বেকারি ব্যবসা বর্তমান সময়ের নতুন কোনো ব্যবসা নয়। এটি প্রাচীন আমলের একটি ব্যবসা। বেকারি ব্যবসার যারা সঠিক বিজনেস প্ল্যান তৈরি করে ব্যবসা করেছেন একমাত্র তারাই সফল ব্যবসায়ী হতে পেরেছেন।
এই ব্যবসাটি বর্তমানে অনেক চাহিদাসম্পন্ন একটি ব্যবসা। আমাদের দৈনন্দিন নাস্তার রুটিনে আমরা এখন বেকারী পণ্যকে বেশ প্রাধান্য দিচ্ছি। এই ব্যবসাটি বর্তমানে অনেক লাভজনক একটি ব্যবসায় রূপান্তরিত হয়েছে।
তাই আপনি যদি নতুন কোন ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে থাকেন তাহলে আমাদের আজকের বেকারি ব্যবসার আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আমরা আজকের এই আর্টিকেলের বেকারী ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত খুঁটিনাটি সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব।
আশা করা যায় আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে বেকারি ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য ও ধারনা পাবেন। তাহলে বন্ধুরা শুরু করা যাক আমাদের মূল বিষয় বেকারি ব্যবসার আইডিয়া ।
বেকারি কি ? What is bakery
বেকারি একটি উৎপাদনমুখী পণ্যের ব্যবসার আইডিয়া । আমরা জানি বিভিন্ন ধরনের শুকনা খাবার যেমন: বিস্কুট, বন, পাউরুটি, কেক, টোস্ট বিস্কুট ইত্যাদি পণ্য তৈরির কারখানাকে মূলত বেকারি বলা হয়।
বেকারী পণ্যগুলো হচ্ছে মুখরোচক একটি খাবার। আমাদের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই প্রতিদিন কিছু না কিছু বেকারি আইটেমগুলো ক্রয় করা হয়ে থাকে। সকালের নাস্তায় পাউরুটি এবং বিকেলে চায়ের সাথে বিস্কুট এগুলা আমাদের দেশের পরিচিত দৃশ্য। এছাড়া শ্রমজীবী ও নিম্নআয়ের মানুষজন বেকারি পণ্যেরগুলোর অন্যতম ক্রেতা।
আমরা রাস্তাঘাটে বের হলেই দেখি রিকশাওয়ালাসহ বিভিন্ন শ্রমজীবী মানুষজন টং দোকানে বসে পাউরুটি কিংবা বন,ও বিস্কুট ইত্যাদি বেকারি পণ্যগুলো খাচ্ছে। রাস্তাঘাটে বের হলেই বোঝা যায় বেকারী পণ্যের চাহিদা কেমন রয়েছে।
বেকারি ব্যবসার কেন করবেন?
আপনি যদি বেকারির ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে এই লাভজনক ব্যবসাটি করতে পারবেন। বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশ বেকারী পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বেকারি পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যবসার উন্নতি এবং সম্ভাবনাময় একটি ব্যবসায় রূপান্তরিত হয়েছে।
আমরা রাস্তাঘাটে বের হলে দেখতে পাই প্রায় প্রতিটি দোকানে বেকারী পণ্যেগুলো বিক্রি হতে । চায়ের দোকান থেকে শুরু করে মুদি দোকান, স্টেশনারীর দোকান , কুলিং কর্ণার , সুপার শপ ইত্যাদি দোকানে প্রতিনিয়ত বেকারির আইটেমগুলো বিক্রি হচ্ছে ।
বর্তমানে অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় বেকারি ব্যবসা অনেক লাভজনক একটি ব্যবসায়। তাই যে কেউ চাইলে অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন এবং অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় তুলনামূলক ঝুঁকির পরিমাণ অনেক কম রয়েছে।
বেকারি ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা মূলধন প্রয়োজন?
আমরা জানি যে কোন ব্যবসা শুরু করার পূর্বে মূলধন আবশ্যক একটি বিষয়। তাই বেকারি ব্যবসা শুরু করার জন্য মূলধন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনি কিভাবে ব্যবসা শুরু করতে চান কত বড় করে ব্যবসা শুরু করতে চান তা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করে।
তাই আপনি যদি ছোট পরিসরে বেকারি ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে আপনার মূলধন লাগবে ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
অন্যদিকে আপনি যদি মাঝারি পরিসরে বেকারী ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
আবার আপনি যদি একটু বড় করে বেকারী ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মূলধন প্রয়োজন হতে পারে ।
প্রতিটি মানুষেরই যেকোন ব্যবসা শুরু করার আগে একটি কমন প্রশ্ন হল ব্যবসা শুরু করতে কত টাকা মূলধন এর প্রয়োজন হবে?
মূলধন সম্পূর্ণ ব্যক্তির উপর নির্ভর করে যে সে কত বড় করে ব্যবসাটি শুরু করতে চাই তার ওপর। আমরা সকলে মনে করি ব্যবসা করতে গেলে অনেক টাকা বা মূলধন এর প্রয়োজন হয়। এই ধারণা থাকার কারণে অনেকেই ব্যবসায় শুরু করতে পারে না।
তাই আপনাকে আমি বলব যে আপনি যে ব্যবসা শুরু করতে চান না কেন বেশি টাকা বা মূলধন যদি আপনার না থাকে তাহলে আপনি অল্প টাকা বিনিয়োগ করে ছোট পরিসরে ব্যবসাটি শুরু করুন । পরবর্তীতে ব্যবসার প্রসার বৃদ্ধি হলে তখন বেশি মূলধন বিনিয়োগ করতে পারবেন।
আরো পড়ুন …
কিভাবে বেকারি কারখানা তৈরি করবেন?
আপনি যদি বেকারির ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে সর্বপ্রথম আপনার প্রয়োজন হবে একটি বেকারি কারখানা। যেখানে আপনি বেকারি পণ্যগুলো উৎপাদন করবেন। বেকারি কারখানার জন্য আপনার অবশ্যই একটি ঘর তৈরি করতে হবে অথবা কারো থেকে রুম বা ঘর ভাড়া নিতে হবে ।
বেকারির কারখানার জন্য চার ভাগের তিন ভাগ চলে যাবে কারখানার বিভিন্ন মেশিন বসানোর জায়গায় । এবং অন্য একভাগ রাখতে হবে বেকারী পণ্যগুলো তৈরি করার পর প্যাকেজিং করার কাজে ব্যবহার করার জন্য।
তাই এইসব বিবেচনা করে বেকারী কারখানা তৈরি করতে হবে আপনাদের। এবং বেকারী কারখানা তৈরি করার সময় অবশ্যই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে কারখানাটি যেন কোনভাবে জলাশয়ের আশেপাশে বা জলের সংস্পর্শে না থাকে।
কারণ বেকারি পণ্যগুলো পানির কারণে সবচেয়ে বেশি নষ্ট হয়ে থাকে। সেজন্য খেয়াল রাখতে হবে যাতে বেকারী কারখানায় কোন দিক দিয়ে পানি প্রবেশ করার সুযোগ না থাকে ।
বেকারি ব্যবসা করতে কত বড় জায়গার প্রয়োজন হয়?
বেকারি ব্যবসা শুরু করতে আপনার সর্বনিম্ন ১০/২০ ফিটের জায়গার প্রয়োজন হবে। বেকারি ব্যবসার জন্য যত বড় জায়গা নেওয়া যায় তত ভালো। সম্ভব হলে আপনি আরো বড় জায়গা নিয়ে কারখানা তৈরি করতে পারেন। কেননা বিভিন্ন ধরনের বেকারি পণ্য তৈরি মেশিন, কাঁচামাল, বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম ইত্যাদির জন্য জায়গা রাখা প্রয়োজন।
বেকারি ব্যবসার কারখানা তৈরি করতে গেলে আপনি আপনার মূলধন অনুযায়ী জায়গা নির্ধারণ করতে পারেন। মূলকথা আপনার মূলধন যত বেশি থাকবে আপনি চাইলে ততো বড়সড়ো কারখানা তৈরি করতে পারেন।
এবং আপনার মূলধন যদি কম থাকে তাহলে আপনি সে অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণ একটি জায়গা নিয়ে বেকারির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
বিশেষ সতর্কতাঃ বেকারি কারখানাটি সব সময় আপনাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অন্যথায় যেকোনো সময় আপনার বেকারী পণ্য খেয়ে মানুষ অসুস্থ হয়ে যেতে পারে । এবং আপনার বেকারী প্রতিষ্টান ভোক্তা অধিদপ্তর সিল করে দিতে পারে ।
বেকারি ব্যবসা কোথায় করা যায়?
যেকোনো ব্যবসার জন্য আদর্শ জায়গা হল লোক সমাগম আছে অথবা মানুষজনের আনাগোনা বেশি ও যাতায়াতের সুবিধা রয়েছে এমন স্থানে যেকোন ব্যবসার জন্য আদর্শ একটি স্থান।
তাই বেকারীর ব্যবসা করার জন্য আপনাকে এমন একটি স্থান বেছে নিতে হবে যেখানে মানুষের আনাগোনা রয়েছে ও লোকসমাগম বেশি এবং যাতায়াতের সুবিধা রয়েছে এমন একটি স্থান বেকারি ব্যবসার জন্য নির্ধারণ করতে হবে।
আপনি যদি গ্রামে বসে বেকারি ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে আপনার গ্রাম অঞ্চলের যেসব স্থানে হাট – বাজার রয়েছে এসব স্থানে একটি বড় আয়তনের দোকান বা জায়গা ভাড়া নিয়ে কারখানা তৈরি করতে পারেন ।
অথবা যদি আপনার নিজস্ব কোন জায়গা থাকে তাহলে সেখানে আপনি বেকারী কারখানা তৈরি করে লাভজনক বেকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন ।
আপনি যদি শহরেই বেকারির ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে শহরের জনবহুল এলাকাগুলোতে বেকারির ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
তবে গ্রামের তুলনায় শহরে ব্যবসা করতে গেলে আপনার অনেক বেশি মূলধনের প্রয়োজন হতে পারে। কেননা শহরে দোকান ভাড়া থেকে শুরু করে যাবতীয় সবকিছুর দাম তুলনামূলক বেশি।
বেকারি ব্যবসা করতে কি কি কাঁচামালের প্রয়োজন হয় ?
বেকারি পণ্যগুলো তৈরি করার জন্য আপনার বেশকিছু কাঁচামালের প্রয়োজন হবে সেগুলো নিম্নরূপ:
- ময়দা
- চিনি
- সোয়াবিন তেল
- ডালডা
- ঘি
- মাখন
- বেকিং পাউডার
- বেকিং সোডা
- কাস্টার্ড পাউডার
- কনফ্লাওয়ার পাউডার
- ফুড কালার ইত্যাদি
এই কাঁচামালগুলো দিয়ে আপনি আপনার বেকারিতে বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরি করতে পারবেন। সকল বেকারি কারখানায় এই ধরনের কাঁচামাল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের নিত্য নতুন বেকারি পণ্য তৈরি করা হয়ে থাকে।
বেকারি ব্যবসায় কাঁচামালগুলো অল্প দামে কোথায় পাওয়া যায়?
বেকারি ব্যবসার জন্য সর্বপ্রথম উপাদান হলো কাঁচামাল। এই কাঁচামালগুলা আপনি যত কম দামে ক্রয় করতে পারবেন তত বেশি মুনাফা করা সম্ভব হবে।
আপনি চাইলে আপনার এলাকার হাট-বাজারগুলোতে যে দোকানে হোলসেল বা পাইকারি দামে মাল বিক্রি করে আপনি তাদের কাছ থেকে ক্রয় করতে পারেন। অথবা সরাসরি পাইকারি বাজারগুলো থেকে কাঁচামালগুলো সংগ্রহ করতে পারেন।
অথবা আপনি চাইলে সরাসরি ম্যানুফ্যাকচারার কোম্পানিগুলো থেকে হোলসেল রেটে একটু বেশি পরিমাণে কাঁচামাল ক্রয় করতে পারলে অনেক কম দামে কাচাঁমালগুলো পেয়ে যাবেন ।
বেকারি আইটেম পণ্য কি কি রয়েছে?
বেকারি ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই বেকারি আইটেম অথবা বেকারি পণ্যগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে । কারণ আপনার যদি বেকারি পণ্যগুলো সম্পর্কে ধারণা না থাকে তাহলে আপনি কিভাবে বেকারি ব্যবসা করবেন ?
তাই আপনাকে বেকারি পণ্য সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে এবং কি কি পণ্য রয়েছে তার সম্পর্কে জানতে হবে। বেকারি আইটেমগুলো নিম্নরূপ :
- পাউরুটি
- কাটাবন
- ডাইনিস
- পেটিস
- বিস্কুট
- ড্রাই কেক
- কেক
- টোস্ট বিস্কুট
- বেলা বিস্কুট
- খাস্তা বেলা ইত্যাদি
বেকারি পণ্যের আইটেমগুলোতে সাধারণত এইসব তৈরি হয় থাকে। তবে আপনি চাইলে প্রতিটি বেকারি আইটেমের মধ্যে বিভিন্ন বৈচিত্রতা আনতে পারেন।
যেমন: সাধারণ পাউরুটি, মোরব্বা দিয়ে মিষ্টি পাউরুটি, মিল্ক পাউরুটি, বিস্কুট এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সাইজের এবং স্বাদেরর বিস্কুট তৈরি করতে পারেন । কেকের মধ্যে যেমন ড্রাই কেক, ফ্রুট কেক, সফট কেক, ইত্যাদি এবং টোস্ট বিস্কুট এর মধ্যে ঝাল টোস্ট,নরমাল টোস্ট,মিষ্টি টোস্ট ইত্যাদি।
বেকারী ব্যবসা শুরু করার জন্য যেসব মেশিন প্রয়োজন ?
বেকারি ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার বিভিন্ন ধরনের মেশিন প্রয়োজন হবে । কারণ এক একটি আইটেম তৈরীর জন্য প্রায়ই একেকটি মেশিনের প্রয়োজন হয়ে থাকে।
বেকারি ব্যবসায় যে সকল মেশিন প্রয়োজন হবে তা নিম্নরূপ :
- মিক্সার মেশিন
- ওভেন
- বিশেষ ধরনের টেবিল
- পাতা মেশিন – এই মেশিনের সাহায্যে বিস্কুটগুলো কেটে রাখা হয় ।
- ডো মেকিং মেশিন( এটি ময়দা মাখার মেশিন)
- ডাইস
- প্যাকেজিং মেশিন
মিক্সার মেশিন ব্যবহার করা হয় ময়দা প্রসেসিং করার জন্য। আপনার কাছে যদি হাতে মূলধন কম থাকে তাহলে আপনি এই মেশিন ক্রয় না করেও হাতে ময়দা প্রসেসিং করতে পারেন। এই মেশিনটির তুলনামূলক একটু দাম বেশি।
ইলেকট্রিক ওভেনের ভেতর বেকারি আইটেমগুলো রেখে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সেগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করা হয়ে থাকে।
ডাইস হচ্ছে এমন একটি মেশিন যার মাধ্যমে বিস্কুট, পেটিস, বন, ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করা হয়।
এইসকল বেকারি মেশিন ছাড়াও আপনার কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র লাগবে যেমন ট্রাই , গামলা, চুরি, চামচ, কেক বানানোর জন্য ছাচ ও বিশেষ ধরনের কাগজ আবার পাউরুটি বানানোর জন্য ব্রাশ লাগবে।
বেকারি মেশিন দাম কত ২০২২ ?
বেকারি ব্যবসার ব্যবহৃত মেশিনগুলোর দাম নির্ধারিত হয় কোম্পানি এবং জায়গা বিবেচনা করে। আবার মেশিনগুলোর কোয়ালিটির উপর দাম নির্ধারিত হয়। মেশিন অটোমেটিক এবং ম্যানুয়াল হয়ে থাকে যার ফলে এর উপরে দাম নির্ধারিত হয়ে থাকে ।
তারপরও সাধারণত বেকারির ব্যবহার উপযুক্ত মেশিনগুলোর দাম আপনাদের সুবিধার্থে নিচে দেওয়া হল :
মিক্সার মেশিন | ৫০ হাজার টাকা |
---|---|
কুকিজ মেশিন (বিস্কুট তৈরির জন্য) | ২.৫ লক্ষ টাকা |
বিশেষ ধরনের টেবিল | ১ হাজার টাকা |
প্যাকেজ মেশিন | ১ এক লক্ষ টাকা |
ডো মেকিং মেশিন | ২০ হাজার টাকা |
ওভেন | ৫০ হাজার |
বিভিন্ন ধরনের ডাইস | ২-৩ হাজার টাকা |
ওয়েট মেশিন | ২৫০০ টাকা |
কাগজ ও ছুরি | ৫০০ টাকা |
কেক বানানোর মেশিন ২০২২
বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে ও দিবস এবং জন্মদিনের অনুষ্ঠান পালনের জন্য বেকারি কেক এর চাহিদা আমাদের মাঝে সারা বছরই রয়েছে। বিশেষ করে ইংরেজি নববর্ষ ও ক্রিসমাসের সময়ে কেকের চাহিদা বাজারে বিপুল হারে বেড়ে যায়।
কেক বানানোর মেশিনের সাহায্যে আপনি কেকগুলো তৈরি করতে পারবেন। কেক বানানোর মেশিনের সাহায্যে আপনি এই প্যাকগুলো তৈরি করে বাজারে বা বিভিন্ন দোকানে সাপ্লাই করতে পারবেন । এছাড়া বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে অর্ডার অনুযায়ী কাস্টমারদের কাছে এগুলো বিক্রি করতে পারবেন।
কেক তৈরির মেশিন
কেক তৈরির জন্য একটি হুইস্কার মেশিন বা মিক্সার মেশিন এর প্রয়োজন হয় এবং পাশাপাশি বড় একটি ওভেন দরকার।
কেক তৈরি মেশিনের দাম :
৫০ কেজি পর্যন্ত মিক্সার বানানোর মিক্সার মেশিনের দাম প্রায় ৮০ হাজার টাকা আর ১০ / ১৫ কেজি পর্যন্ত মিক্সার বানানো মিক্সার মেশিনের দাম প্রায় ৩০ হাজার টাকা।
আরো পড়ুন …
কিভাবে বেকারি ব্যবসা শুরু করবেন ?
বেকারি ব্যবসা শুরু করার আগে আপনাকে মার্কেট সম্পর্কে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করতে হবে।
অর্থাৎ আপনি যে অঞ্চল বা গ্রামকে টার্গেট করে ব্যবসা করতে চান সে গ্রামের আশেপাশে কোন বেকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে কিনা এবং যদি থেকে থাকে সেই বেকারীগুলো কিভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছে বিস্তারিত খুঁটিনাটি আপনাকে জানতে হবে।
এবং কিভাবে আপনি অন্যদের থেকে ভাল ব্যবসা করতে পারবেন সেই বিষয়ে খেয়াল রেখেই বেকারী ব্যবসা শুরু করতে হবে।
ব্যবসা শুরু করার পূর্বে যদি আপনি ভয় পেয়ে থাকেন তাহলে কোন ব্যবসায় আপনি সফল হতে পারবেন না। তাই ভয় না পেয়ে সাহসের সাথে যেকোনো ব্যবসায় নেমে পড়া উচিত। বেকারি ব্যবসার ক্ষেত্রেও একই বিষয়ে অবলম্বন করতে হবে।
অন্য বেকারী কারখানাগুলো থেকে কিভাবে ভাল মানের পণ্য তৈরি করবেন এবং কাস্টমারদের কিভাবে সন্তুষ্ট করা যায় সবগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে আপনার বেকারি ব্যবসা শুরু করা উচিত।
যেকোন ব্যবসার ক্ষেত্রে মালিকদের সুন্দর আচার – ব্যবহার করা উচিত কাস্টমারদের সাথে এবং আপনি যদি কাস্টমারদের সন্তুষ্ট করতে পারেন আপনার বেকারি পণ্য দিয়ে তাহলে খুব সহজে আপনি বেকারি ব্যবসা করে সফলতা অর্জন করতে পারবেন।
বেকারি ব্যবসা শুরু করতে হলে কি কি লাইসেন্স প্রয়োজন হয়?
আপনি যেকোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরু করতে চান না কেন আপনাকে অবশ্যই সরকার কর্তৃক প্রদানকৃত কিছু বৈধ লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।
বেকারি ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনাকে কয়েকটি লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে সেগুলো নিম্নরূপ:
- ট্রেড লাইসেন্স ।
- ফুড লাইসেন্স ।
- বিএসটিআই অনুমোদন ।
এই সকল লাইসেন্সগুলো আপনি যদি শহরে দেখা করতে চান তাহলে সিটি কর্পোরেশনের নিকট থেকে নিতে পারেন এবং আপনি যদি গ্রামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করতে চান তাহলে ইউনিয়ন পরিষদ, অথবা পৌরসভা থেকে সংগ্রহ করতে হবে ।
বেকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
আপনি যেকোন ব্যবসা শুরু করতে চান না কেন সে ব্যবসা সম্পর্কে অবশ্যই পূর্বের ধারণা থাকতে হবে অথবা আপনাকে বিভিন্ন ধরনের ধারণা অর্জন করতে হবে। নাহলে প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই বাজারে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে যেকোন ব্যবসায় টিকে থাকতে পারবেন না।
টিক বেকারি ব্যবসার ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য। আপনি যদি বেকারী ব্যবসা করতে চান তাহলে অবশ্যই বেকারী ব্যবসা সম্পর্কে আপনাকে নিয়মিত জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং বেকারির সকল পণ্যগুলো তৈরি করার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।
অথবা আপনি চাইলে বিভিন্ন সুদক্ষ কর্মীদের বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের নিয়োগ দিয়ে বেকারী কারখানাটি পরিচালনা করতে পারেন।
তারপরেও নিজেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা যেকোনো ব্যবসার জন্য জরুরী কেননা হঠাৎ কোন একদিন কর্মচারী না আসলে তখন আপনাকে সামাল দিতে হবে নিজের ব্যবসা।
আমাদের বাংলাদেশে বেকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হল বাংলাদেশ হোটেল ম্যানেজমেন্ট এন্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউট । এখান থেকে যেকেউ প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন ।
এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি হলো একটি সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। তাছাড়াও আরো বিভিন্ন প্রাইভেট ইনস্টিটিউট রয়েছে আপনি চাইলে সেখানে টাকা খরচ করে শিখতে পারেন।
অথবা গুগোল কিংবা ইউটিউবে বেকারি প্রশিক্ষণ লিখে সার্চ করলে অনেকগুলো ভিডিও পাবেন সেখান থেকেও ফ্রীতে শিখতে পারেন ।
বেকারি ব্যবসায় লাভ কেমন?
বেকারি ব্যবসায় লাভ সাধারণত ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ হয়ে থাকে। অর্থাৎ বলা যেতে পারে ১ কেজি বিস্কুট তৈরি করতে খরচ হবে ১৫০ টাকা এবং সেই ১ কেজি বিস্কুট বিক্রি করতে পারবেন ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। আবার অন্যদিকে একটি ১৮ পাউন্ড কেক তৈরি করতে খরচ হবে ১ হাজার টাকার মত এবং সেই ১৮ পাউন্ডের কেক বিক্রি করতে পারবেন ৩০০০ টাকার বেশি।
অর্থাৎ আপনি যদি একটি মাঝারি পরিসরে বেকারী কারখানা প্রতিষ্ঠা করতে পারেন তাহলে আপনি সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে প্রতিমাসে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন।
আপনি যদি সঠিক উপায়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন তাহলে এর চেয়েও বেশি টাকা আয় করতে পারবেন প্রতিমাসে।
বেকারি ব্যবসা করতে গেলে কি কি বাধার সম্মুখীন হতে হয়?
বেকারি ব্যবসা করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যাতে করে বেকারি ব্যবসার কাঁচামালগুলো কোন ভাবে নষ্ট না হয়।
বেকারি কারখানা অবশ্যই পানির আশেপাশে করা যাবে না। কারণ পানির কারণে বেকারি পণ্যগুলো সবচাইতে বেশি নষ্ট হয়ে থাকে।
এবং প্রতিদিনের বেকারি পণ্যগুলো প্রতিদিন বিক্রি করার চেষ্টা করতে হবে অন্যথায় পণ্যের মান ঠিক থাকবেনা।
প্রথমদিকে স্বল্পমূল্যে বেকারির পণ্যগুলো বিক্রয় করতে পারলে কাস্টমাররা সন্তুষ্ট হবে এবং পাশাপাশি কাস্টমারদের উন্নত ও রুচিশীল খাবার পরিবেশন করতে হবে ।
জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন সমূহ
বেকারি ব্যবসা করতে কারখানা কত বড় প্রয়োজন হয়?
উত্তর:৩০০ স্কয়ার ফুট থেকে ৪০০ স্কয়ার ফুটের একটি জায়গা হলে বেকারি কারখানা ভালোভাবে করা যাবে।
বেকারি কারখানা করতে কত টাকা প্রয়োজন?
উত্তর: ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা হলেই বেকারি কারখানা করতে পারবেন।
বেকারি ব্যবসায় লাভ কেমন ?
উত্তর: বেকারি ব্যবসা করে প্রতিমাসে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
কেক কারখানায় কি বেকারির মধ্যে পড়ে ?
উত্তর: হ্যাঁ , কেক তৈরির কাজও বেকারির মধ্যে পড়ে।
গ্রামে বসে কি বেকারি ব্যবসা করা যায় ?
উত্তর: হ্যাঁ , আপনি চাইলে গ্রামে বসে বেকারির ব্যবসা করতে পারবেন।
পরিশেষে – Finally
আমাদের আজকের বেকারি ব্যবসার আর্টিকেলে আপনাদের বেকারি ব্যবসায় সম্পর্কে বিস্তারিত আইডিয়া দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে । এরপরও বেকারি ব্যবসা সম্পর্কে কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন ।
আমরা আপনাদের সাহায্য করার চেষ্টা করবো । আমাদের লেখা ভালো লাগলে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুকে ।
[…] আরো পড়ুন : বেকারি ব্যবসায় শুরু করার উপায়সমূহ । […]