পেটেন্ট কি - পেটেন্টের ধারণা

পেটেন্ট কি ?

পটেন্ট হলো নতুন আবিষ্কৃত ও নিবন্ধিত পণ্য বা বস্তুর ওপর আবিষ্কারকের এমন একচ্ছত্র অধিকার যার বলে তিনি এটি তৈরি, উন্নয়ন, ব্যবহার ও বিক্রয়ের একক অধিকার ভোগ করেন। এর বলে আবিষ্কারক অন্যকে লাইন্সেও প্রদান করতে পারেন । 

কোনো আবিষ্কারকে প্যাটেন্ট সনদ পাওয়ার উপযোগী হতে হলে তাতে নিম্নের চারটি উপাদান থাকা আবশ্যক :

১. আবিষ্কারটি অবশ্যই নতুন হতে হবে অর্থাৎ এটি পূর্বে আবিষ্কৃত বা পূর্বে আবিষ্কৃত কোনো বিষয়ের অংশ হতে পারবে না ।

২. এরূপ নতুন উদ্ভাবিত বিষয়টি অবশ্যই আবিষ্কারযোগ্য (Inventive) ও অকল্পনীয় সৃজনশীল ধারণার ফল হতে হবে এবং ধারণাগতভাবে তা একক ও অনন্য হবে ।

৩. আবিষ্কারের অবশ্যই শিল্প উপযোগিতা থাকতে হবে অর্থাৎ একে উৎপাদনের কাজে ব্যবহার এবং বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো যাবে এবং

৪. এটা দেশের প্রচলিত কোনো আইন দ্বারা নিষিদ্ধ বা এর ব্যবহার আইন দ্বারা নিষিদ্ধ এমন কোনো ধরনের আবিষ্কারের সাথে সম্পর্কযুক্ত হতে পারবে না ।

প্যাটেন্টের মূল উদ্দেশ্য হলো নতুন প্রযুক্তি ও শিল্পের উন্নয়নে আবিষ্কারককে উৎসাহ প্রদান করা । এর ফলে আধিষ্কারক তার আবিষ্কারের সুফল ভোগের বিষয়ে যেমনি নিরাপত্তা বোধ করে তেমনি এটা দেখে অন্যরাও নতুন আরিষ্কারে মনোনিবেশ করতে উৎসাহিত হয়। 

আইনানুযায়ী প্যাটেন্ট নবায়নযোগ্য নয় । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিধান অনুযায়ী প্যান্টেন্ট সনদ ১৭ বছর পর্যন্ত বহাল থাকে। (বাংলাদেশে ১৯১১ সালের প্যাটেন্ট ও ডিজাইন আইন প্রচলিত রয়েছে )। এর বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে প্যাটেন্ট সনদের সময়কাল ১৬ বৎসর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। উল্লেখ্য, ২০০১ সালে সরকার নতুন একটা প্যাটেন্ট ও ডিজাইন আইনের খসড়া প্রস্তুত করলেও অদ্যাবধি পার্লামেন্টে তা পাশ হয়নি।

 

প্যাটেন্ট-এর ধারণা – Concept of Patent

(আজকের শিল্পজগত যার আবিষ্কারের কাছে ঋণী তিনি হলেন শিল্প বিপ্লবের অন্যতম পথিকৃত স্কটিশ ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জেমস ওয়াট (James Wall) (১৭৩৬-১৮১৯) ) তিনি প্রখ্যাত Glasgow বিশ্ববিদ্যালয় যন্ত্রপাতি উৎপাদক হিসেবে কাজ করার সময় দেখতে পান যে, যে সকল ইঞ্জিন ডিজাইন ব্যবহার হচ্ছে তাতে এনার্জির যথেষ্ট অপচয় ঘটছে এবং সিলিন্ডারকে বারে বারে ঠাণ্ডা করতে যেয়ে সময়েরও অপচয় হচ্ছে । 

তিনি এমন একটা নতুন ডিজাইন উপস্থাপন করেন যেখানে আলাদা কনডেন্সার (Condenser) ব্যবহারের নির্দেশ করা হয় এবং ঘুর্ণায়মান যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। এতে সময় ও শক্তির অপচয় ব্যাপক হ্রাস পায় । এতে নতুন ইঞ্জিন আবিষ্কারের ধারণা তার মধ্যে শক্তিশালী হয় । 

অতঃপর তিনি তার আবিষ্কারকে বাণিজ্যিকভাবে সফল করার জন্য বিত্তবান ব্যক্তি মি. ম্যাথিউ বোল্টনকে পার্টনার করে সোহো ফাউথ্রি নামে গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এখানেই গবেষণার মধ্য দিয়ে বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কৃত হয়। এরপর এটি পেটেন্টের রাজকীয় সনদ লাভ করে ।

এরপর অনেকেই এই আবিষ্কারকে নকল করে এগুতে চেয়েছে কিন্তু প্রতিটা মামলায় রায় এসেছে জো ওয়াটসের পক্ষে। প্যাটেন্ট নামক এই আইনগত সুরক্ষা পরবর্তীতে হাজারো আবিষ্কারে মানুষকে উৎসাহ জুগিয়েছে । আর এভাবেই ঘটেছে শিল্প বিপ্লব ।

জেমস ওয়াট
জেমস ওয়াট

চিত্র : জেমস ওয়াট কর্তৃক নির্মিত বাষ্পীয় ইঞ্জিনের মডেল

 

আরো পড়ুন :

➡️সমবায় সমিতির প্রকারভেদ ।

➡️সমবায় সমিতির বৈশিষ্ট্য ।

➡️সমবায় সমিতি কি ?

➡️সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির গঠনতন্ত্র ।

নিয়মিত এডুকেশন সম্পর্কিত তথ্য পেতে যুক্ত থাকুন আমাদের ফেইসবুক পেইজের সাথে ।

By MD Imran hossan

২০১৯ সাল থেকে যুক্ত আছি এই টেকনোলজির দুনিয়ার সাথে । যদিও আমার পড়াশোনা ব্যবসা ও বাণিজ্য নিয়ে । ওয়েবসাইট ডেভেলপ করে দেওয়ার পাশাপাশি বর্তমানে লিখালিখি ও ব্লগিং সেক্টর এর সাথে যুক্ত আছি । নিজের জ্ঞান কে অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছি Goafta.com ওয়েবসাইট । স্বপ্ন দেখছি একটি বিশ্বস্ত ব্যবসায়িক ব্লগ গড়ে তোলার । এবং নিজে যতটুকু জানি তা সবার কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার , তাতে যদি কারো শস্য পরিমাণও উপকার হয় তাতেই আমার প্রশান্তি |

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *