শিল্পে উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত ভোগকারী বা ব্যবহারকারীদের নিকট প্রেরনের ক্ষেত্রে সম্পাদিত কার্য সমষ্টিকে বাণিজ্য বলে। বাণিজ্য হল ব্যবসায়ের বন্টনকারী শাখা। অর্থাৎ ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে শিল্প উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত ভোক্তা বা ব্যবহারকারীদের নিকট বন্টন করাই হলো বাণিজ্যের কাজ। এক্ষেত্রে প্রাথমিক শিল্পে উৎপাদিত কাঁচামাল মাধ্যমিক শিল্পে এবং মাধ্যমিক শিল্পী উৎপাদিত পণ্য প্রকৃত ভোগকারী বা ব্যবহারকারীদের নিকট বাণিজ্যের মাধ্যমে বন্টিত হয়। এক্ষেত্রে প্রথমেই মালিকানা হস্তান্তরের প্রশ্ন আসে। ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে এরূপ মালিকানা হস্তান্ত হয়ে তা একপর্যায়ে বুকারি বা ব্যবহারকারী বরাবর পৌঁছে। এরূপ ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সেবা কার্য যেমন: ব্যাংকিং, বীমা, পরিবহন, গুদামজাতকরণ ও বিজ্ঞাপন সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ে। তাই পণ্য বন্টনের ক্ষেত্রে উদ্ভূত বাধা সমূহ দূরীকরণ অর্থে ক্রয় বিক্রয় ও এর সহায়ক বিভিন্ন কাজের সমষ্টিকেই বাণিজ্য বলা হয়ে থাকে।
বাণিজ্যের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি তা নিম্নরপ:
শিল্পে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী পরবর্তী শিল্পে বা প্রকৃত প্রচারের ক্ষেত্রে যে সকল কাজ সম্পাদিত হয় তার সমষ্টিকে বাণিজ্য বলে। নিম্মে এর বৈশিষ্ট্যসমূহ গুলো আলোচনা করা হলো:
- বন্টনকারী শাখা: বাণিজ্য ব্যবসায়ের বন্টনকারী শাখা হিসেবে বিবেচিত। ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে শিল্প পণ্য উৎপাদন করে উপকারী বা ব্যবহারকারীদের জন্য। শিল্প এ কাজে বাণিজ্যিক কর্মকান্ড বা ক্রয় বিক্রয় ও এর সহায়ক কার্যাবলীর উপর নির্ভর করে। ইউনিলিভার তাদের কারখানায় প্রসাধনী সামগ্রী উৎপাদন করে। দেশের সকল অঞ্চলের গ্রাহকদের নিকট এ সকল পণ্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক তাদের মুখ্য অবলম্বন। আবার প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও উপকরণ সংগ্রহ তারা বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল।
- বিকেন্দ্রীভূ কাজ:শিল্প থেকে পরবর্তী ব্যবহারকারীদের নিকটপূর্ণ পৌঁছাতে বাণিজ্যিক কর্মকান্ড শহরের কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। শিল্পের কাজ যেভাবে শিল্প কেন্দ্রে কেন্দ্রীভূত তাকে এক্ষেত্রে তার সুযোগ নেই। বিআরবি তাদের কুষ্টিয়ায় প্রতিষ্ঠিত শিল্পে বিভিন্ন কেবল উৎপাদন করছে। কিন্তু তা বিক্রয় হচ্ছে দেশের সর্বত্র এর সাথে বিভিন্ন ছোট বড় নানান ব্যবসায়ী,ডিলার, প্রতিনিধি ইত্যাদি যুক্ত। নানান সহায়ক কর্মকাণ্ড এর সাথে সম্পর্কিত।
- ব্যক্তিগত ও সহায়ক উপযোগ সৃষ্টি: বাণিজ্য মূলত ব্যক্তিগত বা সত্য গত উপযোগ সৃষ্টি করে। অর্থাৎ উৎপাদনকারী ও উপকারী ভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় উৎপাদনকারী থেকে তা ভোগকারীর মালিকানায় যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে এজন্য প্রয়োজনে একাধিকবার ক্রয়-বিক্রয় প্রয়োজন দেখা দেয় এর সাথে বিভিন্ন সহায়ক যেমন:অর্থগত, ঝুঁকিগত, স্থানগত ,কাল কত জ্ঞানগত উপযোগ সৃষ্টি আবশ্যক হয় যা সৃষ্টি বা জোগাড় করে বাণিজ্য পণ্য বন্টন সহজতর করে।
- চলতি মূলধনের আধিক্য: বাণিজ্যের প্রধান অঙ্গ হলো ক্রয় বিক্রয়। আর এই কাজের জন্য চলতি মূলধনের বেশি প্রয়োজন পড়ে।শিল্প মালিককে যেভাবে ভূমি দালান কোটা যন্ত্রপাতি ইত্যাদির পেছনে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হয় একজন ট্রেডার্সকে তা করতে হয় না দোকান বা শোরুম জোগাড় ও প্রয়োজনের ক্ষেত্রে গুদামের ব্যবস্থা এক্ষেত্রে মূল স্থায়ী খরচ। সে যে মাল ক্রয় করে সময়ের ব্যবধান দাবি করে আবার নগদত্তে ফিরে আসে সে যতই ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারে ততই তার লাভ তাই এক্ষেত্রে তার বিনিয়োগে চলতি মূলধন মুখ্য।
সহজে বিনিয়োগ স্থানান্তরের সুযোগ: বাণিজ্যিক কর্মকান্ডের ক্ষেত্রে প্রয়োজনের স্থানান্তরের সুযোগের একটা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। দোকান বিক্রয় হবে ব্যবসায়ী পরিবর্তন মূল্য রাশ ইত্যাদি ঘোষণা এর উদাহরণ। শিল্পে খারাপ করলে সেখান থেকে যথেষ্ট মূল্য নিয়ে ফিরে আসার সুযোগ খুবই কম থাকে। কিন্তু বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনেকাংশেই সেই বিনিয়োগ ফিরিয়ে আনা সম্ভব এজন্যই অনেকে শিল্প বিনিয়োগে নিরুসাহিত হয়।
আরো পড়ুন,,,,,,
মানব সম্পদ উন্নয়নে ব্যবস্থাপনা কিভাবে ভূমিকা রাখে?
এফ ডব্লিউ টেইলরকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয় কেন? ব্যবস্থাপনায় নীতি বলতে কি বুঝায়?
নিয়মিত পড়াশুনার সম্পর্কিত আপডেট পেতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ ।