বর্তমানে অনেক ব্যবসা রয়েছে তার মধ্যে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা অনেক লাভজনক একটি ব্যবসায় রূপান্তরিত হয়েছে। বর্তমানে মানুষজন গাড়িতে চড়তে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। পাশাপাশি নিজেদের একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ক্রয় করার অনেক বেশি আকাঙ্ক্ষাও বেড়ে গিয়েছে আমাদের আশেপাশের মানুষজনদের কাছে।
এবং আগের তুলনায় অনেক বেশি গাড়ি হয়েছে যে আমরা ঢাকা শহর এবং চিটাগাং শহরসহ বিভিন্ন জায়গায় গেলে তা স্পষ্ট দেখতে পাই। বিভিন্ন প্রকার গাড়ির কারণে আমাদের ঘন্টার পর ঘন্টা জ্যামের মধ্যে বসে থাকতে হয়।
বর্তমানে যেহেতু বিভিন্ন ধরনের গাড়ির চাহিদা বেড়েছে সেহেতু গাড়ির পার্টসের চাহিদাও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই যেকেউ চাইলে বর্তমানে অত্যন্ত লাভজনক গাড়ীর পার্টসের ব্যবসাটি শুরু করে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।
যারা নতুন ব্যবসা করার জন্য চিন্তা ভাবনা করছেন। তারা চাইলে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যদিও এই ব্যবসা শুরু করতে একটু বেশি মূলধন খরচ হবে অন্যান্য ব্যবসার তুলনায়। তাই যাঁদের হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন রয়েছে তাদের জন্য গাড়ির পার্টস এর ব্যবসাটি আদর্শ একটি ব্যবসা হবে।
আজকের গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব গাড়ির পার্টস কি ? গাড়ি পার্টস এর ব্যবসা কিভাবে করা যায় ? গাড়ির পার্টস এর ব্যবসায় কেমন লাভ হয়েছে? গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা করতে কত টাকা মূলধন প্রয়োজন ইত্যাদি সব বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব।
অতএব আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে সম্পূন্ন পড়লে আশা করা যায় গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য ও ধারণা পাবেন।
তাহলে শুরু করা যাক বন্ধুরা আমাদের আজকের মূল আলোচনার বিষয়বস্তু গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা।
গাড়ির পার্টস কি ? What are car parts ?
আমাদের চারপাশে প্রতিদিন বিভিন্ন রকমের হাজার হাজার গাড়ি চলাফেরা করে। এবং বিভিন্ন গাড়ির মধ্যে প্রায় হাজার হাজার যন্ত্রাংশ রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের গাড়ি তৈরি করতে বিভিন্ন ধরনের পার্টস এর প্রয়োজন হয়ে থাকে।
এবং এই পার্টসগুলোর সমন্বয়ে একটি গাড়ি রূপান্তরিত হয় । তাই বলা যায় একটি গাড়ি রূপান্তরিত হতে যে সমস্ত যন্ত্রাংশ এর প্রয়োজন হয় সেগুলোকে পার্টস বলা হয়।
গাড়ীর পার্টসের ব্যবসা করতে কত টাকা মূলধন লাগে?
আমরা জানি সকল ব্যবসা করার জন্য আমাদের সর্বপ্রথম মূলধনের জোগান দিতে হবে । আপনি যেমন ভাবে মূলধন বিনিয়োগ করবেন তেমনভাবে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
অর্থাৎ সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর যে আপনি কত টাকা মূলধন বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করতে চান। তাই গাড়ির পার্টস এর ব্যবসার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল যে কত টাকা মূলধন প্রয়োজন হতে পারে।
তবে সাধারণত আপনি যদি ছোট পরিসরে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে আপনার ৩-৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হবে। আবার আপনি যদি একটু বড় পরিসরে করতে চান তাহলে ৫ – ১০ লক্ষ টাকা মূলধন বিনিয়োগ করতে হবে।
আপনি চাইলে আরো বড় পরিসরে ব্যবসা শুরু করতে পারেন যদি আপনার হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন থাকে বিনিয়োগ করার মত।
আপনি যত বেশি মূলধন বিনিয়োগ করতে পারবেন তত বেশি মুনাফা করতে পারবেন গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা থেকে।
কারণ আপনি যদি বেশি পরিমাণ মূলধন বিনিয়োগ করে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে গাড়ির বিভিন্ন পার্টস ক্রয় করতে পারেন তাহলে আপনি অনেক কম মূল্যে পার্টসগুলো কিনতে পারবেন এবং সেগুলো ভালো মূল্যে বিক্রি করতে পারবেন।
গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা করার নিয়ম
গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে যে আপনি কোন ধরনের গাড়ির পার্টস বিক্রি করবেন। এবং কি কি পার্টসগুলো আপনি আপনার ব্যবসায় বিক্রি করবেন তা আগে থেকে নির্ধারণ করতে হবে।
কেননা বর্তমানে হাজার হাজার গাড়ির মডেল ও গাড়ি রয়েছে এখন আপনি চাইলেতো আর সব গাড়ির পার্টস নিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব না।
তাই আপনাকে নির্দিষ্ট গাড়ি বাছাই করতে হবে এবং বাছাইকৃত গাড়ির পার্টসগুলো বিক্রি করতে হবে। সেজন্য আগে থেকে কোন গাড়ির পার্টসগুলো বিক্রি করবেন সেগুলো ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন।
তাহলে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা করা সম্ভব হবে। অন্যথায় সবগুলো গাড়ির পার্টস নিয়ে ব্যবসা করতে গেলে অনেক বেশি মূলধনের প্রয়োজন হবে এবং ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা আপনি দুইভাবে করতে পারবেন।
- আমদানি করে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা ।
- দোকানের মাধ্যমে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা ।
আপনি চাইলে বিভিন্ন দেশ থেকে গাড়ির বিভিন্ন পার্টস আমদানি করে এনে ব্যবসা করতে পারেন অথবা বিভিন্ন পাইকারি পার্টসের দোকান থেকে ক্রয় করে পার্টসগুলো দোকানের মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
গাড়ির পার্টসের ব্যবসা করার সঠিক স্থান নির্ধারণ
যেকোন ব্যবসা শুরু করার পূর্বে সর্বপ্রথম সেই ব্যবসার জন্য একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে। কারণ আপনি যদি যেকোনো ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে না পারেন তাহলে সেই ব্যবসায় সফল হওয়া খুব কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
তাই আপনি যখন গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিলেন তখন আপনাকে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা করার জন্য একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে ।
যে যে স্থানে মানুষের আনাগোনা বেশি যেসব জায়গায় লোকসমাগম বেশি রয়েছে সেসব জায়গায় যেকোন ব্যবসা করার জন্য আদর্শ জায়গা হিসেবে পারফেক্ট ।
গাড়ির পার্টস এর জন্য উপযুক্ত স্থানগুলো হল:
- আপনি যে অঞ্চলে ব্যবসা শুরু করতে চান সেই অঞ্চলের হাট-বাজার উপযুক্ত স্থান হবে গাড়ির ব্যবসার জন্য।
- অথবা বাস স্টেশন , রেল স্টেশন ইত্যাদি এসব জায়গাও উপযুক্ত স্থান ।
- অথবা বিভিন্ন মার্কেটের আশেপাশে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা জন্য উপযুক্ত স্থান ।
গাড়ীর পার্টসের ব্যবসার জন্য আপনি যদি সঠিক ও আকর্ষণীয় একটি স্থান নির্বাচন করতে পারেন তাহলে আপনার ব্যবসার উন্নতি অনেকগুন বেড়ে যাবে ।
গাড়ীর পার্টস আমদানি করে ব্যবসা
আপনি গাড়ির বিভিন্ন পার্টস বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে ব্যবসা করতে পারেন। তবে গাড়ির পার্টস আমদানি করে ব্যবসা করার জন্য আপনার হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন বিনিয়োগ করার মত থাকতে হবে। কারণ বিভিন্ন দেশ থেকে পার্টসগুলো আনার জন্য আপনাকে একসাথে অনেক পার্টস আমদানি করতে হবে ।
তাই আপনি যদি অনেক বেশি পরিমাণ পার্টস ক্রয় করতে চান তাহলে আপনার মূলধনের পরিমাণও বেশি প্রয়োজন হবে। তবে আমদানি করে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা করতে পারলে অনেক বেশি মুনাফা করা সম্ভব হবে।
কারণ পাইকারি পার্টস কেনার থেকে অনেক কম দামে অন্য দেশ থেকে আপনি গাড়ির পার্টসগুলো আমদানি করতে পারবেন এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন পাইকারি দোকানে সেগুলো বিক্রি করে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
গাড়ির পার্টস এর দোকান দিয়ে ব্যবসা
আপনি চাইলে বিভিন্ন বাজার, মার্কেট, রেলওয়ে স্টেশন, বাস স্টেশন ইত্যাদি জায়গায় অথবা লোক সমাগম আছে এমন জায়গায় একটি দোকান দিয়ে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। বিভিন্ন গাড়ির পার্টসগুলো পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ক্রয় করে পরবর্তীতে আপনার দোকানে খুচরা বিক্রি করতে পারবেন।
দোকানের মাধ্যমে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা করতে গেলে আপনার তেমন বেশি মূলধন প্রয়োজন হবে না । আপনি চাইলে সল্প মূলধন বিনিয়োগ করে দোকানের মাধ্যমে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
তবে দোকানের মাধ্যমে গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা করার ক্ষেত্রে যেহেতু পাইকারি পার্টস এর ব্যবসায়ীদের থেকে পণ্যগুলো ক্রয় করতে হবে তাই দেখে শুনে বিভিন্ন পাইকারি ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে যাচাই-বাছাই করে ভালো পার্টসগুলো ক্রয় করার চেষ্টা করবেন ।
আরো পড়ুন : ১০টি সেরা বিদেশি ব্যবসার আইডিয়া ।
গাড়ির পার্টস ঠিক করার জন্য দক্ষ কারিগর
গাড়ির পার্টস নিয়ে ব্যবসা করতে চাইলে আপনাকে আপনার দোকানে একজন দক্ষ কারিগর নিয়োগ দিতে হবে । কেননা বিভিন্ন ধরনের গাড়ি ও বিভিন্ন ধরনের পার্টস ঠিক করার জন্য অনেকে আসবে।
গাড়ির পার্টস পাওয়ার পাশাপাশি যদি তারা গাড়ির পার্টস মেরামত করার দক্ষ একজন কারিগর আপনার দোকানে পায় তাহলে সেটি তাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট হবে। এবং অন্যদিকে আপনারও বাড়তি আয়ের সুযোগ হবে।
এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন গাড়ির ড্রাইভার তাদের বিভিন্ন প্রয়োজনেও বিভিন্ন পার্টস এর কারনে আপনার দোকানে আসবে এবং পার্টস কেনার পাশাপাশি পার্টস মেরামত করে যাবে আপনার দোকান থেকে ফলে আপনার দ্বিগুণ মুনাফা করার সম্ভাবনা রয়েছে।
সেজন্য গাড়ির পার্টস ঠিক করার জন্য আপনার দোকানে দক্ষ একজন কারিগর অবশ্যই নিয়োগ দিবেন। যাতে করে গাড়ির পার্টস বিক্রির পাশাপাশি গাড়ি মেরামত করার সেবা প্রদান করতে পারেন ।
গাড়ি মেরামত করার জন্য গ্যারেজ তৈরি

গাড়ির পার্টস এর ব্যবসার পাশাপাশি একটি গাড়ি মেরামত করার জন্য গ্যারেজ তৈরি করবেন। যারা আপনার থেকে গাড়ির পার্টস ক্রয় করবে তারা নিশ্চয়ই সেই পার্টসটি ঠিক করার জন্য যেকোনো একটি গ্যারেজে যাবে।
তাই আপনি যদি গাড়ির পার্টস এর ব্যবসার পাশাপাশি একটি গাড়ির গ্যারেজ তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনার থেকে গাড়ির পার্টস কেনার পাশাপাশি তারা গাড়ি মেরামত করার সেবা ও পেয়ে যাবে।
এবং দিনশেষে আপনি দ্বিগুণ মুনাফা করতে পারবেন গাড়ির পার্টস এর ব্যবসার পাশাপাশি যদি একটি গাড়ি মেরামত করার গ্যারেজ তৈরি করতে পারেন।
গাড়ীর গ্যারেজ ব্যবসায় করে শতকোটি টাকার মালিক হয়ে গিয়েছেন হোসেন নাসিম । তাই মনোযোগ দিয়ে র্ধৈযের সাথে যেকোন ব্যবসায় করতে পারলে সফল হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র ।
গাড়ির পার্টস এর নাম – Name of car parts
বর্তমানে অনেক ধরনের গাড়ি রয়েছে যেমন: বাস, কার, ট্রাক, সিএনজি ,মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ইত্যাদি এবং এগুলোর বিভিন্ন ধরনের পার্টস রয়েছে পার্টস গুলোর নাম নিম্নরূপ:
- গাড়ির ইঞ্জিন
- গাড়ির চেসিস
- ব্যাটারি
- ক্লাচ
- গিয়ার বক্স
- ডিফারেন্সিয়াল
- এক্সেল
- গাড়ির চাকা
- কুলিং সিস্টেম
- মিরর
- গাড়ির ইন্ডিকেটর
- ব্রাক ইত্যাদি
কোন কোন গাড়ির পার্টস বিক্রি করা যায়?
বিভিন্ন ধরনের গাড়ি রয়েছে আপনি চাইলে যেকোনো গাড়ির যেকোনো ধরনের পার্টস বিক্রি করতে পারেন।
তবে নির্দিষ্ট একটি গাড়ির পার্টস বিক্রি করা সবচেয়ে ভালো হবে। অনেকগুলো গাড়ি রয়েছে আপনি চাইলে সেগুলো থেকে নির্দিষ্ট একটি গাড়ির পার্টস বিক্রি করতে পারেন । গাড়িগুলো হলো যেমন:
- বাস
- ট্রাক
- কার
- সিএনজি
- অটো ও রিকশা
- মোটরসাইকেল
- ইত্যাদি
মোটরসাইকেল পার্টস এর নাম
বর্তমানে আমাদের সমাজের তরুণ-তরুণীদের সবচেয়ে পছন্দের গাড়ি হলো মোটরসাইকেল। এই মোটরসাইকেলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই আপনি চাইলে মোটরসাইকেলের বিভিন্ন ধরনের পার্টস এর ব্যবসা করতে পারেন।
মোটরসাইকেলের বিভিন্ন পার্টস এর নাম হলো যেমন:
- মোটরসাইকেল ইঞ্জিন
- মোটরসাইকেল গাড়ির চাকা
- মোটরসাইকেল গাড়ির ফ্রন্ট মিরর
- মোটরসাইকেল গাড়ির সাইট মিরর
- মোটরসাইকেল গাড়ির হেলমেট
- মোটরসাইকেল গাড়ির ইন্ডিকেটর
- মোটরসাইকেল গাড়ির ব্রেক ও ক্লাচ ইত্যাদি
মোটরসাইকেল পার্টসের পাইকারি বাজার
আপনি যদি মোটরসাইকেল পার্টস এর দোকান দিয়ে ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনাকে মোটরসাইকেলের পার্টস কোথায় পাইকারি বিক্রি হয় সেটির খোঁজ করতে হবে।
আপনি যত কম দামে পাইকারি মোটরসাইকেল এর পার্টসগুলো ক্রয় করতে পারবেন তত বেশি খুচরা বিক্রি করে মুনাফা করতে পারবেন।
আমাদের বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের পার্টস এর পাইকারি বাজার রয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে। আপনি চাইলে ঢাকা অথবা চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে মোটরসাইকেল এর পার্টসগুলো স্বল্প দামে ক্রয় করে আপনার দোকানে খুচরা বিক্রি করতে পারেন।
আরো পড়ুন : ফুচকার ব্যবসায় করে লাখটাকা আয় করুন ।
সিএনজি পার্টস এর ব্যবসা ২০২২
আমাদের বাংলাদেশে সিএনজি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এবং অন্যান্য গাড়ির তুলনায় সিএনজি গাড়ি রাস্তাঘাটে অলিতে গলিতে আমরা সবচেয়ে বেশি দেখতে পাই। তাই আপনি চাইলে সিএনজির পার্টস এর ব্যবসা করতে পারেন। সিএনজির পার্টসগুলো পাইকারি বাজার থেকে ক্রয় করে দোকানের মাধ্যমে খুচরা দামে বিক্রি করতে পারেন।
আপনি সিএনজি পার্টসের লাভজনক ব্যবসা করে ভালো মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। তাই আপনি যদি কোন গাড়ির পার্টস নিয়ে ব্যবসা করতে চান তাহলে আমি আপনাকে পরামর্শ দিব আপনি সিএনজি গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা শুরু করুন । এই ব্যবসায় দ্রুত সফলতা অর্জন করা সম্ভব।
সিএনজি পার্টস এর নাম
সিএনজি গাড়ির বিভিন্ন পার্টস রয়েছে এবং সেই পার্টসগুলো আপনি চাইলে আমদানি করেও ব্যবসা করতে পারেন অথবা দোকানের মাধ্যমে খুচরা ব্যবসা করতে পারেন। সিএনজি গাড়ির পার্টসগুলো রয়েছে সেগুলো নিম্নরূপ :
- সিএনজির ইঞ্জিন
- সিএনজির চাকা
- সিএনজির ব্রাক
- সিএনজির চেচিস
- ব্যাটারি ইত্যাদি
কার পার্টস এর ব্যবসা ২০২২
পার্টসের ব্যবসার মধ্যে আরও একটি লাভজনক ব্যবসা হল কারের পার্টস ব্যবসা। বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে কার গাড়ির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই আপনি কার গাড়ির পার্টস ব্যবসা শুরু করতে পারেন। তবে কার গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা শুরু করতে আপনাকে অনেক বেশি অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে।
কেননা কার গাড়ির পার্টসগুলো তুলনামূলক অন্যান্য গাড়ির পার্টস এর থেকেও দাম একটু বেশি। কারের পার্টস চাইলে আমদানি করেও ব্যবসা করতে পারেন অথবা বিভিন্ন পাইকারি বাজার থেকে পার্টসগুলো ক্রয় করেও ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
কার এর পার্টস এর ব্যবসা অধিক লাভজনক ব্যবসা। পর্যাপ্ত পরিমাণ মূলধন থাকলে আপনি এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
আরো পড়ুন : বেকারি ব্যবসায় শুরু করার উপায়সমূহ ।
কার পার্টস এর নাম
কার এর বিভিন্ন ধরনের পার্টস রয়েছে আপনি চাইলে নির্দিষ্ট একটি পার্টস এর ব্যবসা করতে পারেন অথবা একসাথে সবগুলো পার্টস এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কার এর পার্টসগুলোর নাম নিম্নরূপ:
- গাড়ির চাকা
- গাড়ির ইঞ্জিন
- গাড়ির ব্রেক
- গিয়ার বক্স
- সেসিচ
- ইন্ডিকেটর
- ব্যাটারি
- আয়না ইত্যাদি
ট্রাক পার্টস এর ব্যবসা ২০২২
আপনি চাইলে ট্রাক এর পার্টস এর ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আমরা বিভিন্ন শিল্প কারখানার আশেপাশে শত শত ট্রাক দেখতে পায়। এসব জায়গায় যদি একটি ট্রাকের পার্টসের ব্যবসা করতে পারেন তাহলে আপনার জন্য বেশ ভালো হবে।
তবে ট্রাকের পার্টস নিয়ে যদি ব্যবসা করতে চান তাহলে সেই বিষয়ের উপর নিজেকে দক্ষ হতে হবে।
আরো পড়ুন : ইট ভাটার ব্যবসায় শুরু করার নিয়মসমূহ ।
ট্রাক পার্টস এর নাম
ট্রাকের বিভিন্ন ধরনের পার্টস রয়েছে সেগুলোর নাম নিম্নরূপ:
- চাকা
- ইঞ্জিন
- চেচিস
- ব্রাক
- গিয়ার বক্স
- ইন্ডিকেটর
- কুলিং সিস্টেম
- ইত্যাদি
পুরাতন গাড়ির ব্যবসা ২০২২
আপনি চাইলে পুরাতন গাড়ি নিয়ে ব্যবসা করতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের নষ্ট গাড়ি ক্রয় করে সেগুলোকে মেরামত করার পর ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন।
যেমন মোটরসাইকেল, কার, সিএনজি, ট্রাক, বাস, পিকআপ ইত্যাদি বিভিন্ন গ্যারেজে গিয়ে পুরাতন গাড়ি গুলো ক্রয় করে এবং পরবর্তীতে এই গাড়িগুলো মেরামত ও রং করে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন।
এই ব্যবসায় অনেক বেশি মুনাফা করা সম্ভব কারণ পুরাতন গাড়ি আপনি খুব অল্প দামে ক্রয় করতে পারবেন এবং সেই পুরাতন গাড়িটি মেরামত করার পর মানুষের কাছে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন।
তাই আপনার যদি গাড়ি সম্পর্কে ধারনা থাকে তাহলে আপনি পুরাতন গাড়ি ক্রয় করে বিক্রি করার এই ব্যবসাটি শুরু করুন।
আরো পড়ুন : টি-শার্ট প্রিন্টিং ব্যবসায় করে আয় করুন ।
গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা কেমন লাভ?
গাড়ির পার্টস এর ব্যবসাই অনেক বেশি লাভ করা সম্ভব। কারন গাড়ির পার্টসগুলো সম্পর্কে মানুষের এত বেশি ধারণা নেই। দেখা যায় একটি গাড়ির পার্টস ৫,০০০ টাকা দিয়ে ক্রয় করে সেটি বিক্রি করল ২০ অথবা ১০ হাজার টাকা দিয়ে।
কারণ কাস্টমারদের যেহেতু গাড়ির পার্টস সম্পর্কে কোন ধারণা নেই সেহেতু কাস্টমাররা দাম সম্পর্ক জানেনা। তাই গাড়ি পার্টস এর ব্যবসায় ৪০-৫০ শতাংশ মুনাফা করা সম্ভব।
জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
গাড়ির পার্টস ব্যবসা করতে কত টাকা লাগে?
উত্তর: গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা করতে সর্বনিম্ন ৩ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে । এর থেকে আপনি যত বড় পরিসরে করতে চান ততবেশি মূলধন আপনাকে বিনিয়োগ করতে হবে।
গাড়ির পার্টস পাইকারি বাজার কোথায়?
উত্তর: বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও ঢাকার সবচেয়ে বড় গাড়ির পাইকারি পার্টস এর বাজার রয়েছে।
গাড়ির পার্টস এর দোকানে কতজন কর্মী প্রয়োজন?
উত্তর: গাড়ির পার্টস এর দোকানে ২ থেকে ৩ জন কর্মচারী প্রয়োজন।
গাড়ির পার্টস ব্যবসা লাভ কেমন ?
উত্তর: গাড়ি পার্টস ব্যবসায় ৪০-৫০ শতাংশ লাভ করা সম্ভব।
পরিশেষে – Finally
বন্ধুরা আজকে আমরা গাড়ির পার্টস এর ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত একটি আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করেছি। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের কোন অংশটি আপনাদের ভাল লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবসা সংক্রান্ত নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করি।
পরবর্তীতে আপনারা কোন ধরনের ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে জানতে চান তা আমাদের জানালে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব সেই আইডিয়া নিয়ে সুন্দর করে একটি আর্টিকেল লেখার জন্য। এতক্ষণ সময় ধরে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।