একমালিকানা ব্যবসায়ের উপযুক্ত ক্ষেত্র

বর্তমান বৃহদায়তন ব্যবসায় পরিমণ্ডলে প্রাচীন ধরনের সংগঠন ক্ষুদ্র একমালিকানা ব্যবসায় পূর্বের মতেঃ সকল দেশেই অত্যন্ত জনপ্রিয়। এরূপ ব্যবসায়ের এমন কিছু বিশেষ ক্ষেত্র লক্ষনীয় যেখানে কোনোদিনই অন কোনো ব্যবসায় এর সাথে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হবে বলে মনে হয় না ।

 নিম্নে ক্ষেত্রসমূহ উল্লেখ করা হলো :

 

১.স্বল্প পুঁজির ব্যবসায় : যে সকল ব্যবসায়ে অত্যন্ত স্বল্প পুঁজির প্রয়োজন পড়ে সেখানে একমালিকানা ব্যবসায়ই সবচেয়ে উপযোগী বিবেচিত হয়; যেমন-পান-বিড়ির দোকান, তরিতরকারির দোকানইত্যাদি ।

২.সীমিত চাহিদার পণ্য: অনেক পণ্য আছে যার উৎপাদন ও চাহিদা বিশেষ কোনো এলাকার মধ্যেসীমাবদ্ধ থাকে। এ ধরনের পণ্যের বেলায় ক্ষুদ্র একমালিকানা ব্যবসায়ই উপযুক্ত; যেমন-হোটেল, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি ।

৩. খুচরা পণ্য : ভোক্তাদের ভোগ অভ্যাস অনুযায়ী বহু পণ্য রয়েছে যেগুলো তারা স্বল্প পরিমাণে ক্রয় ও ব্যবহারে অভ্যস্ত। এ ধরনের খুচরা পণ্যের বিপণনে একমালিকানা ব্যবসায়ের জুড়ি নেই; যেমন-মুদির দোকান, মনিহারি দোকান ইত্যাদি ।

8.পচনশীল পণ্য কোনো কোনো পণ্য আছে যা পচনশীল; যেমন-ফলমূল, শাকসব্জি, মাছ-মাংস ইত্যাদি । এসব ক্ষেত্রে একমালিকানা ব্যবসায় ছাড়া অন্য কোনো ব্যবসায় তেমন সুবিধা করতে পারেনা ।

৫.পেশাদারী ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান : ক্ষুদ্রায়তনের পেশাদারি ব্যবসায়: যেমন-ডাক্তারি, ওকালতি ইত্যাদি এবং সেবা বিজ্ঞনধর্মী প্রতিষ্ঠান যেমন- সেলুন পড়ি ইত্যাদি একমালিকানার ভিত্তিতে সংগঠিত হওয়াই উত্তম।

৬. সহায়কপ্রতিষ্ঠান : বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠান পরিচালনার স্বার্থে অনেক সময় সহায়ক ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান; যেমন – মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান, প্রিন্টিং প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি । এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গঠনে একমালিকানা ব্যবসায় অধিক উপযুক্ত ।

৭. স্বল্প মূলধনের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প : যে সকল ক্ষুদ্র শিল্পে কম শ্রমিক ও কম মূলধনের প্রয়োজন পড়ে সেখানে একমালিকানা ব্যবসায়ই উত্তম। হস্তজাত কুটির শিল্প। যেমন-তাঁত শিল্প, মৃৎ শিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রেও এর কোনো বিকল্প নেই ।

৮. শৈল্পিক কর্মের ব্যবসায় যে সকল কাজের সাথে ব্যক্তিক শিল্পকর্মের যোগ রয়েছে সেক্ষেত্রেও বৃহদায়তন ব্যবসায় গড়ে তোলা যায় না। সেখানে একমালিকানা ব্যবসায় ভালো ফল দেয়; যেমন- চিত্রকর্মের ব্যবসায়, ফটো তোলার ব্যবসায়, স্বর্ণকারের দোকান ইত্যাদি ।

৯. যেক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক প্রয়োজন এমন অনেক ক্ষুদ্রায়তনবিশিষ্ট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে মালিকের উপস্থিতি ও প্রত্যক্ষ তদারকি অপরিহার্য, সেখানে একমালিকানা ব্যবসায় উপযুক্ত বলে প্রমাণিত: যেমন-মেরামতি কারখানা, স্টিলের আসবাবপত্রের দোকান, স্বর্ণের দোকান ইত্যাদি ।

১০. যেক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। যে সব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি সম্পাদন, কর্মসূচি প্রণয়ন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয় সেখানেও একমালিকানা ব্যবসায়ের কোনো বিকল্প নেই; যেমন-মৌসুমি ফলের দোকান।

১১. ভ্রাম্যমাণ ও সাময়িক সময়ের ব্যবসায়। যে সব পণ্য ফেরি করে বিক্রয় করা হয় বা যে সকল দোকান ভ্রাম্যমাণ প্রকৃতির সে সব পণ্যের ব্যবসায় ক্ষুদ্র একমালিকানা ব্যবসায়ের মাধ্যমেই সংগঠিত হওয়া উত্তম। এ ছাড়া মেলা বা প্রদর্শনীতে স্বল্প সময়ের জন্য যে সকল স্টল খোলা হয় তাতেও এরূপ ব্যবসায়ের কোনো বিকল্প নেই।

মোটকথা স্বল্প পুঁজি ও শ্রম বিনিয়োগ করে যে সকল ব্যবসায় গঠন করা যায় এবং যেকোনো সাধারণ স্থানে এই ব্যবসার গঠন ও পরিচালনা করা সম্ভব এমন সকল ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে একমালিকানা ব্যবসায়ই সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবসায় সংগঠন।

আরো পড়ুন……….

➡️ একমালিকানা ব্যবসায়ের ধারণা ও বৈশিষ্ট্য

➡️ একমালিকানা ব্যবসায়ের জনপ্রিয়তার কারণ কি?

➡️ সমিতির প্রকারভেদ

নিয়মিত এডুকেশন সম্পর্কিত তথ্য পেতে যুক্ত থাকুন আমাদের ফেইসবুক পেইজের সাথে ।

By Saifur Rahman Arif

আমি মোহাম্মাদ সাইফুর রহমান আরিফ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র । ব্যবস্থাপনার একজন ছাত্র হলেও বর্তমানে কিছুদিন যাবৎ আমি অনলাইনে লিখালিখি কাজের সাথে যুক্ত রয়েছি । এবং Goafta.com সাইটটির একজন আর্টিকেল রাইটার হিসাবে কাজ করছি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *