বাংলা - ইংরেজিতে বায়োডাটা লেখার নিয়ম

বায়োডাটা এবং বায়োডাটা লেখার নিয়ম সম্পর্কে জ্ঞান রাখা আমাদের সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । সাধারণত বায়োডাটা বা জীবন বৃত্তান্ত বলতে বুঝায় জীবনের যাবতীয় কোর্স , দক্ষতা , অভিজ্ঞতা এবং নিজের ব্যক্তিগত তথ্য সমৃদ্ধ কোন পত্র ডকুমেন্টসকে । 

 

আমাদের মধ্যে অনেকেই বায়োডাটা , সিভি ও রিজিউম এর মধ্যে পেচ গুলিয়ে ফেলি । আবার আমাদের মধ্যে অনেকেই বায়োডাটা , সিভি  এবং রিজিউমকে একই জিনিস মনে করি ।

 

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এদের প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য ও পার্থক্য রয়েছে । আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলে বায়োডাটা লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পাশাপাশি সিভি , রিজিউম এবং বায়োডাটার মধ্যকার পার্থক্যও জানব ।

 

এছাড়াও আজকের আর্টিকেলটিতে বাংলায় বায়োডাটা লেখার নিয়ম  এর পাশাপাশি ইংরেজিতে কিভাবে বায়োডাটা লেখা যেতে পারে ও পাত্র -পাত্রীর জন্য বিবাহের বায়োডাটা লেখার নিয়মসহ ইত্যাদি আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ।

 

 তাই আজকের আর্টিকেলটি অত্যন্ত তথ্যবহুল ও আপনার জন্য সহায়ক একটি কনটেন্ট হতে যাচ্ছে ।  তাই মনোযোগ সহকারে সম্পূন্ন আর্টিকেলটি পড়ার চেষ্টা করুন । 

 

Table of Contents

বায়োডাটা মানে কি ? What does biodata mean ?

 

বায়োডাটা মানে হচ্ছে জীবন বৃত্তান্ত ।  বায়োডাটা ( Biodata ) শব্দটি একটি ইংরেজী শব্দ যার বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে জীবন বৃত্তান্ত ।  সাধারণত একটি বায়োডাটাতে একজন ব্যক্তির নিজস্ব ব্যক্তিগত তথ্য ,  শিক্ষাগত যোগ্যতা ,  দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা ইত্যাদি সমূহ সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হয় । 

 

বায়োডাটাতে উপরোক্ত বিষয়গুলো যুক্ত করার পাশাপাশি ব্যক্তির পছন্দ –  অপছন্দ ,  আগ্রহ ,  শখ  এবং তার নেতৃত্বদানের ক্ষমতা সমূহও যোগ করা যেতে পারে । নিজেকে অন্য কোন ব্যক্তি বা চাকরিদাতাদের কাছে তুলে ধরার জন্য বায়োডাটা একটি উপযুক্ত কৌশল ।

 

সিভি ও রিজিউম এবং বায়োডাটার মধ্যকার পার্থক্য

সিভি ও রিজিউম এবং বায়োডাটার মধ্যকার পার্থক্য
সিভি ও রিজিউম এবং বায়োডাটার মধ্যকার পার্থক্য

বায়োডাটা লেখার নিয়ম ফলো করার সময় আমরা অনেকেই কয়েকটি বিষয় সঠিকভাবে মেলাতে পারিনা ।  যেমন :  সিভি ( Cv ) ,  রিজিউম ( Resume )  ও বায়োডাটাকে আমরা অনেকেই প্রায় একই জিনিস মনে করে থাকি ।

 

তাই আমাদেরকে অবশ্যই এই ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে যে সিভি , রিজিউম এবং বায়োডাটার মধ্যকার আসল পার্থক্য কি ? তাহলে চলুন পার্থক্যগুলো দেখে নেওয়া যাক ।

 

সিভি কি – What is a CV ?

 

Curriculum Vitae এর সংক্ষিপ্ত রুপ হলো CV । ল্যাটিনে যা অর্থ হলো : Course Of Life ।  সিভি বলতে বুঝায় কোনো একজন ব্যাক্তিবর্গের জীবনের শিক্ষাগত যোগ্যতা  , পেশাগত দক্ষতা ও এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটিজের সংক্ষিপ্ত বিবরণকে ।

 

আবার অনেক ক্ষেত্রে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যে ডকুমেন্টস বা প্রতিবেদন তৈরি করা হয় তাকেও সিভি বলা হয় ।

 

সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানকালীন নিজের তৈরিকৃত প্রজেক্ট এবং তার রেজাল্ট , শিক্ষাজীবনে পাওয়া বিভিন্ন পুরস্কার , থিসিস টপিক , নিজের পছন্দের উচ্চ শিক্ষার বিষয়বস্তু ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট সমূহ একটি সিভির মধ্যে উল্লেখ করা হয়ে থাকে ।

 

এছাড়াও নিজস্ব কোন প্রকাশনা যদি জাতীয় পর্যায়ে প্রকাশিত হয়ে থাকে অথবা আপনি যদি কোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেন যেমন : IELTS ও GRE এর স্কোর সমূহ সিভিতে উল্লেখ করতে পারেন ।  পাশাপাশি বিভিন্ন ভাষার দক্ষতা থাকলে তাও সিভিতে যুক্ত করতে পারবেন ।

 

রিজিউম কি – What is a resume ? 

 

রিজিউম ( Resume )  হচ্ছে একটি ইংরেজি শব্দ যার বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে জীবনবৃত্তান্তের সারসংকলন । রিজিউম বিশেষ করে চাকরি জীবনে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে একজন স্টুডেন্টের প্রয়োজন হয়ে থাকে ।  একটি সিভি এবং রিজিউম এর মধ্যকার অনেক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় ।

 

যেমন : সিভিতে আপনি যে সকল তথ্যগুলো যুক্ত করবেন তা আপনি রিজিউমে যুক্ত করতে পারবেন না ।

 

রিজিউম এর সাথে বায়োডাটার কিছুটা সাদৃশ্যতা লক্ষ করা যায় ।  আমাদের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রিজিউমে যে সকল বিষয় উল্লেখ করতে হয় তা হল নিজের জীবনের লক্ষ কেন্দ্রিক বিষয়সমূহ ।

 

রিজিউমে যুক্ত করার অন্যতম কয়েকটি বিষয় হলো : নিজের দক্ষতা , খন্ডকালীন কোন চাকরির অভিজ্ঞতা , স্বেচ্ছাকর্মী হিসেবে অভিজ্ঞতা থাকলে তা তুলে ধরা ইত্যাদি । 

 

তবে লক্ষ্য করা গিয়েছে কর্মজীবনের অর্জনগুলি সম্পর্কে চাকরিদাতা বা নির্বাচন কর্মকর্তারা অতিরিক্ত মনোযোগ দিয়ে থাকেন ।

 

বায়োডাটা কি ? What is Biodata ?

 

বায়োডাটা অর্থ হচ্ছে জীবন বৃত্তান্ত ।  অর্থাৎ নিজের জীবন সংক্রান্ত তথ্যাবলী যেমন :  ব্যক্তিগত তথ্য , শিক্ষাগত যোগ্যতা ,  দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা ইত্যাদি বিষয় যে পত্র বা কাগজে তুলে ধরা হয় তাকেই বায়োডাটা বলে

 

আমাদের বাংলাদেশের সাধারণত বিয়ের জন্য বায়োডাটা ডকুমেন্টস অধিক সময় তৈরি করা হয়ে থাকে । বায়োডাটাতে সব সময় ব্যক্তিগত তথ্যের প্রাধান্য বেশি থাকে ।

 

ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি একাডেমিক যোগ্যতা উল্লেখ করে বায়োডাটাটিকে আরো বেশি তথ্যবহুল ও আকর্ষণীয় করে তোলা যায় ।

 

আশা করি আপনারা এখন সিভি , রিজিউম এবং বায়োডাটার মধ্যকার পার্থক্য পরিষ্কারভাবে বুঝতে পেরেছেন ।

 

জীবন বৃত্তান্ত বা বায়োডাটা বাংলায় লেখার নিয়ম

 

আজকের আর্টিকেলের এতোটুকু অংশ পর্যন্ত আপনারা  সিভি , রিজিউম এবং বায়োডাটা কি ও তাদের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন ।  এবার চলুন আজকের আর্টিকেল এর মূল বিষয় বায়োডাটা লেখার নিয়ম পর্বে প্রবেশ করি ।

 

তবে একটি বায়োডাটা লেখার নিয়মের পূর্বে আমাদেরকে অবশ্যই কিছু বিষয় সতর্কতার সাথে এড়িয়ে চলতে হবে । চলুন সেই বিষয়গুলো এক নজরে দেখে নেওয়া যাক : 

 

  • বাংলাদেশের চাকরিদাতারা গড়ে একটি বায়োডাটা দেখতে সময় নেয় মাত্র ৩০ থেকে ৩৫  সেকেন্ড ।  তাহলে বুঝতেই পারছেন কত অল্প সময়ে তারা একটি বায়োডাটাকে বিচার বিশ্লেষণ করে থাকে ।  তাই এই অল্প সময়ের মধ্যে একজন নির্বাচককে চমকে দিতে হলে আপনাকে অবশ্যই আকর্ষণীয়ভাবে বায়োডাটা লিখতে হবে । সংক্ষিপ্ত ও অল্প শব্দ ব্যবহার করে গুছিয়ে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে ।

 

  • বায়োডাটাটিকে দুই পৃষ্ঠার বেশি বড় করবেন নাহ ।  বিশেষ করে আপনি যদি নতুন চাকরি প্রত্যাশী হয়ে থাকেন ।

 

  • বায়োডাটাটিকে সুন্দরভাবে ওয়ার্ড ফরমেটিং করতে হবে ।  অর্থাৎ গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলোকে হেডলাইন , হাইলাইটস ,  বোল্ড বা ইটালিক করে দেওয়া যেতে পারে । এতে করে নির্বাচক আপনার রুচি সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবে ।

 

  • একটি নির্ভুল বায়োডাটা তৈরি করতে হবে ।  অর্থাৎ কোন ধরনের বানান ভুল বা ব্যাকরণ ভুল থাকা যাবে না ।  সেক্ষেত্রে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে । এবং নির্বাচকের মনে আপনার সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা তৈরি হবে ।  তাই বায়োডাটাটি শতভাগ নির্ভুলভাবে লেখার চেষ্টা করুন । 

 

  • কোন চাকরির জন্য বায়োডাটা লেখার পূর্বে সেই চাকরির বিজ্ঞপ্তিটি বিস্তারিতভাবে পড়ে দেখুন । তারা চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে কি কি সম্পর্কে চাকরি প্রত্যাশীদের নিকট থেকে আশা করছে তা লক্ষ্য করুন ।  এবং সে অনুযায়ী অল্প শব্দে বায়োডাটাতে নিজেকে উপস্থাপন করুন ।

 

এই সতর্কতাগুলো অবলম্বন করে একটি বায়োডাটা তৈরি করা হলে তা নিঃসন্দেহে একটি কম্পিউটার দোকানদার বা একজন বন্ধুকে দিয়ে বায়োডাটা তৈরি করার থেকে শতগুণ ভালো মানের বায়োডাটা তৈরি করা সম্ভব হবে । 

 

এবং অন্যদের চেয়ে নিজের বায়োডাটাটি শতভাগ ইউনিক হয়ে উঠবে যা চাকরিটি পেতে বা নিজেকে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে আপনাকে বহুগুন এগিয়ে রাখবে ।

 

বায়োডাটার শিরোনাম – Biodata Headline

 

বায়োডাটা শিরোনাম বলতে বুঝায় মূলত গুরুত্বপূর্ণ লাইনগুলোকে  হেডিং করে দেওয়া ।  এবং এর পাশাপাশি হেডিংগুলোকে বোল্ড করা । 

 

বায়োডাটা লেখার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনার নামটিকে লিখবেন ।  এবং সে নামটিকে বোল্ড ও হেডিং করে দিতে হবে । তারপর নামের নিচে আপনার বর্তমান ঠিকানা – স্থায়ী ঠিকানা  লিখতে হবে ।  

 

এবং অবশ্যই যোগাযোগ করার জন্য একটি মোবাইল নাম্বারইমেইল ঠিকানা দিতে হবে ।

 

তাহলে উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে আপনার সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ করতে চাইলে তারা সহজেই যোগাযোগ করতে পারবে ।  তাই অবশ্যই নাম ,  ঠিকানা ও যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল ও ইমেইল সুন্দর করে লিখে দিবেন ।

 

পেশাগত লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য – Professional goals or objectives

 

পেশাগত লক্ষ্যটি  আপনার বায়োডাটার মধ্যে সংক্ষিপ্ত আকারে অবশ্যই মেনশন করে দিতে হবে ।   অবশ্যই বানান এবং ব্যাকরণ এর দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।

 

কোন ধরনের আজগুবি গল্প বায়োডাটার পেশাগত লক্ষ এই অংশে লেখা যাবে না । আপনি যে চাকরির জন্য আবেদন করবেন তার সম্পৃক্ত বা রিলেটেড  পেশাগত লক্ষ্য উল্লেখ করে দিতে হবে ।

 

আরো পড়ুন : গাড়ির পার্টসের ব্যবসার আইডিয়া ।

 

বিশেষ যোগ্যতা – Special Qualifications

 

যে চাকরিতে আবেদন করছেন সে চাকরি সম্পর্কিত কোন ধরনের বিশেষ যোগ্যতা যদি আপনার থাকে তা বায়োডাটার এই অংশে উল্লেখ করে দিতে পারেন । 

 

শিক্ষাগত যোগ্যতা – Educational qualification

 

বায়োডাটা লেখার নিয়ম এর মধ্যে অন্যতম একটি অংশ হলো শিক্ষাগত যোগ্যতা ।  নির্বাচকরা বেশিরভাগ সময় শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখেই চাকরিপ্রার্থীদের বিবেচনা করে থাকে ।  এবং আপনাকে অন্য প্রার্থীদের সাথে তুলনা করে থাকে । 

 

তাই অবশ্যই চেষ্টা করতে হবে সংক্ষিপ্ত আকারে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতাটি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার ।

 

বাংলায় শিক্ষাগত যোগ্যতা লেখার নিয়ম

 

শিক্ষাগত যোগ্যতাটি আপনি আপনার বায়োডাটাতে একটি টেবিল তৈরি করে উপস্থাপন করতে পারেন । আপনাদের সুবিধার্থে নিচে একটি শিক্ষাগত যোগ্যতা লেখার নিয়ম এর উদাহরণ দেওয়া হলো ।

 

শিক্ষাগত যোগ্যতা :

পরীক্ষার নাম বিভাগপাশের সনজিপিএবোর্ড
এস.এস.সিচট্টগ্রাম২০১৮৫.০০চট্টগ্রাম
এইচ.এস.সিচট্টগ্রাম২০২০৪.৫০চট্টগ্রাম
বিবিএচট্টগ্রাম২০২৫৩.১০চট্টগ্রাম

 

এভাবে টেবিল আকারে ঘর তৈরি করে আপনারা নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতাটি  প্রদর্শন করতে পারেন । এতে করে নির্বাচকদের কাছে আপনার বায়োডাটাটি অন্যদের তুলনায় সুন্দর ও আকর্ষণীয় হয়ে ফুটে ওঠবে ।

 

আশাকরি আপনারাও এখন থেকে বাংলায় শিক্ষাগত যোগ্যতা লেখার নিয়মটি সঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারবেন । 

 

প্রশিক্ষণ – Training

 

বিশ্ববিদ্যালয় থাকাকালীন যেসব প্রশিক্ষণ ও ট্রেনিংয়ে আপনি অংশগ্রহণ করেছিলেন বায়োডাটার এই প্রশিক্ষণ অংশে উল্লেখ করে দিন । অপ্রয়োজনীয়’ অতিরিক্ত কথা উল্লেখ না করে চাকরির পদের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে এমন প্রশিক্ষণ উল্লেখ করবেন ।   

 

প্রশিক্ষণের নাম এবং আয়োজকের তথ্য সংক্ষিপ্ত আকারে উল্লেখ করে দিতে পারেন ।

 

চাকরির অভিজ্ঞতা – job Experience

 

সাধারণত সদ্য উত্তীর্ণ হওয়া শিক্ষার্থীদের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকে না তবে যে পদের জন্য চাকরির আবেদন করতে ইচ্ছুক সে ধরণের কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে তা চাকরির অভিজ্ঞতা এই অংশে উল্লেখ করে দিন ।

 

আশা করি চাকরির অভিজ্ঞতা ও কাজের অভিজ্ঞতার মধ্যকার পার্থক্য কি সেটা আপনি বুঝতে পেরেছেন ।

 

আরো পড়ুন : ১০টি সেরা বিদেশি ব্যবসার আইডিয়া ।

 

ভাষাগত দক্ষতা – Language Skill

 

ভাষাগত দক্ষতা বর্তমানে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত ভূমিকা রাখে ।  আমাদের বাংলাদেশে সাধারণত বাংলা এবং ইংরেজি ভাষা জানা থাকলেই আপনি প্রায় সকল ধরনের সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে আবেদন করতে পারবেন । 

 

এছাড়াও ভাষা সংক্রান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকলে তা এই অংশে উল্লেখ করতে পারেন  যেমন : IELTS ও TOEFL । বাংলা এবং ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি আপনি যদি অন্য আর কোন ভাষা জেনে থাকেন তাও উল্লেখ করে দিতে পারেন । 

 

 

ব্যাক্তিগত তথ্য – Personal Information

 

আজকের শুরুতেই বলেছিলাম বায়োডাটাতে মূলত ব্যক্তিগত তথ্য সবচেয়ে বেশি উল্লেখ থাকে ।  

 

বায়োডাটার এই অংশে আপনি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন আপনার পিতা ও  মাতার নামজন্ম তারিখ , ধর্ম , বর্তমান ঠিকানা , স্থায়ী ঠিকানা , আপনার শখ  ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে এই অংশে বিবরণ করতে পারেন ।

 

তবে চেষ্টা করবেন সংক্ষিপ্ত আকারের মধ্যে অধিক তথ্য দেওয়ার । কারণ নির্বাচকরা আপনার বায়োডাটাটি কখনো সম্পূর্ণ পরে দেখবেনা ।  কিন্তু এর মানে এই নয় আপনি পর্যাপ্ত তথ্য না দিয়ে বায়োডাটা তৈরি করে ফেলবেন । 

 

ইংরেজিতে বায়োডাটা লেখার নিয়ম ২০২২

 

জীবন বৃত্তান্ত বা বায়োডাটা সাধারণত প্রয়োজন হয়ে থাকে বিয়ে ও চাকরির ক্ষেত্রে ।  আপনাদের বায়োডাটা তৈরি করা প্রয়োজন হলে যেন তা সহজেই করতে পারেন সেই কথা মাথায় রেখে আমরা আজকের বায়োডাটা লেখার নিয়ম আর্টিকেলটি বাংলায় লিখেছি ।

 

তবে আর্টিকেলটি বাংলায় লিখলেও প্রতিটি শিরোনামের পাশে আমরা ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেছি ।  বাংলা ও ইংরেজি বায়োডাটা লেখার নিয়ম সম্পূর্ণ একই । শুধুমাত্র ইংরেজিতে বায়োডাটা লেখার নিয়ম এর ক্ষেত্রে আপনাকে ভাষাটা ইংরেজিতে রাখতে হবে ।

 

বাকি সবকিছুই উপরে দেওয়া ফরমেটের মত ঠিক থাকবে । আপনি বায়োডাটা লেখার নিয়মটি বুঝে থাকলে যেকোনো ভাষায় আপনি বায়োডাটা তৈরি করতে পারবেন । এরপরও আপনাদের সুবিধার্থে একটি ইংরেজিতে বায়োডাটা লেখার নিয়ম এর পিডিএফ দেওয়া হল ।

 

চাকরির বায়োডাটা লেখার নিয়ম ২০২২

 

চাকরির ক্ষেত্রে আমাদের বাংলাদেশের বেশিরভাগ সময় সিভি লেখা হয়ে থাকে ।  আবার অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বায়োডাটার মাধ্যমেও চাকরিতে নিয়োগ করা হয় ।

 

তাই চাকরির বায়োডাটা লেখার নিয়ম নিয়ে আপনাকে অতিরিক্ত টেনশন করার দরকার নেই ।  উপরে বায়োডাটা লেখার নিয়মের যে ফরম্যাটটি আপনাদের সাথে এতক্ষণ পর্যন্ত আলোচনা করা হয়েছে সেটি অনুসরণ করেই আপনি চাকরির জন্য একটি আকর্ষণীয় বায়োডাটা তৈরি করে ফেলতে পারবেন ।

 

চাকরির বায়োডাটা লেখার ক্ষেত্রে সর্তকতা

 

আমাদের মধ্যে অনেকেই বায়োডাটা লেখার নিয়ম এর  সঠিক ফরমেট না জানার কারণে ভুল করে থাকি ।  আবার অনেকে ফরমেট অনুযায়ী লিখতে পারলেও কিছু কিছু ছোটখাটো ভুল করে ফেলেন ।  কিন্তু প্রতিযোগিতাপূর্ণ চাকরির বাজারে ছোটখাটো ভুলও আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতাটি প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে ।

 

তাই চাকরির বায়োডাটা লেখার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতাঃ অবশ্যই আপনাকে অবলম্বন করতে হবে ।  চলুন দেখে নেওয়া যাক চাকরির বায়োডাটা লেখার ক্ষেত্রের কিছু সতর্কতা ।

 

  • বায়োডাটার মধ্যে কখনো কোন ধরনের মিথ্যা তথ্য দেওয়া যাবে না ।
  • বায়োডাটা লেখার ক্ষেত্রে বানানে কোনোভাবেই ভুল থাকা যাবে না ।
  • ব্যাকরনে ভুল থাকা যাবে না ।
  • কঠিন শব্দ ব্যবহার না করে সহজ ও অল্প শব্দের মাধ্যমে বোঝা যায় এমন শব্দের মাধ্যমে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে ।

 

বায়োডাটা লেখার সময় উপরোক্ত বিষয়গুলো খুবই সতর্কতার সহিত অনুসরণ করতে হবে ।  এবং বায়োডাটাটি লেখা সম্পন্ন হয়ে গেলে তা কয়েকবার করে চেক করে দেখবেন ।

 

বিয়ের বায়োডাটা লেখার নিয়ম ২০২২

বিয়ের বায়োডাটা লেখার নিয়ম
বিয়ের বায়োডাটা লেখার নিয়ম

 

আমাদের বাংলাদেশের বায়োডাটার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় পাত্র – পাত্রী দেখা এবং বিবাহের সময়ে ।  আজকের এই অংশে আমরা জানব বিয়ের বায়োডাটা লেখার নিয়ম সম্পর্কে ।

 

আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চেয়েছেন কিভাবে বিয়ের বায়োডাটা লেখা হয় বা কিভাবে বিয়ের বায়োডাটা তৈরি করতে হয় তা সম্পর্কে। 

 

পাত্র – পাত্রী দেখার সময় একে অপরের ব্যক্তিগত নানান ধরনের তথ্য জানার প্রয়োজন হয় । সব কিছু যা সরাসরি মুখে বলা সম্ভব হয় নাহ তা বায়োডাটার মাধ্যমে সহজেই করা সম্ভব হয় । এছাড়াও লিখিত যেকোনো তথ্য শক্তিশালী তথ্য হিসাবে ও প্রমাণে কাজে আসে ।

 

তাই বিবাহের সময় বায়োডাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।  তাহলে চলুন কিভাবে বিয়ের বায়োডাটা ফরমেট তৈরি করতে হয় তা দেখে নেওয়া যাক ।

 

আরো পড়ুন : টি শার্ট প্রিন্টিং ব্যবসার আইডিয়া ।

 

বিয়ের বায়োডাটা ফরম্যাট – Marriage Biodata Format

 

বিয়ের মাধ্যমে আমাদের সমাজ একজন পুরুষ ও নারীকে বৈধভাবে একসঙ্গে থাকার ও সংসার করার অনুমতি প্রদান করে । একসময় ছেলেপক্ষ তাদের সকল তথ্য মেয়ে পক্ষকে এবং মেয়ে পক্ষ তাদের সকল তথ্য ছেলেপক্ষকে প্রদান করে থাকে একটি বিয়ের বায়োডাটা মাধ্যমে ।

 

বিয়ের বায়োডাটা ফরমেটকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয় যেমন : 

 

  •  পাত্রের বায়োডাটা ও
  •  পাত্রীর বায়োডাটা

 

তাই বিয়ের বায়োডাটা ফরমেট সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে হলে আমাদেরকে পাত্রের এবং পাত্রীর বায়োডাটা নমুনা অনুসরণ করতে হবে । এছাড়াও বুঝতে সমস্যা হলে এই ভিডিওটি দেখুন ।

 

পাত্রের বায়োডাটার নমুনা ২০২২

 

পাত্রীর বায়োডাটা লেখার ক্ষেত্রে যে ফরমেটটি অনুসরণ করবেন তা নিচে বুলেট পয়েন্ট আকারে দেওয়া হল : 

 

  • নাম : 
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : 
  • জন্ম তারিখ : 
  • উচ্চতা : 
  • ওজন :
  • রক্তের গ্রুপ : 
  • গায়ের রং :
  • পেশা : 
  •  ধর্ম :
  • পিতা  এবং মাতার নাম : 
  • ভাই – বোনের  সংখ্যা : 
  • ভাই বোনের নাম : 
  • বর্তমান ঠিকানা : 
  • স্থায়ী ঠিকানা /  গ্রামের বাড়ি : 
  • বড় চাচা : 
  • মেজো চাচা :
  • বড় মামা : 
  • মেজো মামা :
  • ছোটমামা : 
  • দাদা : 
  • নানা :
  • মোবাইল নাম্বার : 
  • ইমেইল অ্যাড্রেস :
  • সোশল মেডিয়া বা পোর্টফোলিও লিংক : 

 

উপরুক্ত বিষয়গুলো একজন পাত্রের বায়োডাটায় অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে ।  তাহলেই পাত্রের বায়োডাটাটি পরিপূর্ণতা পাবে ।

 

পাত্রীর বায়োডাটার নমুনা ২০২২

 

বিবাহের বায়োডাটা তৈরি করা ক্ষেত্রে একজন পাত্রীকে বায়োডাটার মধ্যে যেসব তথ্যগুলো উল্লেখ করতে হবে তা নিচে বুলেট পয়েন্ট আকারে ফরম্যাট করে দেওয়া হল :  

 

  • নাম : 
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা : 
  • উচ্চতা : 
  • ওজন :
  • রক্তের গ্রুপ : 
  • গায়ের রং : 
  • পেশা : 
  • ধর্ম :
  • পিতা ও মাতার নাম : 
  • বর্তমান ঠিকানা : 
  • স্থায়ী ঠিকানা /  গ্রামের বাড়ি : 
  • বড় চাচা :  
  • মেজ চাচা : 
  • বড় মামা : 
  • মেজ মামা : 
  • ছোটমামা : 
  • দাদা : 
  • নানা :
  • মোবাইল নাম্বার :
  • ইমেইল  অ্যাড্রেস : 
  • সোশ্যাল মিডিয়া / পোর্টফোলিও লিংক : 

 

আশা করি বন্ধুরা আপনারা এখন নিজেদের জন্য অথবা নিজেদের পরিচিতদের জন্য বিবাহের বায়োডাটা তৈরি করতে পারবেন । 

 

বিয়ের বায়োডাটা pdf – Marriage Biodata pdf

 

আপনাদের মধ্যে অনেকেই বিয়ের বায়োডাটা pdf  সম্পর্কেও জানতে চেয়েছেন ।   তাই আপনাদের সুবিধার্থে আমি একটি বিয়ের বায়োডাটা pdf  ফাইল আপনাদেরকে ফ্রীতে প্রদান করলাম ।

 

এই বিয়ের বায়োডাটা পিডিএফ ফাইলটি আপনারা নিজেদের মতো করে কাস্টোমাইজ করে নিতে পারবেন ।   

 

জীবন বৃত্তান্ত pdf file অথবা বায়োডাটা PDF

 

আমরা ইতিমধ্যে উপরে বায়োডাটা লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি ।  আশা করি আপনারা এখন বায়োডাটা তৈরি করা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন । তবে আপনাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা বায়োডাটা লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানেন কিন্তু চর্চা না থাকার কারণে বায়োডাটা PDF  ফাইলটির খোঁজ করে থাকেন ।

 

তাদের জন্য আজকের বায়োডাটা লেখার নিয়ম আর্টিকেলের এই অংশে একটি বায়োডাটা PDF  এবং ওয়ার্ড ফাইল যুক্ত করে দেয়া হলো । 

 

অনলাইনের মাধ্যমে বায়োডাটা তৈরি করার নিয়ম 

 

আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চেয়েছেন কিভাবে অনলাইনের সাহায্যে বায়োডাটা তৈরি করা যেতে পারে । আপনাদের সুবিধার্থে নিচে কয়েকটি বায়োডাটা তৈরি করার ওয়েবসাইটের এড্রেস দেওয়া হল ।  

 

এই ওয়েবসাইটগুলোর মাধ্যমে সহজেই আপনারা নিজেদের জন্য একটি প্রফেশনাল মানের বায়োডাটা তৈরি করে নিতে পারবেন । 

 

  1. Createmybiodata.com 
  2. Biodatamaker.com 
  3. Blank-biodata-form.pdffiller.com 

 

প্রশ্ন উত্তর পর্ব 

বায়ো ডাটা মানে কি ?

বায়ো ডাটা একটি ইংরেজী শব্দ যার বাংলা প্রতিশব্দ হচ্ছে জীবন বৃত্তান্ত । নিজের ব্যক্তিগত তথ্য , শিক্ষাগত যোগ্যতা , কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা তথ্য সমূহের মাধ্যমে যে ডকুমেন্টস তৈরি করা হয় তাকে বায়োডাটা বলা হয় ।

বায়োডাটা কিভাবে লিখতে হয় ?

ব্যক্তিগত তথ্য যেমন : নাম , জন্ম তারিখ, পিতা - মাতার নাম , পেশা , উচ্চতা , ওজন , ধর্ম , শিক্ষাগত যোগ্যতা , ভাষাগত দক্ষতা , বর্তমান ঠিকানা , স্থায়ী ঠিকানা ইত্যাদি ফরমেট করে সাজিয়ে একটি বায়োডাটা লিখতে হয় । বায়োডাটা লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন ।

 

পরিশেষে – Finally

 

আমাদের আজকের বায়োডাটা লেখার নিয়ম আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো এবং আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আপনার অনুভূতি ।

 

এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করে আমাদের অনুপ্রাণিত করতে পারেন ।  আপনাদের কমেন্ট এবং শেয়ার এর মাধ্যমে পরবর্তী আর্টিকেল লেখার অনুপ্রেরণা পেয়ে থাকি । 

 

এছাড়াও আমাদের ওয়েবসাইটে কমেন্ট করে প্রতি সপ্তাহে পুরষ্কার জেতার কুইজ চলছে ।  আপনিও চাইলে সে কুইজে অংশগ্রহণ করে জিতে নিতে পারেন আকর্ষণীয় পুরস্কার ।

By MD Imran hossan

২০১৯ সাল থেকে যুক্ত আছি এই টেকনোলজির দুনিয়ার সাথে । যদিও আমার পড়াশোনা ব্যবসা ও বাণিজ্য নিয়ে । ওয়েবসাইট ডেভেলপ করে দেওয়ার পাশাপাশি বর্তমানে লিখালিখি ও ব্লগিং সেক্টর এর সাথে যুক্ত আছি । নিজের জ্ঞান কে অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছি Goafta.com ওয়েবসাইট । স্বপ্ন দেখছি একটি বিশ্বস্ত ব্যবসায়িক ব্লগ গড়ে তোলার । এবং নিজে যতটুকু জানি তা সবার কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার , তাতে যদি কারো শস্য পরিমাণও উপকার হয় তাতেই আমার প্রশান্তি |

3 thoughts on “বিয়ের ইংরেজিতে বায়োডাটা লেখার নিয়ম – Best biodata format 2023”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *