সমগ্র বিশ্বে সেবাখাত এখন ব্যবসায় জগতে সবচেয়ে এগিয়ে । কৃষিনির্ভর তৃতীয় বিশ্বের দেশ বাদ দিয়ে উন্নত সকল দেশে সবচেয়ে বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র হলো সেবা খাত। মানুষের আয় যতই বাড়ছে ততই মানুষ বিভিন্ন সেবার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। নতুন নতুন সেবাখাত এসে ব্যবসায়ের সাথে যোগ হচ্ছে । তাই বৈচিত্র্যধর্মী সেবাখাতকে শ্রেণিবিন্যাস করা কষ্টসাধ্য । শিল্প ও বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট সেবা ব্যবসায়ের অন্তর্ভুক্ত । ব্যাংক বিমা, পরিবহণ, গুদামজাতকরণ, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি এরূপ সেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান । একে বাদ দিলেও বিভিন্ন ধরনের প্রত্যক্ষ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আমরা সমাজে দেখতে পায়।
নিম্নে এ ধরনের কিছু প্রত্যক্ষ সেবাখাত সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
১. শিক্ষা সেবা (Education services) : শিক্ষা সেবা যে কেনো দেশেই একটা বড় প্রত্যক্ষ সেবা খাত প্রতিটা গ্রাম ও মহল্লায় এখন কেজি স্কুল, কোচিং সেন্টার ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এছাড়া স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা সেবা দিয়ে চলেছে । বিদেশে পড়তে যেতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান IELTS, TOEFL, GMAT ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট বিষয় পড়াচ্ছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজসমূহে ভর্তির জন্য বিভিন্ন কোচিং সেন্টার শিক্ষা সেবাখাতের এখন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । পত্র-পত্রিকায় তাদের বিজ্ঞাপন দেখলেই এরূপ ব্যবসায় সম্পর্কে ধারণা লাভ সম্ভব।
২. স্বাস্থ্য সেবা (Healthcare services) : শিক্ষার ন্যায় স্বাস্থ্য খাতও সেবাখাতের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শিল্প খাতের এবং ঔষধ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাণিজ্য খাতের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু ডায়াগনোস্টিক সেন্টার, প্যাথলোজিক্যাল সেন্টার, ক্লিনিক, হাসপাতাল ইত্যাদি প্রত্যক্ষ সেবাদানকার প্রতিষ্ঠান। ঢাকা শহরে বড় বড় নাম করা সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ছাড়াও অসংখ ডায়াগনোস্টিক সেন্টার এবং ক্লিনিক পরিচালিত হচ্ছে। জেলা সদরে এখন এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের ছড়াছড়ি; যা মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে চলছে ।
৩. পেশাগত সেবা (Professional services) : বিভিন্ন পেশাজীবী ব্যক্তিবর্গ যে সকল সেবা সরবরাহ (Provide) করে তাকে পেশাগত সেবা বলে । অডিট ফার্ম, এটর্নী ফার্ম, ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম, ডাক্তার উকিল, পরামর্শক ইত্যাদি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত সেবা-এর মধ্যে পড়ে । ব্যবসায় পরিচালনায় যেমনি এ ধরনের সেবার প্রয়োজন পড়ে তেমনি সাধারণ মানুষকেও বিভিন্ন প্রয়োজনে এ ধরনের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা ক্রয় করতে হয় ।
৪. ভোক্তা সেবা (Consumer services) : ভোক্তা সাধারণ সরাসরি যে সকল সেবা গ্রহণ করে তাকে ভোক্তা সেবা বলে । যানবাহন, হোটেল, বিনোদনধর্মী প্রতিষ্ঠান, পর্যটন, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনে কোম্পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও বিমা প্রতিষ্ঠান, ক্লিনার ও নিরাপত্তা প্রহর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, সেলুন, লন্ড্রী, কার্পেন্টার, মেরামতকর্মী, ইলেকট্রিশিয়ান ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রদত্ত সেবা এর অন্তর্ভুক্ত ।এক্ষেত্রে উল্লেখ্য ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে সেবা প্রদান ছাড়াও অব্যবসায়ী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে সেবা প্রদান করে থাকে।
আরো পড়ুন,,,,,,
মানব সম্পদ উন্নয়নে ব্যবস্থাপনা কিভাবে ভূমিকা রাখে?
এফ ডব্লিউ টেইলরকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয় কেন? ব্যবস্থাপনায় নীতি বলতে কি বুঝায়?
নিয়মিত পড়াশুনার সম্পর্কিত আপডেট পেতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ ।