আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা ,আশা করি সবাই ভাল আছেন । বরাবরের মত আজকেও আমরা আপনাদের সাথে বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে লাভজনক এবং জনপ্রিয় ডিলারশিপ ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আলোচনা করব।
বর্তমানে ডিলারশিপ ব্যবসা আমাদের বাংলাদেশে অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে । আমরা প্রায় সময় পত্র-পত্রিকার মধ্যে দেখতে পাই যে ডিলার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ।
অনেকেই এই ধরনের বিজ্ঞপ্তিগুলো দেখে বুঝতে পারে না যে কীভাবে ডিলারশিপ ব্যবসা মতো এই অত্যন্ত লাভজনক এই ব্যবসাটি শুরু করবেন।
মজার বিষয় হলো ডিলারশিপ ব্যবসা অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় তেমন ঝুঁকির সম্ভাবনা নেই। কেননা এখানে আপনার পণ্য সামগ্রীগুলোকে মার্কেটিং করার প্রয়োজন হচ্ছে না।
অনেক সময় দেখা যায় ক্ষেত্র বিশেষে পণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে পণ্যের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও তার সম্পূর্ণ দায়ভার আপনি যে কোম্পানির ডিলার নিবেন সেই কোম্পানি বহন করবে।
তাই অত্যন্ত লাভজনক এই ব্যবসাটি নিয়ে আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব।
কিভাবে আপনি ডিলারশিপ বিজনেস শুরু করবেন? ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনার কি ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন হবে ? এবং ডিলারশিপ বিজনেস শুরু করতে কত টাকা মূলধনের প্রয়োজন হবে ইত্যাদি বিস্তারিত খুঁটিনাটি তুলে ধরার চেষ্টা করব।
তাই আপনি যদি ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ এবং মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।
আশা করা যায় আমাদের আজকের এই ডিলারশিপ ব্যবসার আর্টিকেলটি পড়ে আপনি ডিলারশিপ বিজনেস সম্বন্ধে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন । তাহলে বন্ধুরা চলুন শুরু করা যাক আমাদের আজকের মূল আলোচনা।
ডিলারশিপ ব্যবসা বলতে কী বোঝায়?
ডিলারশিপ ব্যবসা হচ্ছে কোন একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠানের একটা নির্দিষ্ট এলাকায় বা এরিয়াতে একজন প্রতিনিধি বা এজেন্ট হিসেবে সেখানে ব্যবসা করা । অর্থাৎ কোন একটি উৎপাদনকারী কোম্পানির পণ্য সামগ্রীগুলো পাইকারি ও খুচরা কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকা বা এরিয়াতে বিক্রি ও বিপনন করা।
আপনি কোন কোম্পানির ডিলারশিপ নেওয়ার মানে হল আপনাকে সেই নির্দিষ্ট এলাকায় বা এরিয়াতে কোম্পানির পণ্য দ্রব্যগুলি বিপণন ও বন্টন সহ যাবতীয় ক্রয়-বিক্রয় কাজের দায়িত্ব পালন করতে হবে। আর এখানে যে বা যারা এই দায়িত্বটি পালন করে থাকে তাদেরকে মূলত বলা হয় ডিলার।
আমরা শুরুতেই আপনাদের বলেছি যে এই ডিলারশিপ বিজনেসটি অন্যান্য ব্যবসার চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু কম ঝুঁকিপূর্ণ হলেও এই ব্যবসায় লাভের পরিমাণ অনেক বেশি।
তাছাড়া এই ডিলারশিপ ব্যবসাটি শুরু করতে হলে আপনার প্রয়োজন হবে সঠিক মার্কেটিং প্ল্যান , আপনার উপস্থিত বুদ্ধির দক্ষতা, এবং বাজার বিশ্লেষণ করা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতার উপর।
ডিলারশিপ ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনার লাভের কোন বা আয়ের কোন সীমাবদ্ধতা নেই। আপনি যত বেশি মাল সেল বা বিক্রি করতে পারবেন তত বেশি মুনাফা অর্জন করতে পারবেন ডিলারশিপ বিজনেসথেকে । এখানে নির্দিষ্ট কোন লাভের বা নির্দিষ্ট কোন বেতনের হিসাব নেই।
একজন ব্যক্তি শুধুমাত্র একটি কোম্পানি থেকে ডিলার নিতে পারবে এমন কোন শর্ত নেই । একজন ব্যক্তি চাইলে একাধিক কোম্পানি থেকে ডিলারশিপ নিয়েও ব্যবসা শুরু করতে পারবে।
ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে কি কি প্রয়োজন?
যদি আপনি কোন কোম্পানি থেকে ডিলারশিপ নিতে চান তাহলে আপনাকে এখানে কিছু শর্ত সাপেক্ষে চলতে হবে। প্রত্যেকটা ডিলেরশিপ কোম্পানির কিছু নির্দিষ্ট শর্ত রয়েছে ।
তবে বিশেষ কিছু শর্ত আপনাদের সব কোম্পানির ডিলারশিপ নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন সেগুলো নিম্নরূপ:
১/আপনার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন হবে ।
২/ আপনার নিজের একটি এজেন্সি বা ফার্ম থাকতে হবে ।
৩/আপনি যে কোম্পানির প্রতিষ্ঠান থেকে ডিলেরশিপ নিবেন তার সাথে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে ।
৪/ আপনার ব্যবসার জন্য একটি অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হবে ।
অফিস প্রোফাইল ডিলারশিপ ব্যবসার জন্য
উপরোক্ত বিষয়গুলো যদি আপনার থাকে তাহলে অফিস প্রোফাইল ডিলারশিপ এর জন্য আপনার আরো কিছু কাজ করতে হবে।
১/ আপনার অফিস কোথায় তা অফিস প্রোফাইলে যুক্ত করতে হবে ।
২/ আপনার অফিসে গোডাউন রয়েছে কিনা এবং যদি থাকে তাহলে গোডাউনের সাইজ কত বড় তার উল্লেখ করতে হবে ।
৩/ আপনার অফিসে কতজন কর্মজীবী রয়েছে ।
৪/ আপনি কোম্পানির পণ্য সামগ্রী গুলি কোন এরিয়াতে বিক্রি করতে চান তা সতর্কভাবে উল্লেখ করতে হবে।
এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো দিয়ে আপনার অফিসের জন্য একটি প্রোফাইল তৈরি করতে হবে এবং তা যে কোম্পানি থেকে আপনি ডিলার নিতে আগ্রহী সে কোম্পানির নিকট পাঠাতে হবে।
ডিলারশিপ ব্যবসার চুক্তিপত্র নমুনা ২০২২
ডিলারশিপ ব্যবসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো চুক্তিপত্র। তাই এখানে আপনাকে কোম্পানির সাথে একটি চুক্তিপত্র করতে হবে । এবং সেই চুক্তিপত্রে আপনাকে সম্মতি জানিয়ে স্বাক্ষর করতে হবে।
সেক্ষেত্রে চুক্তিপত্র টির সুযোগ সুবিধা গুলো ভালোভাবে বুঝে শুনে পড়ে যাচাই-বাছাই করার পর স্বাক্ষর করুন। এবং সর্তকতা অবলম্বন করে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন।
ডিলারশিপ ব্যবসার চুক্তিপত্রে যেসব বিষয় থাকবে
ডিলারশিপ ব্যবসায় চুক্তি পত্রের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হলো:
১/ আপনি কোম্পানি থেকে কি ধরনের পণ্য নিতে আগ্রহী সেটা উল্লেখ করতে হবে । এবং
২/ আপনি কি পরিমাণ পণ্য সামগ্রী নিতে চান তা উল্লেখ করতে হবে ।
৩/ এবং সেই কোম্পানি আপনাকে কি পরিমাণ কমিশন দিবে সেটা উল্লেখ থাকতে হবে ।
৪/ কোন ধরনের ট্রান্সপোর্ট বাস – ট্রাক দিয়ে মালামালগুলো কোম্পানি আপনার গোডাউনে পাঠাবে তা উল্লেখ থাকতে হবে।
যদি আপনার এই সকল রিকোয়ারমেন্টগুলো পছন্দ হয় তাহলে আপনি চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করবেন।
ডিলারশিপ ব্যবসায় চুক্তি করার সময় যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে :
ডিলারশিপ ব্যবসাযর চুক্তি হলো মূল ভিত্তি। তাই আপনাকে ডিলারশিপ বিজনেস শুরু করার আগে চুক্তিপত্রে সতর্কতার সহিত সববিষয় উল্লেখ রাখতে হবে। এবং
চুক্তিপত্র করার সময় যেসব বিষয় গুরুত্বসহকারে মাথায় রাখা উচিত সেগুলো হলো:
১/ চুক্তি করার আগে আপনি যে কোম্পানি থেকে ডিলারশিপ নিতে চান সে কোম্পানির অফিসে ঘুরে আসুন । তাদের উৎপাদন করার স্থানগুলো পরিদর্শন করে আসুন সম্ভব ফলে তাদের অন্যান্য ডিলারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করুন।
সেক্ষেত্রে আপনি সে কোম্পানির সম্পর্কে ভালো একটা ধারণা পাবেন।
২/ কোম্পানি আপনার নিকট পণ্য সামগ্রীগুলো কিভাবে পাঠাবে তা নিশ্চিত হয়ে নিন ।
৩/ মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের ক্ষেত্রে কিরকম নিয়ম-কানুন রয়েছে এবং পণ্যের লোকসান বা ক্ষয়ক্ষতি কে বহন করবে তা নিশ্চিত হয়ে নিন ।
৪/ কোম্পানি কি আপনাকে এস আর বা ( সেলসম্যান ) নিয়োগ করবে? নাকি এস আর বা সেলসম্যান আপনাকেই নিয়োগ করতে হবে সে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নিন।
৫/ ডিলারশিপ ব্যবসার চুক্তিটি বাতিল করার সকল নিয়ম কারণগুলো সঠিকভাবে জেনে নিন।
ডিলারশিপ ব্যবসায় মূলধন কেমন প্রয়োজন হবে?
আমরা জানি যে কোন ব্যবসা শুরু করতে হলে প্রয়োজন হয় সর্বপ্রথম মূলধনের। অন্যান্য ব্যবসার মতো ডিলারশিপ ব্যবসায়ও মূলধন বা পুজির প্রয়োজন পড়ে।
তবে এই ব্যবসায়ে মূলধন বা বিনিয়োগের ধরণটা একটু ভিন্ন রকম। ডিলারশিপ ব্যবসায় আপনি দুভাবে ইনভেস্ট করতে পারবেন । যেমন: ১. সিকিউরিটি মানি ইনভেস্ট ও ২. প্রোডাক্ট এর উপর বিনিয়োগ।
সিকিউরিটি মানি ইনভেস্ট হলো :
কিছু টাকা ডিপোজিট রাখা সিকিউরিটি হিসেবে । এই টাকাটা কোম্পানি একেবারে নিয়ে নেবেন না । আপনার সাথে কোম্পানীর চুক্তি শেষ হলে তারা আপনাকে এই টাকাটি আবার ব্যাক করবে বা ফিরিয়ে দিবে।
কোম্পানিভেদে এই সিকিউরিটি মানি ইনভেস্টমেন্টের পরিমাণ ভিন্ন হয়ে থাকে । যেমন : কোন কোন কোম্পানি ৫০ হাজার টাকা নেয় আবার কোন কোন কোম্পানি ৫ লক্ষ টাকার উপরে নিয়ে থাকেন সিকিউরিটি মানি হিসেবে। তাই ব্যবসায় শুরু পূর্বে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিবেন ।
পণ্যের উপর বা প্রোডাক্ট এর উপর বিনিয়োগ:
প্রোডাক্টের উপর ইনভেস্টমেন্ট বলতে আপনি যে কোম্পানি থেকে পণ্য সামগ্রী নিবেন সেই পণ্য সামগ্রীর একটি নির্দিষ্ট অংশ কোম্পানিকে অগ্রীম প্রদান করতে হবে ।
ধরুন, আপনি এক ট্রাক চিনি ক্রয় করবেন এখানে আপনাকে অর্ধেক চিনির দাম কোম্পানীকে অগ্রীম প্রদান করতে হবে ।
কোম্পানিকে তারপর বাকি টাকা আপনি মাল হাতে পাওয়ার পর ব্যাংকের মাধ্যমে অথবা অন্য যেকোনো মাধ্যমে পৌঁছে দিতে পারেন ।
ডিলারশিপ ব্যবসায় ও মুনাফা কেমন হবে ?
ডিলারশিপ ব্যবসার ক্ষেত্রে আয় বা মুনাফা নির্ভর করে সম্পূর্ণটা কোম্পানির উপর। এবং কোম্পানি আপনাকে কি পরিমান কমিশন দিচ্ছে তার ওপর। সাধারণত দেখা যায় সব কোম্পানিগুলো ৭ থেকে ১০% পর্যন্ত কমিশন দিয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে আপনি যদি ভাল কোন পণ্যদ্রব্যের ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা করেন তাহলে আপনি মাসে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার পণ্য বিক্রি করা কোন কষ্টের ব্যাপার হবে নাহ ।
আপনি যত বেশি পণ্যদ্রব্য বিক্রি করবেন তত বেশি আপনি মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। ডিলারশিপ ব্যবসার মধ্যে কোম্পানিগুলো বিক্রয়ের উপর কমিশন প্রদান করে থাকে ।
কিভাবে আপনি ডিলারশিপ ব্যবসা ২০২২ ?
আপনি যে কোম্পানির কাছ থেকে ডিলারশিপ নিতে আগ্রহী অথবা আপনি যে কোম্পানির পণ্যগুলো ডিলারশিপ নিতে আগ্রহী সেই কোম্পানির নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
এবং তাদের পণ্য সামগ্রী গুলো সম্পর্কে খুঁটিনাটি এবং ভালো-খারাপ জেনে নিন। তাছাড়া আপনার এলাকাতে বা জেলাতে যদি সেই কোম্পানির হেড অফিস থাকে তাহলে সেখানে গিয়েও ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারেন । তারপর ব্যবসাটি শুরু করুন,,
ডিলারশিপ ব্যবসার সর্তকতা
ফেসবুকে বা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ডিলারের বিজ্ঞপ্তি দেখে সাথে সাথে ডিলার নিবেন না।
ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করার আগে আপনি যে কোম্পানির ডিলারশিপ নিতে আগ্রহী সেই কোম্পানি সম্পর্কে ভালো-খারাপ জেনে-বুঝে এবং তাদের পণ্য সামগ্রীগুলোর গুণগত মান কেমন । এবং
বাজারে তাদের পণ্যসামগ্রীর কেমন চাহিদা রয়েছে এই সমস্ত বিষয়গুলো সুন্দরভাবে বিবেচনা ও বিশ্লেষণ করে তারপর ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করবেন।
কেননা আমাদের বাংলাদেশের প্রতারক এর অভাব নেই তাই আপনি যদি হঠাৎ করে ফেসবুকে পত্রপত্রিকায় লোভনীয় বিজ্ঞপ্তি দেখে ডিলারশিপ বিজনেস শুরু করে দেন তাহলে আপনি লসের সম্মুখীন হবেন।
কিছু লাভজনক ডিলারশিপ ব্যবসার আইডিয়া ২০২২
বন্ধুরা আপনাদের সাথে ডিলারশিপ ব্যবসা কিভাবে শুরু করা যায় তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে । চলুন এখন দেখে নেওয়া যাক কয়েকটি লাভজনক ডিলারশিপ বিজনেসের আইডিয়া ।
১/মুদি পণ্যের ডিলারশিপ ব্যবসা ২০২২
আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনের জন্য সবচেয়ে ব্যবহৃত পণ্য সামগ্রীগুলো হচ্ছে মুদি পণ্য সামগ্রী । আপনি মুদি পণ্যের ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারলে দারুন লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মুদি পণ্য সামগ্রীগুলোর মধ্যে লাভের কমিশন কম হলেও কিন্তু এই পণ্যগুলোর আমাদের বাংলাদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ।
মুদি পণ্যেসামগ্রীর ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে হলে একটু বেশি মূলধনের প্রয়োজন হবে তাই আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন থাকে তাহলেই আপনি মুদি পণ্যের এই অত্যন্ত লাভজনক ডিলারশিপ বিজনেস শুরু করতে পারেন। মুদি পণ্যের আইটেম নিয়ে কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন তা সম্পর্কে জানতে আমাদের মুদি আইটেম নিয়ে ব্যবসায় আর্টিকেলটি পড়ুন ।
২/বিউটি সামগ্রী ও হেলথকেয়ার পণ্য
বর্তমান সময়ে দেখা যায় বাজারে হেলথকেয়ার ও বিউটি পণ্য সামগ্রীগুলোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । আপনি এই ধরনের পণ্য সামগ্রীগুলো নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
বিউটি পণ্য ও হেলথকেয়ার এই ধরনের পণ্যসামগ্রীগুলোর ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে আপনার তেমন মূলধনের প্রয়োজন হবে না।
আমাদের বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের ছোট-বড় বিউটি হেলথকেয়ার কোম্পানি রয়েছে । আপনি চাইলে তাদের কাছ থেকে এই পণ্য সামগ্রীগুলো নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন।
বর্তমানের মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ ও সৌন্দর্য প্রণোদিত মানুষ। তাই এই পণ্যগুলোর অনেক চাহিদা রয়েছে বাজারে। বিউটি পার্লারের ব্যবসা শুরু করার নিয়মসমূহ বিস্তারিত পড়ুন ।
৩/ বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন পণ্য সামগ্রীর ডিলারশিপ
আমরা দেখি রাস্তাঘাট, বিল্ডিং ও সেতু ইত্যাদি নির্মাণের কাজ কখনোই শেষ হয়না । প্রতিদিন আমরা আমাদের চারপাশে কোন না কোন ধরনের নতুন এই কনস্ট্রাকশন কাজ দেখতে পাই ।
তাই কনস্ট্রাকশন কাজে ব্যবহৃত হয় এমন পণ্যসামগ্রীগুলোর ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারলে আপনার জন্য দারুন একটি টাকা ইনকামের উপায় হবে।
বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন এর পণ্য সামগ্রীগুলো হলো যেমন : ইট, বালু ,সিমেন্ট ইত্যাদি । এই পণ্যগুলো তুলনামূলক দামী হওয়ার কারণে এই ডিলারশিপ বিজনেস করতে গেলে আপনার একটু বেশি মূলধনের প্রয়োজন হবে।
তাই আপনার হাতে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে মূলধন থাকে তাহলেই আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করুন।
৪/ কম্পিউটার হার্ডওয়ার এর ডিলারশিপ ব্যবসা
বর্তমান যুগ হলো তথ্য প্রযুক্তির যুগ। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে কম্পিউটার ও ল্যাপটপ এর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে এসব পণ্যের পার্টস ও এক্সোসরিজের চাহিদা।
যেমন : মেমোরি কার্ড, হার্ডডিক্স, মনিটর, ক্যাবল, মাউস, কিবোর্ড ইত্যাদি সহ আরও হাজার ধরনের কম্পিউটার এক্সেসরিজ রয়েছে । আপনি চাইলে এই এক্সেসরিজগুলোর ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারে।
৫/ওয়ালটন ডিলারশিপ ব্যবসা ২০২২
Walton আমাদের বাংলাদেশে ইলেক্ট্রনিকস পণ্যের উপর অনেক খ্যাতি অর্জন করেছে । বর্তমানে দেশের বাইরেও ওয়ালটন কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্যগুলো রপ্তানি হচ্ছে।
আপনি চাইলে আপনার এলাকাতে বা এরিয়াতে ওয়ালটন কোম্পানির ইলেকট্রনিক্স পণ্যগুলো যেমন : ফ্রিজ ,টিভি, মনিটর, রাইস কুকার, সিলিং ফ্যান, আয়রন, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি শতশত পণ্য এর ডিলারশিপ নিতে পারেন ।
আপনি চাইলে এই ওয়ালটন কোম্পানির ইলেকট্রনিক্স পণ্য সামগ্রীগুলো দিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ইলেকট্রনিক্স পণ্যসামগ্রীগুলোর কমিশন হারও একটু বেশি হয়ে থাকে।
৬/ স্কয়ার ডিলারশীপ ব্যবসা
বাংলাদেশের স্বনামধন্য একটি কোম্পানি হলো এই স্কয়ার কোম্পানি। স্কয়ার কোম্পানি ওষুধ থেকে শুরু করে মসলা জাতীয় পণ্যের ব্যাপক সমাহার রয়েছে।
আমাদের বাংলাদেশ স্কয়ার গ্রুপের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হলো রাধুনী গ্রুপ। আপনি চাইলে রাধুনী গ্রুপের পণ্য সামগ্রীগুলো নিয়ে আপনার এলাকায় বা এরিয়াতে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন ।
মসলার কথা যদি আমাদের মাথায় আসে তাহলে সর্বপ্রথম আসে রাঁধুনির মসলার নাম । এর পাশাপাশি আরো অনেক ধরনের পণ্য সামগ্রী রয়েছে তাই আপনি চাইলে এই স্কয়ার গ্রুপের ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
স্কয়ার গ্রুপের পণ্য সামগ্রীগুলো কোয়ালিটি রয়েছে । আমাদের বাংলাদেশে খুব সহজে আপনি এদের পণ্য নিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন ।
৭/ বসুন্ধরা ডিলারশিপ ব্যবসা
বসুন্ধরা কোম্পানি বাংলাদেশের নামকরা একটি কোম্পানি। এই কোম্পানির কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্য সামগ্রী রয়েছে যেমন : বসুন্ধরা আটা, ময়দা,সুজি, সোয়াবিন তেল, বসুন্ধরা নুডুলস , চিপস ইত্যাদি শত শত পণ্য সামগ্রী রয়েছে ।
আপনি চাইলে আপনার এলাকায় বা জেলাতে যেকোন একটি অথবা যেকোনো একটি গ্রুপের পণ্য সামগ্রীগুলো নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন ।
বসুন্ধরার পণ্যগুলো মানুষ খুব ভালোভাবে চেনেন এবং এদের পণ্যসামগ্রীর কোয়ালিটি ও ভালো। এদের স্টেশনারি প্রোডাক্ট রয়েছে যেমন : বসুন্ধরা টিস্যু , বসুন্ধরা খাতা – কলম ইত্যাদি । এগুলো নিয়ম আপনি চাইলে ডিলারশিপ বিজনেস শুরু করতে পারেন।
৮/ সিগারেট কোম্পানির ডিলারশিপ ব্যবসা
আমরা জানি সিগারেট যদিও একটি নেশাদ্রব্য পণ্য তারপরও ব্যবসায়িক চিন্তা ধারা থেকে এটি বর্তমানে অত্যন্ত লাভজনক একটি পণ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আপনি চাইলে বিভিন্ন সিগারেট কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আমাদের বাংলাদেশে সিগারেটের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
তাছাড়া আমাদের কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন ” নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি “ এবং আমরা বাস্তবে তা দেখতে পাচ্ছি।
যতই সিগারেটের দাম বাড়ুক না কেন যারা সিগারেটে আসক্ত হয়েছে তারা কখনও সিগারেট খাওয়া ছাড়বেনা। তাই ব্যবসায়িকভাবে চিন্তা করলে সিগারেটের ডিলারশিপ ব্যবসা বর্তমানে লাভজনক ব্যবসার মধ্যে রয়েছে।
৯/ প্রাণ কোম্পানির ডিলার ২০২২
আমাদের বাংলাদেশের অনেক বড় একটি কোম্পানি হলো প্রাণ কোম্পানি। এই প্রাণ কোম্পানির কাছে হাজার হাজার পণ্য সামগ্রী রয়েছে।
বলতে গেলে আমাদের সকালে ঘুম থেকে উঠা শুরু করে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত আমরা যে পণ্য সামগ্রীগুলো ব্যবহার করে থাকি তার বেশিরভাগই হলো প্রাণ কোম্পানির পণ্য।
প্রাণ কোম্পানির একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হলো আরএফএল কোম্পানি । বর্তমানে এটি আমাদের বাংলাদেশ প্লাস্টিক জগতের মধ্যে সেরা রয়েছে।
প্রাণ কোম্পানির অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য রয়েছে যেমন: সয়াবিন তেল, সরিষার তেল, আটা , ময়দা , সুজি , লবণ, মরিচ গুঁড়া , হলুদের গুড়া , বিরানির মসলা , প্রাণ জুস , প্রাণ লাচ্ছি ইত্যাদি।
আমাদের বাংলাদেশে বর্তমানে প্রাণ গ্রুপের পণ্য সামগ্রীগুলোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে । আপনি চাইলে আপনার এলাকাতে বা এরিয়াতে প্রাণ কোম্পানির পণ্যগুলো নিয়ে ডিলারশিপ ব্যবসা শুরু করতে পারেন ।
ডিলারশিপ ব্যবসা ২০২২
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ২০২২ সালে অনেক কোম্পানি তাদের ডিলার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে । আপনারা যারা ডিলারশিপ ব্যবসা করতে আগ্রহী তারা চাইলে ২০২২ সালের ডিলারশিপ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গুলো দেখতে পারেন ।
বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা সংগ্রহ করার মাধ্যমে অথবা ইউটিউবে ডিলারশিপ ব্যবসা ২০২২ লিখে সার্চ দিলে অনেক কোম্পানির বিজ্ঞপ্তি আপনারা পেয়ে যাবেন।
১০/ অলটাইম ডিলার ২০২২
অলটাইম ডিলারও অনেক জনপ্রিয় একটি ডিলারশিপ কোম্পানী । এবং এদের পণ্য সামগ্রীগুলোর বাজারে খুব ভালো চাহিদাও রয়েছে । তাই আপনিও চাই অলটাইম ডিলারশিপ নিয়ে ডিলার ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন ।
পরিশেষে – Conclusions
বন্ধুরা আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে ডিলারশিপ ব্যবসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
আপনি কিভাবে একটি ডিলারশিপ বিজনেস শুরু করবেন? ডিলারশিপ বিজনেস শুরু করতে কি ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন? ডিলারশিপ বিজনেস শুরু করার জন্য কত টাকা মূলধন এর প্রয়োজন হবে? এবং
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে বাংলাদেশের কয়েকটি সেরা কোম্পানির ডিলারশিপ ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি ।
বন্ধুরা আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আশা করা যায় আপনারা ডিলারশিপ বিজনেস সম্পর্কে বিস্তারিত এবং গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জানতে পেরেছেন ।
আমাদের এই ডিলারশিপ ব্যবসায় আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শেয়ার করবেন এবং প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ব্যবসা ও চাকরি সংক্রান্ত আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথে থাকুন ধন্যবাদ।