাজার মূল্য হিসাবে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেন তাহলে পাচ্ছেন কেজিতে ১৭০টাকা করে । যা ১টি ৩কেজির ব্রয়লারের দাম পড়বে = ( ১৭০ * ৩ ) = ৫১০ টাকা ।
তাহলে একটি মুরগি বিক্রি করে পাচ্ছেন = ৫১০ টাকা ।
খরচ হয়েছিলো ১টি মুরগির পিছনে = ১৯০ টাকা ।
তাহলে লাভ হলো = ( ৫১০ – ১৯০ ) = ৩২০ টাকা ।
এখন আপনি যদি ১০০টি ব্রয়লার মুরগি ৩কেজি করে বিক্রি করতে পারেন তাহলে ( ১০০ * ৩২০ ) = ৩২,০০০ টাকা লাভ করতে পারবেন । ধরুন ভাংতি ২০০০টাকাও বাদ দিলাম তারপরও আপনার ৩০,০০০ টাকা লাভ থাকবে ।
এখানে আমি বর্তমান সময়ের [ ১০/২৯/২০২২ ] মুরগির বাজার মূল্য হিসেবে একটি হিসাব করা চেষ্টা করলাম । আপনি আপনার বর্তমান মুরগির বাজার মূল্য হিসাব করেই ব্যবসা শুরু করবেন ।
হিসাবে ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখে তা কমেন্ট করে জানাবেন । আমি সেটি আপডেট করার চেষ্টা করব ।
মোট কথা আপনি যদি সফলভাবে কয়েকটি ব্যাচ ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করতে পারেন তাহলে আপনি শক্ত একটি অবস্থানে পৌঁছে যাবেন । আমার দেখা অনেকেই ব্রয়লার মুরগির ফার্ম করে ইতিমধ্যে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছে ।
তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হচ্ছেন মোস্তাফিজুর রহমান ভাই ।যিনি মাত্র ৪হাজার টাকায় মুরগির ব্যবসায় শুরু করেছিলেন কিন্তু বর্তমানে কোটিটাকা ইনকাম করছেন মুরগি ব্যবসা করে ।
প্রশ্ন উত্তর পর্ব :
একটি মুরগির খামার ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা প্রয়োজন ?
উত্তর : ১টি মুরগির খামার ব্যবসা শুরু করতে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা মূলধন প্রয়োজন ।
১০০ বর্গফুট একটি খামারে কতগুলো ব্রয়লার মুরগি রাখা যায় ?
উত্তর : ১০০ বর্গফুট একটি খামারে ১০০টি ব্রয়লার মুরগি পালন করা যায় । অর্থাৎ একটি ব্রয়লার মুরগির জন্য ১ বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন ।
মুরগির খামারের জন্য শহর নাকি গ্রাম উপযুক্ত স্থান ?
উত্তর : মুরগির খামারের জন্য গ্রাম সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান ।
একটি একদিনের ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার ওজন কত ?
উত্তর : একদিনে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা ওজন হবে ৩৬ থেকে ৪০ গ্রাম ।
১০০ ব্রয়লার মুরগি পালনের খরচ কত ?
উত্তর : ১০০ ব্রয়লার মুরগি যদি ৩০ থেকে ৩৫দিন পালন করা হয় তাহলে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে ।
পরিশেষে – Finally
আজকের মুরগির খামার ব্যবসা আর্টিকেলটিতে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে । আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি নিশ্চয়ই মুরগির খামার ব্যবসা সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন ।
আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনার কি উপকার হলো বা নতুন কী শিখেছেন তা আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন ।
এছাড়াও মুরগির খামার সম্পর্কে কোন ধরনের প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমরা আপনার কমেন্টের উত্তর দেওয়া শতভাগ চেষ্টা করব । এছাড়াও ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুকে ।
প্রবাস ফেরত আব্দর রাজ্জাক ভাইয়ের ব্রয়লার করে সফল হওয়ার কাহিনী দেখুন ।
[…] উপর মাচাং তৈরি করে সেখানে হাঁস-মুরগী পালন করতে পারেন […]
Hello, I want to subscribe for this weblog to get most
recent updates, thus where can i do it please help.