ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য বা অভীষ্ট লক্ষ্য আলোচনা করলে দেখা যায় মুনাফা অর্জনই ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য বা অভীষ্ট লক্ষ্য । এই প্রসঙ্গে Ansoff বলেন , একটি প্রতিষ্ঠান মুনাফার মাধ্যমেই তার অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন করে । আবার , Peter Drucker বলেন , অস্তিত্ব রক্ষায় একটা প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য ।
ব্যবস্থাপনাকে বলা হয় কতিপয় কাজের সমষ্টি যা প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা তৈরি করে, প্রতিষ্ঠানের পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য মানুষ ও অন্যান্য বস্তুগত সম্পদ সংগ্রহ করে কার্য সম্পাদনের সেগুলো ব্যবহার করে ও কাজে নিযুক্ত কর্মীদের নির্দেশনাদান, সমন্বয় সাধন ও প্রেষণার মাধ্যমে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে ।
ব্যবস্থাপনা কী হওয়া উচিত এটা একটা আপেক্ষিক বিষয় । সরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য এক নয় । রাজনৈতিক সংগঠন ও ব্যবসা সংগঠনের ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যও এক নয় । বিভিন্ন অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়ও ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য এক নয় । সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থায় ব্যবস্থাপনার মুখ্য অভীষ্ট লক্ষ্য হলো সামাজিক দায়িত্ব পালন আর অন্যদিকে ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা ব্যবস্থাপনায় মুখ্য অভীষ্ট লক্ষ্য হল মুনাফা অর্জন করা এবং মুনাফা অর্জনের জন্য অন্যান্য লক্ষ্য হলো গৌণ ।
ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যকে অনেকে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছেন । সকল প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য যেমন এক নয় তেমনি সকল ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যও এক নয় । স্থান- কাল- পাত্রভেদে এর উদ্দেশ্য পরিবর্তিত হয় ।
ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যসমূহ
এরপর এই সকল মূল লক্ষ্য ছাড়াও ব্যবস্থাপনার আরো কতগুলো গৌণ লক্ষ্য রয়েছে । সুতরাং ব্যবস্থাপনায় ওগুলোকে দুই ভাগে দেখানো যেতে পারে যেমন :
ব্যবস্থাপনার অভীষ্ট লক্ষ্য :
ক/ মূল
খ/ গৌণ
ক. ব্যবস্থাপনার মূল লক্ষ্য :
১. সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন লক্ষ্যকে সামনে রেখে সাফল্যের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করা ।
২. বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সমুন্নত রাখা ।
৩. প্রতিষ্ঠানের সকল বিভাগে গতিশীলতায় ও দক্ষতা অর্জন ।
৪.প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিকভাবে ন্যূনতম পর্যায়ে রাখা ।
৫. প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সমৃদ্ধি ও সম্প্রসারণের মধ্যমে সংগঠনের অস্তিত্ব সুদৃঢ় করা ।
খ. ব্যবস্থাপনার গৌণ অভীষ্ট লক্ষ্য :
১. গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা ও সুবিধা প্রদান করা ।
২. শ্রম – ব্যবস্থাপনার মধ্যকার সম্পর্কের উন্নতি করা ।
৩. ভোক্তাদের প্রতিযোগী মূল্য উন্নত মানের পণ্য সরবরাহ করা ।
৪. বাজার প্রতিযোগীদের থেকে সেরা অবস্থানে থাকার জন্য নতুন নতুন কৌশল ও পদ্ধতি ব্যবহার করা ।
৫. কর্পোরেট দায়িত্ব পালন করা ।
৬. জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক ভুমিকা রাখা ।
আরো পড়ুন :
➡️ ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য ।
➡️ব্যবস্থাপনার ধারণা ব্যাখা কর ।
নিয়মিত পড়াশুনা সম্পর্কিত পোষ্ট এর আপডেট পেতে যুক্ত থাকুন ফেইসবুক গ্রুপে ।