বন্ধুরা আপনাদের মধ্যে অনেকেই “বাসর রাতের গল্প ” “ বাসর রাতের রোমান্টিক গল্প “ ইত্যাদি লিখে সার্চ করেন । কিন্তু ইন্টারনেট খুজেঁ দেখলাম বেশিরভাগই অশ্লীল টাইপের গল্প । কিন্তু বাসর রাতও হতে পারে সুন্দর , রোমান্টিক এবং শিক্ষনীয় ।
আমাদের আজকের বাসর রাতের গল্পটি সম্পূর্ণ পড়লে আপনিও বাসর রাত নিয়ে ইতিবাচক একটি চিন্তা নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারবেন । বাসর রাত মানেই যে একজন অপরজনের শরীরের মোহে পড়ে যাওয়া নই বাসর রাত মানে হলো একে অপরকে বুঝতে পারার জানতে পারার ১ম পর্ব ।
এবং যাদের এই প্রথম পর্বটি সুন্দরভাবে শুরু হবে । আশা করা যায় তাদের মধ্যকার একটি মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠবে তৈরী হবে একটি বন্ধুত্ব । প্রেম – ভালোবাসা সময়ের সাথে সাথে কমে আসবে কিন্তু বন্ধুত্ব সারাটাজীবন ধরে থেকে যাবে ।
তাইতো মনীষীগন বলেছিলেন যে যদি প্রিয়জনকে সারাজীবনের জন্য কাছে পেতে চাও তাহলে শুরুতে বন্ধু হও ।
—– বাসর রুমে ডুকতে না ডুকতেই নীরা মানে আমার বউ বলে উঠলো ।
নীরা [ বউ ] : দেখুন আজকে রাতের জন্য আমি ঠিক প্রস্তুত না । আপনি কি আমায় একটু সময় দেবেন ?
আমি [ স্বামী ] : সদ্য বিয়ে করার নতুন বইয়ের মুখ থেকে এমন কথা শুনে মুখ শুকিয়ে গেল আমার । মনের ভেতর শশব্দে যেন কতগুলো তোলপাড় শুরু হয়েছে । একে তো বেশি বয়সে বিয়ে করেছি তার উপর বিয়ের আগে পাত্রীর সাথে কথা বলারও সুযোগ পাইনি । যদিও তিনি বারবার বলছিলেন তার মামাকে যে কিছুটা সময় দিতে ।
কিন্তু মামা এক কথার মানুষ । তার এক কথা বয়স তিরিশ পার হয়েছে সেই কবে ? আর কয়দিন এভাবে কাটাবি ? ভালো ঘরের মেয়ে, যদি হাত ছাড়া হয়ে যায় ? আমি ঘামছি শুধু । মাথার উপর ফ্যান চলছে তাও যেন গোসল করিয়ে দিচ্ছে ঘাম ।
বারবার মনে হচ্ছে বউয়ের কি কোনো affair ছিল ? তার লাইফ কি গল্প সিনেমার মতো হয়ে যাচ্ছে নাকি ? মা, বাবা মারা যাবার পর থেকে আমাকে দেখাশোনা মামাই করেছে ।
ঘোমটা দিয়ে বসে থাকা বউয়ের দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু না বলে বারান্দায় চলে আসলাম । মামাকে কল দিয়ে বলতেই মামা খেঁকিয়ে উঠলেন । আমি হতাশ হয়ে রুমে এসে গম্ভীর ভাব নিয়ে বললাম তোমার কি কোন সমস্যা আছে আজ ?
নীরা [ বউ ] : না, তেমন কোন সমস্যা নেই ।
আমি [ স্বামী ] : তাহলে ?
নিরা ঘোমতাটা তুলে বসলো । সাবলীলভাবে একে একে সেফটিপিনগুলো খুলতে লাগলো শাড়ির । আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি এতো সুন্দর লাগছে কেন নীরাকে আজ !
রোমান্টিক বাসর রাত গল্প
আমি [ মনে মনে ] : যেদিন দেখতে গিয়েছিলাম তার থেকেও সুন্দর । মেকআপের কারণে হয়তো !
নীরা [ বউ ] : এদিকে আসুন না একটু ।
আমি [ স্বামী ] : আমি অবাক হয়ে এগিয়ে যেতেই নিরা আমার সামনে এসে বসলো ।
নীরা [ বউ ] : এই যে মাথায় এতগুলো ক্লিপ করা এগুলো সব এক এক করে খুলুন তোহ ।
আমি [ স্বামী ] : আমি ???
নীরা [ বউ ] : হ্যাঁ হ্যাঁ পারবেন , তাড়াতাড়ি করুন । গোসল করবো আবার আমি ।
আমি [ স্বামী ] : আমি বোকার মতো বসে বসে নিরার ক্লিপ খুলছি আর হাতে দিচ্ছি । নিরা সেগুলো এক এক করে গুনে গুনে রাখছে ।
নীরা [ বউ ] : চব্বিশটা হলো । এবার হাতের আঙুল দিয়ে চুলের জটগুলো খুলুন তো । আমার চুলের বারোটা বাজিয়ে দিল এরা । বিয়ে করলে কি এতো সাজা লাগবে নাকি?
আমি [ মনে মনে ] : নিরা আপন মনে বকছে । আমি চুল খুলছি , আর হতভম্বের মতো শুনছি ।
একটু আগে বলা কথাটার সাথে এই বলা কথাগুলোর মিল নেই । আমার মাথায় এখনো আগের কথাটাই ঘুরছে ।
নিরা উঠে towel নিতে নিতে বলল ।
নীরা [ বউ ] : শুনুন আমি কিন্তু মোটে এত সুন্দরী না । এই যে গোসল করে আসবো এখন তখন চিনতেই পারবেন না আর । Please, তখন আবার রুম থেকে দৌড়ে পালাবেন না যেন হু, ।
আমি [ স্বামী ] : আমি ঘাড় কাত করে সম্মতি দিয়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসে রইলাম । নতুন আরেকটা চিন্তা যোগ হয়েছে. নিরার ফ্যামিলি কি তবে ঠকিয়েছে ?
আগে একবার দেখেছি তখনও তাহলে পার্লার থেকে সাজিয়ে ছিল । আমি আল্লাহকে ডাকতে লাগলাম না জানি অরিজিনাল নীরা দেখতে কেমন ? কালো হোক সুন্দর হোক তাতে আমার সমস্যা নেই. শুধু দেখতে মায়া হলেই হবে ।
একটু পর নিরা বেরিয়ে আসলো একটা সুতী শাড়ি পড়ে । একদম তরতাজা ফুলের মতো লাগছে তাকে । আমার মনের সব ভয় হাওয়ার মতো মিলিয়ে গেল, মেয়েটা আসলেই অনেক সুন্দর, মায়াময় সুন্দর !
এর সাথে সাদা-কালোর প্রভেদ চলে না। সুন্দর মানে সে রং বিহীন সুন্দর ।
আচ্ছা, বলো নি তো তোমার কি সমস্যা ?
নীরা [ বউ ] : আমি pregnant.
আমি [ স্বামী ] : what?
নীরা [ বউ ] : এটা ভাবেননি ?
আমি [ স্বামী ] : মানে? এটা কেন ভাববো ?
নীরা [ বউ ] : ও হ্যাঁ, আপনি ভাবছেন আমার কোনো relation চলছে ?
আমি [ স্বামী ] : হ্যাঁ ।
নীরা [ বউ ] : আপনি ভুল , চিন্তা ভাবনা এমন হলে হবে ?
আমি [ স্বামী ] : তাহলে কি তোমার আমাকে পছন্দ না ?
নীরা [ বউ ] : আপনার কি মনে হয়? আপনাকে অপছন্দের কারণ আছে?
আমি [ স্বামী ] : আছে বৈকি !
বাসর রাতের রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প
নীরা [ বউ ] : এডুকেটেড, ভালো জব , একটা সুন্দর বাড়ি, দেখতে শুনতে মাশাল্লাহ ভদ্র এসব তো মায়ের মুখে শুনে শুনে মুখস্ত. আর কিছু?
আমি [ স্বামী ] : আমার বয়স ? তুমি কি জানো আমাদের বয়সের তফাৎ?
নীরা [ বউ ] : মাত্র নয় বছর. রাইট ?
আমি [ স্বামী ] : হুম
নীরা [ বউ ] : আপনি জানেন আমার সবচেয়ে সুন্দরী ফ্রেন্ডের হাজবেন্ড মিনিমাম চল্লিশ পার করেছে । মাথার অর্ধেক চুল মিলিয়ে গেছে , দেখি আপনার আছে কিনা ?
আমি [ স্বামী ] : নিরার হাতের মুঠোয় আমার চুল । আমি হতবাক হয়ে যাচ্ছি নীরার কান্ড দেখে । মামা কি ইচ্ছে করে আমাকে নাজেহাল করার জন্য এমন একটা মেয়ের সাথে আমার বিয়ে করিয়েছে ?
নীরা [ বউ ] : চুল ঠিক আছে , তাহলে বলুন সেই হিসেবে আমি lucky কিনা ? আপনি মাত্র তিরিশ পার করেছেন এ আর এমন কি ?
আমি [ স্বামী ] : তাহলে সমস্যাটা কি নিরা?
নীরা [ বউ ] : সমস্যাটা হলো প্রেম ।
আমি [ স্বামী ] : আবার প্রেম ? বললে যে relation নেই ।
নীরা [ বউ ] : প্রেম মানে আমাদের পারস্পরিক ভালোবাসাটা । এখন কি আমাদের মাঝে কোন প্রকার টান, মায়া, বা প্রেমজাত কিছু এসেছে ? এসব কিছু ছাড়াই, আমি আমাকে কি করে আপনার হাতে তুলে দি ? শুধুমাত্র মোহের বশে নাকি শারীরিক আবেদনে ?
বাসর রাতের গল্প / বাসর রাতের প্রেমের কাহিনী
আমি [ স্বামী মনে মনে ] : আমি তাকিয়ে রইলাম মীরার দিকে সত্যিই আমাদের মাঝে তো কোন প্রেমই নেই মায়াটা তো সময়ের ব্যাপার । নিরাকে আমার ভালো লেগেছে দেখেই সেটা মোহে ধরা যায় । কিন্তু ভালোবাসাটা তো সময়ের সাথে সাথেই প্রকাশ পায় ।
সেই সময় টুকুন কত সময় তা আমি জানিনা । আবার আমি যেভাবে ভালোবাসবো, নিরা কী আমায় সেভাবে বেসে উঠতে পারবে কিনা ? এই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে । শরীর দিয়েই একটা ভালোবাসার স্বপ্ন শুরু করতে হবে, এটা ভাবতেই ভয় লাগলো আমার। শরীর দিয়ে কেন শুরু হবে ?
নীরা [ বউ ] : দেখুন আপনাকে দেখে যে কারোর তাক লেগে যাবে । ট্রাস্ট মি, প্রথম যেদিন আমাকে দেখতে গিয়েছিলেন, মামার সাথে । আড়ালে দেখে আমারও ভালো লেগেছিল । আপনাকে বিয়ে করার জন্য যে কারোরই মন আনচান করবে ।
আমারও করেছিলো । শুধুমাত্র আপনাকে দেখেই । তাহলে ভাবুন আপনার কাছে আসার জন্য আমার কেমন উদগ্রীবতা ?
তবু সময় চাইছি , কারণ আমি আমাদের সুন্দর সম্পর্কটা ধীরে সুস্থে সাজাতে চাই একদম নিশ্চিন্ত হয়ে বুঝলেন?
আমি [ স্বামী ] : নিশ্চিন্ত বলতে?
নীরা [ বউ ] : ধরুন আপনার সাথে আমার প্রেম থাকলে একটা চিন্তা হতো ।
বিয়ে হবে কি হবে না? স্বপ্নগুলো সত্যি হবে কিনা । কিন্তু আমাদের তো তা ছিল না সোজা বিয়েটাই হয়ে গেল । ব্যাস , একদম নিশ্চিন্ত আমি । এবার নিজের জিনিস যেমন খুশি ইউজ করবো সুন্দর না ?
বাসর রাতের রোমান্টিক গল্প
আমি [ স্বামী ] : হুম, খুব বেশি সুন্দর । যতটা ভয় পাচ্ছিলাম তার থেকেও বেশি ।
নীরা [ বউ ] : কাকে ?
আমি [ স্বামী ]: তুমি , যাক. I’m সরি এই কথাগুলো আমার বলা উচিত ছিলো আসলে । কি অদ্ভুত তাইনা ? মন ছোয়াঁর আগেই আমরা শরীরে ডুবে বসে থাকি ।
এই সময়টুকুন আমারই দেয়া উচিত ছিল তোমাকে । একটা অচেনা অজানা মেয়ের ভেতরকার রহস্য উদঘাটন করার আগেই আমরা তার গায়ের গন্ধ খুজঁতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি ।
আরো পড়ুন : রোমান্টিক প্রেমের গল্প ।
নীরা [ বউ ] : ভয় পেয়ে গেছিলেন তাইনা , প্রথমে ?
আমি [ স্বামী ] : ভীষণ । আমার সাদাসিধে জীবন নীরা । একা একা মানুষ । ক্যারিয়ার নিয়ে এত সিরিয়াস ছিলাম যে আর কিছুই গা ঘেষেনি । দাম্পত্য বা সংসার কেমন হয় আমি জানিনা ।
মা,বাবা ছিলেন না তো । ভয়ে ছিলাম কে আসবে জীবনে , কেমন হবে । এই ভয়েই বয়স পেরিয়ে গেলো । এট লাষ্ট মামা হুট করেই এসব করে বসলেন । রাগ হয়েছিলো তার উপর প্রচুর ।
নীরা [ বউ ] : এখনো মামার উপর তাহলে ক্ষেপে আছেন ।
আমি [ স্বামী ] : নাহ , তা নয় । একটু আগে অব্দি ছিলাম । মনে হয়েছিলো মামা আমাকে জব্দ কররার জন্য তোমাকে জুটিয়েছে ।
নীরা [ বউ ] : কিহহহ ?
আমি [ স্বামী ] : নাহ , মানে এখন ঠিকঠাক সব ।
নীরা [ বউ ] : সিউর ?
আমি [ স্বামী ] : হুম । সব মেঘ কেটে গেছে । এবার একটা স্বচ্ছ আকাশখোলার দিন আসবে । সেই দিনে আমাদের ভালোলাগা , ভালোবাসার এক এক সূত্র তৈরী হবে । তারপর হুট করেই আমি তোমার মায়ায় বাধা পড়ে যাবো তুমি টেরও পাবে নাহ ।
নিরা আমার হাতটা শক্ত করে ধরলো । এই হাত ভরসায় ধরা , নিজস্ব অধিকারের ধরা , নতুন একটা শুরুর জন্য ধরা ।
পরিশেষে – Finally
পিয় পাঠক , আমাদের আজকের কাল্পনিক “ বাসর রাতের গল্প ” টি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো তা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন । আপনাদের কমেন্টসগুলোই আমাদের নতুন নতুন গল্প ও আর্টিকেল লিখতে প্রেরণা জোগায় ।
আপনাদের প্রতিটি কমেন্ট আমাদের জন্য নতুন আর্টিকেল লেখার এক একটি অনুপ্রেরণা ।
এছাড়াও আপনাদের গল্পগুলো পাঠাতে পারেন আমাদের এই ঠিকানায় = support@goafta.com । গল্প ভালো হলে আমরা তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবো । এছাড়াও নিয়মিত বিভিন্ন আপডেট পেতে ফলো করুন ফেসবুকে ।
আরো পড়ুন :
প্রিয় মানুষকে নিয়ে কিছু দারুন কথা ।
মেয়ে পটানোর জন্য লাভ লেটার টেকনিক ।
Tags : বাসর রাতের গল্প , বাসর রাতের রোমান্টিক গল্প,বাসর রাতের রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প