পণ্য বিনিময় সহায়ক কার্যাবলি কি? 

অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। এ সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য সম্পাদিত কার্যাবলিকে পণ্য বিনিময় সহায়ক কার্যাবলি বলে । বাণিজ্যের আওতাধীন এ সকল কার্যকে নিম্নোক্ত ভাগে ভাগ করা যায়।

■ ব্যাংক (Bank) : আমানত সংগ্রহ, ঋণদান ও আর্থিক সেবা সুবিধা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে ব্যাংক বলে । বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অর্থের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য । এ ছাড়াও আর্থিক নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু লেনদেনের ওপর ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন নির্ভর করে । ব্যবসায় চালাতে যেয়ে অর্থসংস্থান (ঋণ গ্রহণ), অর্থের নিরাপত্তা বিধান ও আর্থিক লেনদেনকে সহজতর করার প্রয়োজন দেখা দেয়। যা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিবন্ধকতা হিসেবে গণ্য । এই প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য ব্যাংক দায়িত্ব পালন করে । বর্তমানকালে বৈদেশিক ব্যবসায় বিশেষভাবে ব্যাংক নির্ভর ।

■ বিমা (Insurance) : মানুষের জীবন ও সম্পত্তিকে ঘিরে যে ঝুঁকি বিদ্যমান তার বিপক্ষে আর্থিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে বিমা বলে । বাণিজ্য তথা ব্যবসায়ের সাথে ঝুঁকি ওতপ্রোতভাবে জড়িত । এই ঝুঁকি ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছন্দে ব্যবসায় পরিচালনায় যেমনি বিঘ্নের সৃষ্টি করে তেমনি অনেক সময় মারাত্মকভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন করতে পারে। ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট ক্ষতির এই সম্ভাবনা ও অনিশ্চয়তাকে ঝুঁকিগত প্রতিবন্ধকতা বলে । এই ঝুঁকিগত বাধা দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের বিমা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে ।

পরিবহণ (Transportation) : উৎপাদনস্থল থেকে ভোক্তার কাছে পণ্য প্রেরণে স্থানগত উপযোগ সৃষ্টির কাজকেই পরিবহণ বলে । উৎপাদনস্থল ও ভোগ বা ব্যবহার স্থানের মধ্যকার পার্থক্যহেতু বাণিজ্যের স্থানগত বাধার সৃষ্টি হয় । এই বাধা দূর করার জন্য উৎপাদিত সামগ্রী মধ্যস্থ ব্যবসায়ীর হাত ঘুরে প্রকৃত ভোগকারীর নিকট পৌঁছানোর জন্য জলে, স্থলে ও আকাশ পথে বিভিন্ন ধরনের পরিবহণ প্রতিষ্ঠান কাজ

করছে।

■ গুদামজাতকরণ (Warehousing) : উৎপাদন ও ভোগের মধ্যবর্তী সময়ে বিনষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য ব্যবসায়ীগণ পণ্য সংরক্ষণের যে ব্যবস্থা গড়ে তোলে তাকে গুদামজাতকরণ বলে । পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের পর হতে ভোগের সময় পর্যন্ত তা সংরক্ষণের প্রয়োজনে বাণিজ্যের কালগত বা সময়গত বাধার সৃষ্টি হয় । এ কারণে বিভিন্ন পর্যায়ে পণ্য সামগ্রী সংরক্ষণের প্রয়োজন পড়ে । পণ্যের ভিন্নতা হেতু সংরক্ষণ সুবিধার ক্ষেত্রে ভিন্নতা লক্ষ করা যায় । গুদামজাতকরণের মাধ্যমে এই প্রতিবন্ধকতা দূরীভূত হয়।

বাজারজাতকরণ প্রসার (Marketing promotion) : পণ্য, সেবা বা ব্রান্ড সম্পর্কে সম্ভাব্য গ্রাহকদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি করে বিক্রয় বৃদ্ধির প্রয়াসকেই বাজারজাতকরণ প্রসার বলে । পণ্য উৎপাদন বা সংগ্রহ করা হলেই ক্রেতা বা ভোক্তারা তা জানবে ও ক্রয় করবে এমন নয় । এই না জানার বিষয়টি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে জ্ঞানগত বাধা হিসেবে গণ্য। এজন্য পণ্য সামগ্রী সম্পর্কে তাদের জানানো ও উৎসাহ সৃষ্টির প্রয়োজন পড়ে । এ জন্য বিভিন্ন বাজারজাতকরণ প্রসার কৌশল; যেমন-বিজ্ঞাপন, প্রচার, বিক্রয় প্রসার ইত্যাদির সাহায্য ব্যবসায়ীদের নিতে হয় । যে সকল কাজ বাণিজ্যের আওতাধীন ।

উপসংহারে বলা যায়, বাণিজ্য আজকের দিনে এতটাই বিস্তৃত এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ যে, এর আওতাকে স্বল্প পরিসরে ব্যাখ্যা করা কষ্টসাধ্য । কারণ এর প্রতিটা দিকের কার্যআওতা আবার ব্যাপক বিস্তৃত । মানুষের প্রয়োজনে এর আওতা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে তা নির্দ্বিধায় বলা যায় ।

আরো পড়ুন,,,,,,

ব্যবস্থাপনার চক্র কি?

মানব সম্পদ উন্নয়নে ব্যবস্থাপনা কিভাবে ভূমিকা রাখে?

এফ ডব্লিউ টেইলরকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয় কেন? ব্যবস্থাপনায় নীতি বলতে কি বুঝায়? 

নিয়মিত পড়াশুনার সম্পর্কিত আপডেট পেতে ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেইজ 

 

By Saifur Rahman Arif

আমি মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান আরিফ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র । ব্যবস্থাপনার একজন ছাত্র হলেও বর্তমানে কিছুদিন যাবৎ আমি অনলাইনে লিখালিখি কাজের সাথে যুক্ত রয়েছি । এবং Goafta.com সাইটটির একজন আর্টিকেল রাইটার হিসাবে কাজ করছি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *